কলকাতা: একে ভূমিকম্পে রক্ষে নেই, দোসর বন্যা!
ভূমিকম্প কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, তার অন্যতম উদাহরণ এখন তুরস্ক৷ গত ৬ ফেব্রুয়ারি, সোমবার প্রবল ঝাঁকুনি অনুভূত হয় তুরস্কের মাটিতে৷ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়িগুলো৷ তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের মৃতের সংখ্যা ৩৭ হাজার পার৷ প্রকৃতির এই তাণ্ডব সামলে ওঠার আগে, ফের এক বিপর্যয়৷ ড্রোন ফুটেজে দেখা গেল, বন্যায় প্লাবিত তুরস্কের ইস্কেন্দেরুন প্রদেশ৷ ভূমিকম্পের চার দিন পর অর্থাৎ ৯ ফেব্রুয়ারি এই ছবি ধরা পড়ে৷ সেখানে দেখা যায় জলমগ্ন রাস্তার উপর দিয়ে গাড়ি চলছে। ভূমিকম্পের পর ইস্কেন্দারুনে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রায় ২০০ মিটার বেড়ে গিয়েছে। যার জেরে বিভিন্ন এলাকায় জল ঢুকে পড়েছে। এমন অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠবে৷
আরও পড়ুন- দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে ‘মারবার্গ’ ভাইরাসের সংক্রমণ, সতর্কবার্তা দিল WHO
এদিকে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের কাছে সিরিয়ার আল’তৌল গ্রামে ভূমিকম্প আর ভারি বৃষ্টির জেরে নদীর জল বেড়ে গিয়ে প্রবল বন্যা দেখা দিয়েছে। ১২ বছরের গৃহযুদ্ধ থেকে রক্ষা পেলেও, আল-তৌল সোমবারের ভূমিকম্প থেকে রেহাই পায়নি৷ বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রামটির কাছাকাছি একটি ছোট বাঁধ ধসে পড়ে। এতে খোলা মাঠ জলে ভরে যায়৷ হাঁটু সমাল জলে ডুবে যায় ঘরবাড়ি। এই পরিস্থিতিতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
বন্যার প্রভাবে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে৷ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তাদের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপালেও কোন সুরাহা করতে পারেনি৷ শুধুমাত্র ইস্তানবুলেই মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের৷ গত আশি বছরে এতবেশি বৃষ্টি দেখেনি তুরস্কে৷ একে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি, কার উপর নিকাশি ব্যবস্থা তেমন জোরদার নয় ইস্তানবুলে৷ ১৪ মিলিয়ন বাসিন্দার শহর ইস্তানবুলের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ান বলেছেন, দুটি নদীর একসঙ্গে কূল ছাপিয়ে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ সেইসঙ্গে বৃষ্টির মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে বিপদ বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে৷
এদিকে শহরের কবরস্থানগুলি মৃতদেহে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। ভূমিকম্পে মৃতদের দেহ কবরস্থ করার জন্য নতুন কবরস্থান খুলতে হয়েছে প্রশাসনকে। সেখানে গণকবর দেওয়া হচ্ছে। তবে সেই মাটিতেও আর ঠাঁই মিলছে না। তুরস্কের মারাশ শহরে গত কয়েক দিনের ছবিটা এমনই আতঙ্কের হয়ে উঠেছে। ওই শহরে ছিল ৫ লক্ষ মানুষের বাস। মৃতদেহ সৎকারের জন্য কয়েকটি কবরস্থানও রয়েছে। কিন্তু গত সপ্তাহের ভূমিকম্পের পর সেখানে আর কোনও ফাঁকা স্থান নেই।
মৃতদেহের ভিড় সামাল দিতে প্রশাসনের তরফে শহরেই অন্য একটি স্থানে মৃতদেহ সৎকারের জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, সেখানেও ফুরিয়ে আসছে ঠাঁই।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>