নয়াদিল্লি: একদিকে করোনা, অন্যদিকে দীর্ঘ লকডাউন৷ তার উপর একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ৷ ত্রিফলা চাপে কোষাগারে টানাটানি পড়েছে সরকারের৷ চরম আর্থিক টানাটানির মধ্যে পড়েছেন সাধারণ জনতা৷ একই অবস্থা জনতার৷ করোনা আবহে কমবেশি সাধারণ জনতা যখন বিকাপে, ঠিক তখন সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর দিতে চলেছে কেন্দ্র৷ সপ্তম বেতন কমিশনের পর আরও এক দফায় ডিএ ও বেতন বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র৷
জানা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথা বদলে যাচ্ছে খুচরো মূল্য সূচক নির্ধারণের পদ্ধতি৷ ২০০১ সাল থেকে একই হারে মূল্য সূচক নির্ধারিত হয়ে আসছে৷ মূলত এই মূল্য সূচকের উপর নির্ভর করে মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ৷ দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা জাতীয় মূল্য সূচক পরিবর্তন হলে মহার্ঘভাতা ও বেতনের কাঠামোয় বড়সড় বদল আসতে পারে বেতনেও৷ সবকিছু ঠিকাঠাক থাকলে আগামী বছরেই হাসি ফুটতে পারে কর্মচারীদের মুখে৷
একটি বিবৃতিতে শ্রমমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, মূল্য সূচক ব্যবস্থার বদল খুব দ্রুত করা হবে৷ আর তাতেই ডিএ ও বেতন কাঠামোয় পরিবর্তন ঘটবে৷ নয়া এই ব্যবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের লাভ হলেও বেসরকারি কর্মীদের ডিএতে কোনও প্রভাব পড়বে? কোনও নিশ্চয়তা এখনও দেয়নি শ্রমমন্ত্রক৷ মন্ত্রকের আরও দাবি, সংশোধিত নিয়মে বেতন ও মহার্ঘভাতার পরিবর্তিত রূপ নির্ভর করবে বেশ কিছু নতুন ফ্যাক্টরের উপর৷ ফলে, যতক্ষণ না পর্যন্ত নতুন বিধি কার্যকর হচ্ছে, ততক্ষণ বেতন বৃদ্ধি বা হ্রাস নিয়ে এখনই আগাম কিছু আশা করা উচিত নয় বলেও জানিয়ে শ্রমমন্ত্রক৷
তবে, আপাতত সুখবর একটাই, আগামী সপ্তাহে মূল্য সূচক নির্ধারণ প্রক্রিয়ার আমূল পরিবর্তন আনতে চলেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার৷ তাতে সরাসরি লাভবান হবেন সরকারি কর্মচারীরা৷ কেননা, মূল্য সূচক পরিবর্তন ঘটলে ডিএ তথা বেতন খানিকটা বাড়বে, বাজারমূল্য অনুযায়ী৷ এতদিন খাদ্যপণ্যের দামের ওঠানামার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হতো মূল্য সূচক৷ নয়া নিয়মে জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু পণ্য ও দৈনক ব্যয় সূচকে জুড়ে যেতে চলেছে৷ কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বাড়লে ডিএ ও বেতন বাড়তে বাধ্য বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
চলতি মূল্য সূচক নিয়মে নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়লেই ডিএ বৃদ্ধি পায়৷ বছরে তা দু’বার বৃদ্ধি হয়ে থাকে৷ যদিও এবার করোনা আবহে তা স্থগিত রয়েছে৷ নয়া নিয়মে ভিত্তিবর্ষ ধরা হবে ২০১৬ সালকে৷ সেখানে খাদ্যপণ্য ছাড়াও বেশ কিছু মূল্য পরিবর্তন হতে চলেছে৷ যার মধ্যে থাকবে শিক্ষা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য, বিনোদন ব্যয়৷ অর্থাৎ এসব ক্ষেত্রে একজন কর্মচারীর কত অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে, সেটাও নির্ধারণ করা হবে নতুন সূচকে৷ সপ্তম বেতন কমিশনে আগে মূল্য সূচককে সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বৃদ্ধির মানদণ্ড হিসাবে ধার্য করেছে৷ সূচক পরিবর্তন ঘটলে প্রায় ৪১ লক্ষ কর্মচারীর ডিএ ও বেতন পরিবর্তন আসতে চলেছে৷ যদিও, করোনার কারণে গত জুলাই থেকে এক বছরের জন্য স্থগিত রয়েছে ডিএ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া৷