বাবা গাড়িচালক! ইউপিএসসি সিডিএসে প্রথম হয়ে তাক লাগালেন হিমাংশু

বাবা গাড়িচালক! ইউপিএসসি সিডিএসে প্রথম হয়ে তাক লাগালেন হিমাংশু

দেরাদুন:  বাবা গাড়িচালক। ছেলে লিখলেন স্বপ্ন পূরণের আখ্যান। ইউপিএসসি কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিসেস (সিডিএস)-এ প্রথম হলেন গাড়িচালক বাবার ছেলে হিমাংশু পাণ্ডে। তৃতীয় বারের চেষ্টায় ডিফেন্স সার্ভিসেস (সিডিএস)-এ নজরকাড়া সাফল্য পেলেন উত্তরাখণ্ডের হিমাংশু। তাঁর সাফল্যের এই কাহিনি অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা৷

আরও পড়ুন- বেআইনি নিয়োগ! পরেশ-কন্যার পর আরও এক শিক্ষকের চাকরি বাতিল

৩ জুন প্রকাশিত হয়েছে ইউপিএসসি ২০২১-এর ফলাফল। ফল প্রকাশের পর থেকেই খুশির হাওয়া উত্তরাখণ্ডের হালদওয়ানি এলাকার পাণ্ডে পরিবারে৷ হবে নাই বা কেন! ছেলে ইউপিএসসি সিডিএস ২-এ প্রথম হয়েছেন যে! ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করলেও হিমাংশুর স্বপ্ন ছিল সেনা অফিসার হওয়ার৷ ছোট থেকেই সেই স্বপ্ন দেখতেন তিনি৷ বাবা পেশায় গাড়িচালক। অস্বচ্ছ্বলতার মধ্যেই বেড়ে ওঠা তাঁর৷ তবে হিমাংশু হার মানেননি৷ তাঁর লক্ষ্য ছিল জীবনে বড় হওয়া৷ তাই বি টেক পাশ করার পরেও চাকরিতে যোগ দেননি৷ বরং প্রস্তুতি শুরু করেন ইউপিএসসি-র জন্য। ২০২১ সালের ইউপিএসসি সিডিএসে জায়গা পেয়েছেন মোট ১৪২ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে প্রথম উত্তরাখণ্ডের হিমাংশু।

কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিসেস বা সিডিএস পাশ করার পর ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি (আইএমএ), এএফ অ্যাকাডেমি এবং নেভাল অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পাওয়া যায়। পরীক্ষায় প্রথম হিমাংশুর কাছে রয়েছে দেরাদূনের ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি বা আইএমএফে যোগ দেওয়ার সুযোগ। ছোট থেকেই মেধাবী হিমাংশু৷ পড়াশোনা ছাড়া কিছুই বুঝতেন না৷ অভাবের সংসার৷ বাবা সামান্য গাড়িচালক৷ কিন্তু, তা সত্ত্বেও ছেলের পড়াশোনার খরচে কোনও কার্পণ্য করেননি তিনিও৷ 

himangshu

স্কুলের পরীক্ষায় বরাবরই ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে এসেছেন হিমাংশু। দ্বাদশ শ্রেণিতে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এর পর ভর্তি হন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে৷ জয়েন্ট পরীক্ষার জন্য কোনও টিউশন নেননি। নিজেই পড়াশোনা করেছেন৷ আর তাতেই ধরা দিয়েছে সাফল্য। আলমোরার এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন৷ ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পরেই শুরু হয় তাঁর স্বপ্ন পূরণের দৌড়৷ দিনরাত এক করে শুরু হয় ইউপিএসসি সিডিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি৷ প্রথম দু’বার ব্যর্থ হলেও তৃতীয়বারে বাজিমাত৷ এবার শুধু সফলই নন৷ একেবারে প্রথম৷ 

হিমাংশুর কথায়, ‘‘সেনার কর্তব্য, দেশের জন্য তাঁদের আত্মত্যাগ ছোট থেকেই আমাকে আকৃষ্ট করত৷ তাই ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে ভারতীয় সেনায় যোগ দিয়ে দেশের জন্য কাজ করব।’’ সেই সঙ্গে হিমাংশু এটাও স্পষ্ট করে দেন যে, ইউপিএসসি কঠিন পরীক্ষা৷ কিন্তু চেষ্টা করলে সেই স্বপ্নও ছোঁয়া যায়৷ মনের ইচ্ছাশক্তিটাই আসল৷