পুজোয় সুগন্ধীর প্রয়োগ নতুন কিছু নয়। ধুপধুনো-সহ বিভিন্ন রকমের সুগন্ধী ব্যবহার করা হয়। সঙ্গে বিভিন্ন সুগন্ধযুক্ত ফুলও ব্যবহার করা হয়। পুজোর পরিবেশকে আরও স্নিগ্ধ ও পবিত্র করে তুলতেই সুগন্ধীর ব্যবহার করা হয়।
পুজো করার সময়ে চারদিকে সুগন্ধ থাকলে মনে ভক্তিও বেশি থাকে। আর সুগন্ধ জীবনে সৌভাগ্য নিয়ে আসতে পারে। মহিলাদের মধ্যে সুগন্ধী ব্যবহার করার প্রবণতা বেশি। তাই মহিলারা যদি প্রতিদিন পুজোর পরে সুগন্ধীর ব্যবহার করেন নাম, যশ, অর্থ সবকিছুতেই ভাগ্য খুলে যেতে পারে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন এই সুগন্ধী? পুজোর পদ্ধতিতে কোনও বদল আনতে হবে না। শুধু পুজোর পরে চন্দনকাঠ ও গোলাপের সুগন্ধী কয়েক ফোঁটা নাভিতে লাগান। অন্য কোনও সুগন্ধীও ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু এই দুই সুগন্ধী ছাড়াও অন্য কোনও সুগন্ধীও ব্যবহার করতে পারেন। তবে চন্দনকাঠ ও গোলাপের সুগন্ধী ব্যবহার করলে সবথেকে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
যে কোনও আঙুল ব্যবহার করেই সুগন্ধী নাভিতে লাগিয়ে নিন। এতে দুই ধরনের সৌভাগ্য পাওয়া যায়। এবার প্রশ্ন হল, কেন নাভিতেই এই সুগন্ধী ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়ছে? প্রথমত, নাভি অবিনশ্বর। দেহ পুড়ে গেলেও নাভি একই রকম থেকে যায়। দ্বিতীয়ত, সঙ্গীতে ধ্বনি বা নাদ বিশেষ উপাদান। সেই নাদেরও উৎস হল নাভি। তৃতীয়ত, ভারতীয় সনাতন যোগশাস্ত্রে শরীরে ৭টি চক্রের কথা বলা হয়। তার মধ্যে অন্যতম নাভিচক্র। একে ‘মণিপুর চক্র’ বলা হয়। নাথ যোগীদের মতে, এর থেকে মধ্যমা শক্তি তৈরি হয়। নাভির এই মহিমাকে সম্মান জানাতেই মহামুনি বাৎস্যায়ন তাঁরা ‘কামসূত্র’-এ নাভির বিশেষ পরিচর্যার কথা উল্লেখ করেছেন। আর নাভির ইরোটিক চিহ্নায়ন নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ভারতীয় পরম্পরা মতে, গোলাপ ফুল দেবী লক্ষ্মীর খুব পছন্দের বলে মনে করা হয়। তাই নাভিতে গোলাপ ফুলের সুগন্ধী ব্যবহার করলে অর্থভাগ্য ভাল থাকে। নাভিতে চন্দনকাঠের সুগন্ধী ব্যবহার করলে খ্যাতি অর্জন করা যায়। তাই যাঁরা জীবনে খ্যাতি বা নাম পেতে চান, তাঁরা এই সুগন্ধী ব্যবহার করুন।