মুম্বাই: 'এক পেয়ার কা নাগমা' রাতারাতি বিখ্যাত করেছিল রানাঘাটের ভবঘুরে রানু মণ্ডলকে। রানাঘাট থেকে বলিউড পর্যন্ত তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এবার রানু মণ্ডলের মতো আরও একজন খ্যাতি পেলেন। তিনি হুগলির চাঁদমণি হেমব্রম। লকডাউনের সময় তাঁর গান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। নেহা কক্করের ‘ও হামসফর’ গানটি প্রশংসিত হয়েছিল নেটিজেনদের কাছে। এবার হুগলির এই কিশোরী ডাক পেল বলিউড থেকে।
ইটাচুনা গ্রাম পঞ্চায়েতে বাড়ি চাঁদমণির। গ্রামের নাম মূলটি। ক্লাস টেনের এই ছাত্রীর গলায় যেন মধু ঝরে। রানু মণ্ডলের মতো লতাকণ্ঠী সে নয়। তার গলায় নিজস্বতা রয়েছে। রানু মণ্ডলের গান শুনে লতা মঙ্গেশকর বলেছিলেন, কপি করে বিখ্যাত হওয়া যায় না। প্রত্যেকের নিজস্ব স্টাইল থাকা প্রয়োজন। চাঁদমণিকে সেই কথা শুনতে হবে না। তাই হয়তো এই বয়সেই বলিউডের অফার এসেছে তার কুঁড়েঘরে। যদিও বলিউডে ডাক পাওয়ার পিছনে দুর্গাপুরের শিক্ষক চিরঞ্জিৎকেই কৃতজ্ঞতা জানাতে চায় চাঁদমণি। তাঁর মতে, গলা তার যেমনই হোক, গান সে যেমনই গাক, চিরঞ্জিৎবাবু না থাকলে তাঁর এই উড়ান সম্ভব হত না। অবশ্য শুধু চিরঞ্জিৎবাবু নয়। আরও একজনের কাছে কৃতিত্বের ঝুলি উপুড় করে দিতে চায় চাঁদমণি। তিনি হুগলির শিক্ষক শ্যামবাবু।
চাঁদমণির যখন বয়স অল্প, তখন তার বাবা মারা যান। তার বাবাকে হারায়। পরিবারে মা ও দুই বোন রয়েছে তার। বাবা মারা যাওয়ার খুব কষ্টে দিন কাটে তাদের। চাঁদমণি লেখাপড়া করার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেতে কাজও করত। মায়ের সঙ্গে হাতে হাতে সমস্ত কাজও করে সে। সম্প্রতি নেহা কক্করের গাওয়া ‘ও হামসাফার’ গানটি গেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি খ্যাতি অর্জন করে সে। ভাইরাল হয় সেই ভিডিও। তারপরই পাঞ্জাবের বিখ্যাত শিল্পী আয়সান আদ্রির চাঁদমণির সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁর সঙ্গে কাজও করে চাঁদমণি। সম্প্রতি আয়সান আদ্রির পরিচালনায় চাঁদমণির গাওয়া ‘জাদুইয়া বে’ গানের টিজার বের হয়েছে। গানের টিজার মুক্তি পেয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মুক্তির পরই তা ভাইরাল হয়ে গেছে। নে গানের প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরা। সম্ভবত পুজোর সময় মুক্তি পাবে। ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ১২-র তরফ থেকে অফার দেওয়া হয়েছে চাঁদমণিকে। শুধু তাই নয়। টলিউডেও গানের অফার পেয়েছেন চাঁদমণি। টলিউডে চাঁদমণির গাওয়া গান ‘ভালোবেসেছি তাই হেরেছি’ গান এখন শুধু মুক্তির অপেক্ষায়।
রানু মণ্ডলও ঠিক এভাবেই বিখ্যাত হয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর গান শুনে একটি রিয়ালিটি শোয়ে ডাক পড়েছিল তাঁর। সেখান থেকেই সংগীত পরিচালক হিমেশ রেশমিয়ার নজরে পড়েন তিনি। তারপর উদিত নারায়ণ, হিমেশ রেশমিয়ার মতো তাবড় সংগীতজ্ঞদের সঙ্গে হিন্দি ছবিতে প্লেব্যাক করেন তিনি। ছবির নাম 'হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হীর'। এবার শিকে ছিঁড়ল আদিবাসী কন্যা চাঁদমণি হেমব্রমের ভাগ্যে।