covid
কলকাতা: দেশজুড়ে আরও একবার মাথাচাড়া দিয়েছে করোনা আতঙ্ক৷ সংক্রমণের উর্ধ্বমুখী গ্রাফ দেখে উদ্বেগে বিশেষজ্ঞ মহল৷ উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার। বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
২০২৩-এর বিদায়লগ্নে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কোভিড-১৯-এর নয়া উপরূপ জেএন.১। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে নয়া উপরূপের সংক্রমণ৷ অথচ করোনার এই উপরূপ সম্পর্কে দেশবাসীর মধ্যে এখনও স্বচ্ছ কোনও ধারণা নেই। গত দু’দিনে জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে ২১ জনের নমুনায় জেএন.১-এর অস্তিত্ব মিলেছে৷ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫৮ জন। লাফিয়ে বাড়ছে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে দেশে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ২,৬৬৯ জন।
জেএন.১ ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএ.২.৮৬-এর একটি মিউটেশন। আমেরিকার ‘ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’ জানিয়েছে, ওমিক্রন এবং ওমিক্রনের সাবভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ রূপ দু’টি প্রায় অভিন্ন। ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনের সঙ্গে এর সামান্য পার্থক্য রয়েছে৷ এদের মধ্যে বড় কোনও তফাৎ নেই৷ এটিও এক জনের মধ্যে থেকে অন্যজনের শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
আমেরিকায় কোভিডের বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে রয়েছে এই জেএন.১৷ সিডিসি-র পর্যবেক্ষণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে হার মানিয়ে শরীরে আরও ভাল ভাবে বাসা বাঁধতে সক্ষম করোনার নয়া উপরূপ। যদিও এখনও তা প্রমাণিত হয়নি।
এই নয়া রূপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কী কী উপসর্গ দেখা যাচ্ছে? সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে সাধারণত যে লক্ষণগুলি দেখা যায়, জেএন.১-এর সংক্রমণের ক্ষেত্রেও তেমনটাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ নয়া উপরূপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, কাশি ও জ্বর দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, করোনা ভাইরাসের জেএন.১ প্রজাতির সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি, তবে মারণক্ষমতা কম। ফলে আক্রান্তদের কো-মর্বিডিটি না থাকলে দুশ্চিন্তার বিশেষ কারণ নেই।
এক্ষেত্রে কি ঢাল হয়ে দাঁড়াতে পারে কোভিড টিকা? করোনা ভ্যাকসিন এই উপরূপের মোকাবিলায় কতটা কার্যকর, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, জেএন.১-কে দুর্বল করে দিতে সক্ষম করোনার টিকা। ফলে করোনার নয়া রূপের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে টিকা কার্যকরী অস্ত্র হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সিডিসি জানাচ্ছে কোভিডের বুস্টার ডোজ মূলত তৈরি হয়েছিল ওমিক্রন উপরূপকে পরাস্ত করতে৷ প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী, সেই টিকা মানুষের শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তা জেএন.১-কে রুখে দিতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার বুস্টার টিকা সংক্রমণ পুরোপুরি ঠেকাতে না পারলেও, প্রাণহানির সম্ভাবনা কিন্তু, বহুলাংশে কমিয়ে দিতে সক্ষম৷