‘SSC দেয় যারা, জেলে থাকে তারা’! দুর্নীতির বিরুদ্ধে কালা-প্রতিবাদ চাকরিপ্রার্থীদের

‘SSC দেয় যারা, জেলে থাকে তারা’! দুর্নীতির বিরুদ্ধে কালা-প্রতিবাদ চাকরিপ্রার্থীদের

কলকাতা: রাজ্যে এসএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজ্য সরকারের গড়িমসি ও দুর্নীতির প্রতিবাদ দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে পশ্চিমবঙ্গ এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ। দুর্নীতির প্রতিবাদে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বুধবার চাকরিপ্রার্থীরা অবস্থান বিক্ষোভে বসেন৷ সেখানে পুলিশি হেনস্থা ও চাকরিপ্রার্থীদের আটক করার অভিযোগ ওঠে৷ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও পুলিশি হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার মুখে কালো কাপড় বেঁধে, পোস্টার হাতে দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল হলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।

বুধবার মঞ্চের আন্দোলনরত সদস্যরা কলকাতার ওয়াই চ্যানেল থেকে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অব্দি একটি মিছিল করে৷ সেখানে অবস্থান বিক্ষোভ করলে রাজ্য পুলিশ তাদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ৷ শেষ পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করে তিনটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার রাজ্য এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের তরফে অবস্থান বিক্ষোভের আগে একটি সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। ওই বৈঠকে তারা শিক্ষক নিয়োগে রাজ্যের একাধিক দুর্নীতির খতিয়ান প্রমাণ-সহ তুলে ধরে সংবাদমাধ্যমের সামনে। অধিকার মঞ্চের সভাপতি মইদুল ইসলাম ওই বৈঠকে বলেন, ‘‘২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমরা কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে টানা ২৯ দিন অবস্থান বিক্ষোভ করেছিলাম। ২৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কাছে আসেন এবং আমাদের নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন৷” তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের এও বলেছিলেন যে প্রয়োজনে আইন পাল্টে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো নিয়োগ হয়নি৷”

বুধবার এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে সভাপতি বলেন, ২০১৯ সালের অবস্থান মঞ্চে তাদের মধ্যে থেকে ৫ জনের একটি কমিটি তৈরি করা হয় এবং পরবর্তীকালে তাদের আন্দোলনকে স্তিমিত করতে সেই ৫ জনের কমিটির একাংশ সহ তাদের অনেক নিকট আত্মীয়কে অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়। এছাড়াও মঞ্চের সভাপতি মইদুল ইসলাম এদিন অভিযোগ করেন, “রাজনৈতিক নেতা পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম নিয়োগ প্যানেলে অবৈধভাবে ঢুকিয়ে তাকে চাকরি দেওয়া হয়েছে৷” এছাড়াও এদিন তারা অভিযোগ করেন, লকডাউনকালে এসএমএসের মাধ্যমে অনেক প্রার্থীকে ডেকে অবৈধভাবে তাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকারের এইসব দুর্নীতির প্রমানও পেশ করা হয়।

বুধবার ওই বৈঠকের পর একটি মিছিল করে এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের সদস্যরা গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ করতে গেলে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মুখে কালো কাপড় বেঁধে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় তারা। এই বিষয়ে অধিকার মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা মেহবুব মণ্ডল জানান, ‘‘আমাদের দাবি মেনে সঠিক পদ্ধতিতে শিক্ষক নিয়োগ না হলে আমরা আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটব। প্রয়োজনে পুলিশের বন্দুকের নলের সামনেও দাঁড়াতে রাজি আমরা৷” এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের এই আন্দোলনে কি টনক নড়বে রাজ্যের? নাকি ফের ‘শিয়রে ভোটে’র নামে ভাটা পড়বে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায়? উত্তরগুলি ইতিবাচক হলে হয়তো চাকরি পাবে রাজ্যের বহু বেকার যুবক। আর উত্তরের দিশা নেতিবাচকের দিকে হলে হয়তো চাকরির জন্য আরও বৃহত্তর আন্দোলনের মুখ দেখবে পশ্চিমবঙ্গ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + four =