কলকাতা: করোনা সংক্রমণ নিয়ে ক্রমশই বাড়ছে চিন্তা। আর চিন্তা ভাবনা বাড়ার কারণে কমছে মাথার চুল। অদ্ভুত হলেও এমন ঘটনা ঘটছে কলকাতায়। চিকিৎসা এই নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। এই রোগ নিয়ে কয়েকজন রোগীও এসেছেন তাঁদের কাছে।
চুল পড়ে যাওয়া নিয়ে এসএসকেএম ও কলকাতা মেডিকেল কলেজের মত হাসপাতালে বেশ কিছু রোগী ইতিমধ্যে ভিড় জমিয়েছেন। সাধারণত এই ধরনের রোগ নিয়ে যাঁরা আসেন তাঁদের থেকে এই সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেশি। মেডিক্যাল কলেজের স্কিন স্পেশালিস্ট অভিষেক দে জানিয়েছেন হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী আসছেন যাঁরা এই সমস্যায় ভুগছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাচ্ছে করোনা আতঙ্কে তাঁদের এই অবস্থা। আতঙ্কের কারণে যাঁদের চুল পড়ছে তাঁদের একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসার জন্য আসছেন তাঁদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে মত তাঁদের।
নতুন এই অসুখের নাম টেলোজেন এফ্লুভিয়াম। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন মানুষের মাথায় প্রায় এক লক্ষ চুল থাকে। আর এই চুল এনাজেন, টেলোজেন ও ক্যাটাজেন নামে তিন ভাগে বিভক্ত। করোনার চিন্তার কারণে এমাজেন অংশে তার প্রভাব পড়ছে। সেখান থেকে টেলোজেনে প্রবেশ করছে, যার ফলে উঠে যাচ্ছে চুল। শুধু করোনার কারণে চিন্তা নয়, করোনা আবহে অনেকে চাকরিও খুইয়েছেন। ফলে সেইসব মানুষের মধ্যে স্ট্রেস তৈরি হয়েছে। যার ফলে চুল পড়াও বেড়ে গিয়েছে। করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক চিন্তাও চুল পড়ার পেছনে অনেকটাই দায়ী।
শুধু যে করোনা হতে পারে এই চিন্তায় মানুষের চুল পড়ছে তাও নয়। এমন মামলাও বিশেষজ্ঞদের হাতে এসে পৌঁছেছে যেখানে দেখা গিয়েছে করোনা হয়েছে এবং তারপর সেরে উঠেছে এমন রোগী ক্ষেত্রেও চুল পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন তখন তিনি যথেষ্ট দুশ্চিন্তা করেছিলেন। যার ফল দেখা যাচ্ছে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পরে। তবে এই নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই বলে জানিয়েছেন ডার্মাটোলজিস্টরা। তাঁদের মতে যাঁদের চুল পড়ে যাচ্ছে তাঁদের চুল ফিরে আসা সম্ভব। মানুষের সাধারণত প্রতিদিন ১০০টি চুল পড়ে। কিন্তু দুশ্চিন্তার কারণে সেই সংখ্যাটা বেড়ে যেতে পারে। তার কোন হিসাব থাকে না। কিন্তু সেই চুল গজিয়ে ওঠে। পরিসংখ্যান বলছে মার্চ মাস থেকে করোনার আতঙ্ক শুরু হলেও চুল পড়া সমস্যা নিয়ে রোগীরা আসছেন জুলাইয়ের শেষ থেকে। করোনার চিন্তা তখন থেকেই সম্ভবত জেঁকে বসেছে মানুষে মগজে।