কলকাতা: বাঙালির কাছে উত্তম কুমার মানেই এক আবেগ৷ উত্তর কুমার মানেই একান্ত প্রাণের মানুষ৷ তিনিই বাঙালির একমাত্র ম্যাটিনি আইডল৷ বাঙালির মহানায়ককে খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন সুপ্রিয়া দেবীর চার দশকের মেকআপ ম্যান কিশোর দাস৷ ২০১৮ সালে সুপ্রিয়া দেবীর মৃত্যুর পর মহানায়কের বেশ কিছু রহস্যের সন্ধান দিয়েছিলেন তিনি৷
আরও পড়ুন- নায়ক'-এর সঙ্গে নিজের জীবনের মিল পেয়েছিলেন উত্তম কুমার? তাই কি রাজি হয়েছিলেন?
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে কিশোরবাবু বলেন, ‘‘খাবার টেবিলে যাবতীয় খাবার সাজিয়ে রাখতেন দিদি- মুরগির মাংস, মাছ, মিষ্টি থেকে ফল৷ দাদা ভাবতেন, তাঁকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে৷ তাই সবসময়ই দিদি বলতেন, ‘বলো কোনটা দিয়ে শুরু করবে?’ কিন্তু শব্দ খুঁজে পেতেন না দাদা৷’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিটি রান্নাই মুখে দিয়ে দেখতেন দাদা৷ তবে পরিমাণ ছিল কম৷ আর খাবার শেষ রসগোল্লা খেতেন নুন মাখিয়ে৷ দিদি বলতেন, দাদা সরাসরি মিষ্টি খাওয়ার পক্ষপাতী নন৷ তাঁকে অনুকরণ করতে গিয়ে আমিও নুন আর লেবুর রস মাখিয়ে রসগোল্লা খেতে শুরু করি৷ সত্যি কথা বলতে, এর এক অনন্য স্বাদ ছিল৷’’
শুধু খাবার টেবিলই নয়, একই ভাবে দাদার জামা-কাপড়ও গুছিয়ে রাখতেন দিদি, অতীতের স্মৃতি হাতড়ে বললেন কিশোরবাবু৷ তিনি বলেন, ‘‘দাদা সব ধরনের জামা-কাপড়ই পড়তেন, পাঞ্জাবী-পাজামা, ধুতি, স্যুট থেকে ক্যাজুয়াল শার্ট৷ কিন্তু এমনও হয়েছে, দিদি হয়তো ক্যাজুয়াল জামা রেখেছেন, দাদা চেয়ে বসলেন পাঞ্জাবী৷ আবার কোনও দিন ধুতি-পাঞ্জাবী রেখেছেন, দাদা চাইতেন স্যুট৷ তাই দাদার জন্য সব ধরনের পোশাকই প্রস্তুত রাখতেন দিদি৷’’ ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত শৌখিন ছিলেন মহানায়ক৷
আরও পড়ুন- শুধু অভিনেতা নয়, গায়ক হিসেবেও সুনাম ছিল উত্তম কুমারের, নিজের গলায় গেয়েছিলেন গানও
বাংলা চলচ্চিত্র জগতে আজও উত্তম কুমার সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র৷ আনন্দ আশ্রম, সপ্তপদী, মৌচাক, সন্ন্যাসী রাজা, নায়ক, হারানো সুর, পথে হলো দেরী, সাড়ে চুয়াত্তর, ইন্দ্রাণী, একটি রাত, ওগো বধূ সুন্দরী, ছদ্মবেশী, দেয়া নেয়া, শঙ্খবেলা, সুনয়নী, দুই পৃথিবী, মরুতীর্থ হিংলাজ -সহ অসংখ্য ছবিতে দর্শকের মনে বিরাজ করেছেন তিনি৷ আজ সেই মহানায়কের জন্মদিন৷