নিজস্ব প্রতিনিধি: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগেও যে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে, তা আগেই স্পষ্ট হয়েছে। ইতিমধ্যেই সিবিআই এরকম বহু গ্রুপ ডি কর্মীকে চিহ্নিত করে সেই তালিকা কলকাতা হাইকোর্টের কাছে জমা দিয়েছে। তবে কি তাঁদের এবার চাকরি চলে যাবে? এই চর্চা যথারীতি শুরু হয়েছে স্কুলগুলিতে। শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়েও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে কলকাতা হাইকোর্টে আগেই তথ্য প্রমাণ পেশ করেছে সিবিআই। এবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সিবিআইয়ের তালিকাভুক্ত গ্রুপ ডি পদে কর্মরত ১৬৯৪ জনকে নোটিস ধরানোর প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। ২৩ ডিসেম্বর শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে কমিশনার শুভ্র চক্রবর্তী বিষয়টি নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন। সেই নির্দেশিকা সমস্ত জেলার ডিআই-দের (ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর) কাছে পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সিবিআই কলকাতা হাইকোর্টে যে ১৬৯৪ জনের তালিকা জমা দিয়েছে তাঁদের সবাইকে নোটিস ধরাতে হবে। সেই নোটিসের সঙ্গে আদালতের নির্দেশ সংক্রান্ত কপিটিও যুক্ত করে দিতে বলা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা কোন কোন স্কুলে কর্মরত রয়েছেন সেটাও জানানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহ অর্থাৎ বছর শেষের আগেই ডিআই’দের এই কাজ শেষ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই নোটিসপ্রাপ্তদের এবার চাকরি চলে যেতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও আদালতে আগামী দিনে তাঁরা নিজেদের বক্তব্য জানাতে পারবেন।
সিবিআই তদন্ত করে দেখেছে ১৬৯৪ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। অভিযোগ ওঠে এই চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই নাকি সাদা খাতা জমা দিয়েছিলেন। সেই রিপোর্ট সিবিআই আদালতে জমা দেয়। তাঁদের ওএমআর শিট অর্থাৎ উত্তরপত্রের তথ্য বিকৃত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এক নির্দেশে জানান ওই চাকরিপ্রার্থীদের নোটিস ধরাতে হবে শিক্ষা দফতরকে। আর সেই নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করছে শিক্ষা দফতর। আগামী ২৪ জানুয়ারি ফের এই মামলার শুনানি হবে। তাই তাঁদের চাকরির ভবিষ্যৎ আদালতের উপরেই নির্ভর করছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
স্বাভাবিকভাবেই গোটা ঘটনায় সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা। বিরোধীদের কটাক্ষ এভাবে যদি গ্রুপ ডি কর্মীদের চাকরি চলে যায় তাহলে স্কুলগুলিতে ঘন্টা বাজানো, বা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জল দেওয়ার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে কি গত ১১ বছরে তৃণমূল সরকারের আমলে শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অন্যান্য পদে যে নিয়োগ হয়েছে তার একটা বড় অংশে দুর্নীতি হয়েছে? এই বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছে রাজ্য জুড়ে। এই পরিস্থিতিতে নোটিস প্রাপ্ত গ্রুপ ডি কর্মীদের চাকরির ভবিষ্যৎ কি হয় সেদিকেই চোখ থাকবে সবার।