নয়াদিল্লি: ‘ইকো ফ্রেন্ডলি' বা পরিবেশ বান্ধব কথাটির সঙ্গে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই আমরা পরিচিত। পরিবেশ দূষণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই পরিবেশ বান্ধব জাতীয় নানান পণ্যের উদ্ভাবনও চলছে বহুদিন ধরেই। সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ভাই-বোনের সুসম্পর্কের বাঁধন রাখি।
সোমবার ৩ আগস্ট রাখী বন্ধন উৎসব। করোনা পরিস্থিতিতে উৎসব অনুষ্ঠানে বিধি নিষেধ থাকলেও তাতে রাখী তৈরীর উৎসাহে বিন্দুমাত্র আঁচ পড়েনি। বরং এই মহামারীকে মাথায় রেখেই রাখীর থিম তৈরি হচ্ছে। এযাবৎ বৈদিক ওষধি হিসেবে করোনা নিয়ন্ত্রণে গোমূত্র, গোবরের নিদান দিয়েছেন অনেকেই। যদিও বিজ্ঞান এই ধারনায় সম্মতি দেয়না। তবে অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রেই গোবরের উপকারিতা সম্পর্কে কম-বেশি আমরা প্রত্যেকেই জানি। এই গোবর এমন একটি পদার্থ যে হিন্দুমতে এর ঐতিহ্যময় উপস্থিতি যুগ যুগ ধরে। বিশেষত ধর্মীয় বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে যেকোনো শুভ কাজে এর ব্যবহার বহুল প্রচলিত। তাই ভাই-বোনের সুসম্পর্কের বাঁধন ও সুরক্ষার প্রতীক রাখী তৈরীর ক্ষেত্রেও গোবরের ব্যবহার শুরু হয়েছে দেশের নানান প্রান্তে। উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্রে এই রাখী ইতিমধ্যেই দারুন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
অনেকটা মাটির তৈরি জিনিসের মত। গোবররকে মাটির মত মেখে নিয়ে নানান আকৃতির গড়ে নেওয়া হয়। এর ওপর রংবেরঙের পুঁথি ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। এরপর স্নেহের ভাইয়ের হাতে বাঁধার জন্য পরম বিশ্বাস ও ভালোবাসার বাঁধন হিসেবে জুড়ে দেওয়া হয় রঙিন সুতো বা ফিতে জাতীয় কিছু। এর সংরক্ষণের জন্যেও বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। বিভিন্ন স্বচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও তৈরি হচ্ছে গোবরের রাখী। ফলে বহু মানুষ বিশেষত মেয়েদের বাড়িতে বসেই অর্থ উপার্জনের সুরাহা করছে এই সহজলভ্য উপকরণে রাখী তৈরীর কাজ।
অন্যদিকে প্রস্তুতকারীদের অনেকের মতে এই পরিবেশ বান্ধব রাখীর বিশেষত্বও আছে। হাতে পরানোর পর খুলে তুলে রাখার পরিবর্তে কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইলের মতো গ্যাজেটের আশেপাশে ঝুলিয়ে রাখলে নাকি ক্ষতিকারক রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দিতে পারে এই ইকো ফ্রেন্ডলি রাখীর মূল উপাদান গোবর।