মুম্বই: একই সঙ্গে মেয়র ও নার্স মুম্বইয়ের কিশোরী পেড়নেকর। দিন ও রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ করোনা রিপোর্ট এসেছে পজিটিভ। উপসর্গহীন করোনার শিকার হয়েছেন মুম্বইয়ের এই দাপুটে মেয়র এবং রাতের কর্তব্যপরায়ণ নার্স। পজিটিভ আসার পরে গত কয়েকদিনে তাঁর সংস্পর্শে আসা সকল ব্যক্তির করোনা পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে তিনি।
পেশাগত ভাবে তিনি নার্সের ভূমিকা অনেক দিন ধরেই পালন করছিলেন। সদ্য তিনি রাজনীতিতে যোগদান করেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কথাতেই তিনি সেবিকা হিসাবে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। মহারাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণে বেড়ে চলা সংক্রমণের সময় মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে প্রাক্তন সেবিকাদের কাছে আবেদন করেন চিকিৎসার সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্যে। এরপরেই মুম্বইয়ের এই মেয়র পুরসভা পরিচালিত এক হাসপাতাল পর্যবেক্ষণে গিয়েছিলেন। সেখানে হাসপাতালের মেট্রনকে আলাদা ভাবে ডেকে জানতে চেয়েছিলেন তিনি নার্সের পোশাক পরিধান করবেন কিনা। তাঁর যুক্তি ছিল তাহলে অন্যান্য নার্সরা একাত্মবোধ করবেন।
এরপর মেট্রনের দেওয়া নার্সের পোশাক, মাস্ক, পিপিই কিট পরিধান করে তিনি হাসপাতালে রোগীদের সেবাদান করতে শুরু করেন। এতদিন পর নিজের পুরনো পেশায় নিজেকে দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন তিনি। সেই দিনই ঠিক করেন পার্ট টাইম নার্সের দায়িত্ব পালন করবেন। সেই মতোই যোগ দেন মুম্বইয়ের বি এল ওয়াই নায়ার হাসপাতালে। সারাদিন রাজনীতিক হিসাবে পুরসভার দায়িত্ব সামলে রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সময়ে তিনি নিজেকে কর্তব্যনিষ্ঠ সেবিকা হিসাবে সাজিয়ে তোলেন। লড়াই করতে থাকেন পরিস্থিতির সঙ্গে।
কিন্তু হঠাৎ করোনা সংক্রমণ তাঁর এই লড়াইকে কিছুটা দমিয়ে দিলেও তাঁকে দমিয়ে দিতে পারেনি। লড়াকু মনোবল নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই তাঁর হুঙ্কার, কারেঙ্গে ইয়া মারেঙ্গে! যদিও মরার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তিনি বলেন, ‘‘কাউকে মরতে দেব না। এই শহরকে করোনামুক্ত করতেই হবে।’’