কলকাতা: লকডাউনের মধ্যে একটি শর্টফিল্ম বানিয়েছিলেন কলকাতার মেয়ে দেবাশ্মি চক্রবর্তী। স্বল্প দৈর্ঘ্যের ওই ছবিটি সম্প্রতি ব্রিটেনের একটি নামী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। আন্তর্জাতিক সেই প্রতিযোগিতায় ছবিটি প্রথম স্থান অধিকার করেছে। কলকাতার মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লসের নবম শ্রেণির এই ছাত্রী প্রথম ভারতী যে ব্রিটেনে ২০২১ সালে জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৪৫৬ বছর পুরনো ফেল্ডড ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কুলের গ্রীষ্মকালীন মেয়াদে অংশ নিতে পারবে ও এর জন্য বৃত্তি অর্জন করেছে সে।
১৫৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ফেল্ডড স্কুল ইংল্যান্ডের এসেক্সের একটি বোর্ডিং স্কুল। তাদের আন্তর্জাতিক সামার স্কুল বিশ্বজুড়ে ৫০০-রও বেশি শিক্ষার্থীকে সুযোগ দেয়। এই বছর এরা একটি দুই সপ্তাহের অনলাইন প্রোগ্রাম তৈরি করেছে। যাতে ৪০ টিরও বেশি দেশের ৬৭৩ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। গার্লস মডার্ন হাই স্কুলের আইজিসিএসই শিক্ষার্থীরা ৬ থেকে ১৭ জুলাই মাস এই প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছিল। সেরা শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য এরা একটি সম্পূর্ণ স্কলারশিপের আয়োজন করে। সামনের গ্রীষ্মে যদি সে এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারত তা হলে কী দেখাত আর সে কী শিখেছিল তা নিয়ে দেবাশ্মি একটি অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র তৈরি করেছিল।
ফেল্টেডের সঙ্গে অনলাইন গ্রীষ্মকালীন বিদ্যালয়ের সমন্বয়কারী এক শিক্ষক অস্মিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের স্কুলের এই প্রথম আইজিসিএসইয়ের অফার পেয়েছে। এটি আমাদের জন্য একটি বড় স্বীকৃতি। ফল্টেড প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমাদের আইজিসিএসই শিক্ষার্থীরা ৪০ টিরও বেশি দেশ থেকে তাদের সমবয়সীদের সঙ্গে আইডিয়া বিনিময়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকতার চেতনা বিকাশের সুযোগ পেয়েছিল। ৪০ টি দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তারা।” ফেল্টড স্কুলের গ্লোবাল এডুকেশন ডিরেক্টর ড্যানিয়েল ইমারসন বলেন, “আমাদের আন্তর্জাতিক গ্রীষ্মকালীন স্কুলে ফোর্থ টার্ম চলছে। যেখানে আমরা সাধারণত বিশ্বের ৩০ টি দেশের ৫০০ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে সাংস্কৃতিক ও অ্যাকাডেমিক অভিজ্ঞতায় অংশ নিতে স্বাগত জানাই। এই বছর বিশ্বব্যাপী মহামারীর কারণে আমাদের অ্যাকাডেমিক ম্যানেজার কেরস্টি ফ্রেজার এবং আমি এই দুই সপ্তাহের অনলাইন গ্রীষ্মকালীন স্কুল তৈরি করেছি। ৪০টিরও বেশি দেশের ৬৭৩ শিক্ষার্থীর কাছে আমাদের গ্লোবাল স্টাডিজ এবং ইংরেজি ভাষার প্রোগ্রামগুলি থেকে বাছাই করার অপশন ছিল। আমরা এই সম্মানজনক বৃত্তি অর্জনকারী ভারত থেকে প্রথম শিক্ষার্থী দেবাশ্মিকে স্বাগত জানাচ্ছি।”
দেবাশ্মি একজন ক্রীড়াবিদও। সে এই বোধগম্যভাবে বৃত্তি নিয়ে খুব আগ্রহী। সে বলেছে, “আমি একটি শর্ট ফিল্ম তৈরি করেছিলাম। বৃত্তি পেয়ে আমি অভিভূত। অনলাইন সামার স্কুল প্রোগ্রামটি আমার প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি আমাকে দিয়েছে। এর জন্য আমি বিশ্বের অনেক আকর্ষণীয় এবং বৈচিত্র্যময় ব্যক্তিদের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পেরেছি। তাদের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সঙ্কটের সময় আমরা ঘরে বসে এবং সম্পূর্ণ লকডাউনে থাকাকালীন প্রোগ্রামটি আমার জন্য বিশ্বের জানালা খুলে দেয়। আমি যখন পরের বছর ফিল্টটেডে যোগদান করতে যাব, তখন আমি আমার নিজের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে যাব। আন্তর্জাতিকতা এবং বৈচিত্র্য যুক্ত হওয়ায় আমি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের সংস্কৃতিও গ্রহণ করতে পারব।”