সুশান্ত-কাণ্ডে বেপরোয়া হয়ে উঠছে সংবাদমাধ্যম, সংযত হওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

আটজন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস আধিকারিকের জনস্বার্থ মামলায় গণমাধ্যমগুলির জন্য “নৈতিক প্রতিবেদন” এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা সম্পর্কিত নির্দেশাবলী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। যদি এর লঙ্ঘন হয় তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছেন।

মুম্বই: সুশান্ত সিং রাজপুত মামলার খবর করতে গিয়ে গণমাধ্যম সংস্থাগুলি যেন সংযম বজায় রাখে। বৃহস্পতিবার, এই মর্মে একটি আদেশ জারি করল  বোম্বে হাইকোর্ট। আদেশে বলা হয়েছে যে, মামলার বিবরণ প্রকাশ বা প্রতিবেদন করার সময় মিডিয়াকে অবশ্যই কিছুটা সংযম দেখাতে হবে। আদেশে আরও বলা হয়েছে যে এই ঘটনার প্রতিবেদন এমনভাবে করা উচিত যাতে তদন্তে  বাধা সৃষ্টি না হয়। এদিন বিচারপতি এ এ সায়েদ ও এস পি তাভরের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশটি পাস করেন।  

এদিন দু'টি আবেদনের শুনানি ছিল আদালতে, একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন আটজন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস আধিকারিক। যাঁরা মুম্বাই পুলিশের বিরুদ্ধে “অন্যায়, বিদ্বেষমূলক ও মিথ্যা প্রচার” বন্ধ করার নির্দেশের দাবিতে মুম্বাই পুলিশের পক্ষে একসঙ্গে সমাবেশ করেছিলেন। অপর আবেদনটি ছিল, চলচ্চিত্র নির্মাতা নীলেশ নাভালখা সহ আরও দু'জনের পক্ষ থেকে। তাঁরাও আদালতের তরফে গণমাধ্যম সংস্থাগুলির জন্য নির্দেশ জারির আবেদন জানিয়েছিলেন যেন সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কিত প্রতিবেদন সংবেদনশীল না করা হয়।  বম্বে হাইকোর্টে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলাটি করেছিলেন যে প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকেরা তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন ডাইরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ এম এন সিং, পি এস পাসরিচা, কে সুব্রামায়ণ্য, ডি শিবানন্দন, সঞ্জীব দয়াল এবং সতীশ মাথুর সহ  প্রাক্তন অ্যাডিশনাল ডিজিপি কে পি রঘুভংশি এবং মুম্বাইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার ডি এন যাদব।

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায়, অন্যান্য আবেদন গুলির মধ্যে রয়েছে, মে কোনো ধরনের গণমাধ্যম, সে সংবাদ পত্রই হোক বা বৈদ্যুতিন, রেডিও এমনকি ইন্টারনেট বা অন্য কোনো ধরনের, তাদের মিথ্যা প্রকাশনা ও প্রচার থেকে বিরত থাকতে নির্দিষ্ট গাইডলাইন বা নির্দেশিকা দিক আদালত। অবমাননাকর ও বিতর্কিত মন্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, সংবাদ প্রতিবেদনগুলি, যা পুলিশের সুনামকে প্রশ্নে সম্মুখীন করতে পারে। যারফলে সাধারণ মানুষ এই ব্যবস্থা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি বিশ্বাস হারাতে পারে বা ন্যায়বিচার পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আট অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকের জনস্বার্থ মামলায় “নৈতিক প্রতিবেদন” এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা সম্পর্কিত নির্দেশাবলী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণের আবেদন জানিয়েছেন। কোনও গণমাধ্যম যদি তা লঙ্ঘন করে তবে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছেন। বেঞ্চ জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং এই ঘটনার তদন্তকারী সিবিআই দল এই আবেদনের প্রেক্ষিতে কী বলতে চাইছে তা শোনার পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − sixteen =