আটকে পড়া ২০০ মানুষকে বাড়ি ফেরালেন এই মহিলা ক্যাব চালক

করোনা আবহে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন রাজ্যে আটকে থাকার পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে লকডাউন শুরুর সময় থেকে এই সমস্যা গুরুতর আকার নিয়েছিল। ঠিক সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আটকে পড়া অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুম্বইয়ের মুলুন্দের বিদ্যা শেলকে। নিজে গাড়ি চালিয়ে অসহায় মানুষের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এই পরিষেবার বিনিময়ে সামান্য টাকা নিলেও পরিস্থিতি বুঝে টাকা কম পেলেও আপত্তি জানাননি মুম্বইয়ের এই মহিলা ক্যাব চালক।

 

মুম্বই: করোনা আবহে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন রাজ্যে আটকে থাকার পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে লকডাউন শুরুর সময় থেকে এই সমস্যা গুরুতর আকার নিয়েছিল। ঠিক সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আটকে পড়া অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুম্বইয়ের মুলুন্দের বিদ্যা শেলকে। নিজে গাড়ি চালিয়ে অসহায় মানুষের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এই পরিষেবার বিনিময়ে সামান্য টাকা নিলেও পরিস্থিতি বুঝে টাকা কম পেলেও আপত্তি জানাননি মুম্বইয়ের এই মহিলা ক্যাব চালক।

অল্প বয়সের গাড়ি চালানো শিখেছিলেন বিদ্যা। তারপর থেকে গাড়ি চালাতে খুব ভাল লাগে তাঁর। যখন বড় হলেন, ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববার সময় এল, তখনই ঠিক করলেন পেশা হিসেবে গাড়ি চালানোকেই বেছে নেবেন। সেভাবে চলছিলও। কিন্তু আচমকা লকডাউনে সমস্যার মুখে পড়েন বিদ্যা শেলকে। তিনি বলেন, ‘বাচ্চাগুলোর ভবিষ্যতের কথা ভেবে খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। কাজই না থাকলে ওদের ভবিষ্যতের জন্য কীই বা করতে পারব!’ পাশাপাশি ভিনরাজ্যে আটকে পড়া মানুষের অসহায়তার কথা শুনে ব্যথিতও হন।

অবশেষে তাঁদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন তিনি। বিদ্যা বলেন, ‘ট্রেন ও বাস পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য বহু মানুষ বাড়ি ফেরায় সমস্যায় পড়েছিল। সেই পরিস্থিতির কথা ভেবে ওদের জন্য কিছু করতে মন চাইল। আমার স্বামীর একটা গাড়ি আছে। লকডাউনের আগে সেটাই চালাতাম আমি। সেটি নিয়েই আমি একটা ছোট ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে বার্তা দিতে চাইলাম যে, ভিনরাজ্যে আটকে পড়া অসহায় মানুষকে বাড়ি ফেরানোর পরিষেবা দেব আমি। মুহূর্তেই সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল।’

বিদ্যার এই সিদ্ধান্তে খুশি তাঁর স্বামী অনিলও। তাঁর কথায়, ‘অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সংক্রান্ত বিদ্যার এই সিদ্ধান্তের জন্য আমার গর্ব হয়।’ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতায় বিদ্যার মনে ভিড় করে নানা স্মৃতি। তবে তাঁর কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় একটাই ঘটনা। তিনি বলেন, ‘একদিন বাড়ি ফেরানোর আর্জি নিয়ে এক গর্ভবতী মহিলা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ১৬০ কিলোমিটার দূরে তাঁর বাড়ি। তিনি একা ছিলেন এবং বেশি টাকাও ছিল না তাঁর কাছে। বেডের অভাবে পুরসভার হাসপাতালেও ভর্তি হওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। অন্য কোনও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না তাঁর। মহিলার ওই পরিস্থিতিতে তাঁর ই-পাসের ব্যবস্থা করেছিলাম আগে। তারপর শুরু হয়েছিল আমাদের যাত্রা। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার যাওয়ার পরও চেকপোস্টে আটকে দেওয়া হয় আমাদের গাড়ি। পর্যাপ্ত নথি থাকা সত্ত্বেও আমাদের যেতে দেওয়া হয়নি। শেষমেশ একটি সবজির গাড়ির চালকের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করেছিলাম। এই ঘটনাটি আমি কোনওদিন ভুলব না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 2 =