হাওড়া:বিশ্বকর্মা পুজো মানে যেমন পুজো এসে যাওয়ার ইঙ্গিত, তেমনই বিশ্বকর্মা পুজো মানে আকাশজুড়ে লাল, নীল, হলুদ, সবুজ রংবাহারি ঘুড়ির উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য। পেটকাটি, চাঁদিয়াল, ময়ূরপঙ্খী, মোমবাতিরা সব সারে সারে লাটাইয়ের সুতোয় সওয়ার হয়ে উড়ে বেড়ায় আকাশের নীলে। ঘুড়ির উড়ানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওড়ে ঘুড়ির খেলোয়াড়ের মন ওহাতের টান।
ঘুড়ির সুতোর সঙ্গে যেন কথা বলতে বলতে একেক খেলোয়াড় একেক কায়দায় টান বা ঢিল দিয়ে ঘুড়িকে ওই আকাশের পথে ঘুরিয়ে আনেন। পছন্দের ঘুড়ি যখন উড়ে উড়ে মেঘের ছুঁয়ে যায় তখন লাটাই হাতে মাটিতে থাকা মানুষটিও তার সাথে উড়ে বেড়াতে থাকে ওই আকাশে।
তবে শুধু ঘুড়ি ওড়ানোই তো শুধু নয়, ঘুড়ির মস্ত বড় আকর্ষণ হল এর ম্যাচ। ঘুড়ির খেলায় ভোকাট্টা না শুনলে কি আর মন ভরে? তাই ঘুড়ির সঙ্গে চাই জুতসই লাটাই আর যোগ্য সুতো। কোন সুতো কত মজবুত কেমনই বা তার টান, তাতে মঞ্জা কতটা ধরবে সবটাই পাকা জহুরির মত মাপতে পারেন একজন পাকা খেলোয়াড় তবে লকডাউনে এখন সব বাজারেই মন্দা।
কিন্তু ঘুড়ি ব্যবসায়ীরা ঠিক এর উল্টো সুর গাইছেন। তাঁদের দাবি অন্যবারের তুলনায় এবার কিন্তু ঘুড়ির বাজার বেশ চাঙ্গা। বিভিন্ন ধরণের ঘুড়ির স্টক একপলকেই শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করছেন হাওড়ার বালি বাজারের এক দোকানি। তাঁর দাবি দোকানে বাবার হাত ধরে যেমন দুবছরের ছোটট্ট ছানা আসছে তেমন কিশোর কিংবা যুবকেরাও ঘুড়ি কিনতে ভিড় জমাচ্ছে। ঘুড়ির কদর মানেই সুতো আর লাটাইয়ের বিক্রিও রয়েছে সমানতালে।
বিক্রেতা জানালেন সবধরণের সুতো যেমন ১২০ টাকা হাজার থেকে ৫০০ কিংবা ৬০০ টাকা হাজার পর্যন্ত সুতোও বিক্রি করছেন তিনি। মন্দার বাজারে ব্যবসা আয় দিচ্ছে দোকানির মুখে তাই চওড়া হাসি। তবে আর কী এবারের বিশ্বকর্মা পুজোয় আকাশ ভরে ওঠুক লাল, নীল কাগজের তেকোণা, চৌকোণায়। ঘুড়ির বাহারে কেটে যাক যত আতঙ্ক আশঙ্কা, ফিরে আসুক শান্তি স্বস্তি। আপাতত এটাই হোক চাওয়ার।