আঙ্কারা: ভূমিকম্পের প্রকোপে কার্যত মৃত্যুপুরী তুরস্ক৷ সোমবারের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে সিরিয়ার উপরেও৷ তবে তুরস্কের পরিস্থিত শোচনীয়৷ চারিদিকে শুধুই স্বজনহারার কান্না৷ এখনও ধ্বংসস্তুপের নীচে আটকে বহু মানুষ৷ কেউ হয়তো এখনও চালিয়ে যাচ্ছে বাঁচার লড়াই৷ কেউ হয়তো অনেক আগেই হার মেনেছে৷ তবে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার যে স্বাদ তা সত্যই মধুর। যতক্ষণ শ্বাস চলে ততক্ষণই থাকে বেঁচে থাকার আশ৷ জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে একজন কতখানি সংগ্রাম করতে পারে, তা বুঝিয়ে দিল তুরস্কের এক কিশোর৷ ৯৪ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকে ওই কিশোর জীবন বাঁচাতে করল নিজের মূত্রই পান৷ শনিবার তাকে উদ্ধার করার পর তাঁর সংগ্রামের কাহিনি শুনে শিউরে উঠেছে সকলে।
আরও পড়ুন- আড়াআড়ি ফাটল! তুরস্কের এই শহর যেন দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে
সোমবার ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার -র গভীরে। ওই গাজিয়ানতেপ শহরেরই বাসিন্দা বছর ১৭-র আদনান মুহম্মেত কোরকুট৷ ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়েছিল সে৷ এর পর ৯৪ ঘণ্টা ধরে চলে তাঁর লড়াই। বহু চিৎকার, ডাকাডাকির পরেও কেউ উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি৷ কারণ তখনও তার ডাক পৌঁছয়নি উদ্ধারকারীদের কানে। এদিকে, খিদে আর তৃষ্ণায় ছটফট করতে থাকে ওই কিশোর৷ এত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও কিন্তু হার মানেনি সে৷ মৃত্যুর হাতে নিজেকে সঁপে দেয়নি। তেষ্টা মেটাতে নিজের মূত্র পান করে! বেঁচে থাকার তীব্র ইচ্ছাই হয়ত তাকে এই পথ বাতলে দিয়েছিল।
৯৪ ঘণ্টা পর আদনানকে যখন উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে এল, তখন সে অচৈতন্য প্রায়। তাকে তৎক্ষণাৎ খাবার দিয়ে কিছুটা সুস্থ করা হয়। সে জানায়, কতটা কষ্ট করে সে বেঁচেছিল। আদনানের কথায়, “আমি ওদের কথা শুনতে পাচ্ছিলাম। প্রাণপণে ডাকছিলাম। কিন্তু আমরা আশঙ্কাও ছিল, ওরা আমার কথা শুনতে পাবে তো?” অবশেষে সব আশঙ্কার অবসান৷ নতুন প্রাণ ফিরে পেলেন আদনান৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>