কলকাতা: করোনার জেরে এ বছর সবকিছুই যেন কেমন ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও। সাধারণত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয় এই চলচ্চিত্র উৎসব। কিন্তু এ বছর তা পিছিয়ে গিয়েছে জানুয়ারি পর্যন্ত। করোনা আবহের কথা মাথায় রেখেই চলচ্চিত্র উৎসব পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে একটি বার্তাও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাটারনিটিদের পরামর্শ পাওয়ার পর কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক স্টেক হোল্ডার ও সিনেপ্রেমী মানুষদের জানাচ্ছি যে উৎসবের নতুন দিন স্থির করা হয়েছে। ২০২১ সালের ৮ থেকে ১৫ জানুয়ারি এটি অনুষ্ঠিত হবে। চলুন, এর প্রস্তুতি শুরু করা যাক!”
After receiving global film fraternity’s consent, I hereby inform all stakeholders of Kolkata International Film Festival & cine lovers that our festival has been rescheduled, given the current circumstances. It will now be held from Jan 8-15, 2021. Let the preparations begin!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) October 29, 2020
এ বছর কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব ২৬তম বছরে পড়ছে। উৎসবের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বেশ কিছুদিন। এমনকী শাহরুখ খান ও অমিতাভ বচ্চনের মতো তারকার কাছে আমন্ত্রণ পত্রও পৌঁছে গিয়েছে। চলচ্চিত্র উৎসবে কী কী ছবি দেখানো হবে তাও কার্যত স্থির হয়ে গিয়েছে বলে খবর। ছবির নির্বাচনও শেষ হয়ে গিয়েছে বলে খবর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির মধ্যে চলচ্চিত্র উৎসব করা কতটা যুক্তিসঙ্গত তা নিয়ে দোটানার মধ্যে ছিল কর্তৃপক্ষ। এর পরই শোনা যায় উৎসবে নাকি দেশ-বিদেশের অনেক অতিথিই আসবেন না। ইতিমধ্যেই অস্কার, বাফটা, কান, ভেনিস, বার্লিন সহ একাধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এ বছর বাতিল হয়েছে। ভারতের মধ্যে মুম্বই ও গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবও পিছিয়ে গিয়েছে। পরের বছর জানুয়ারিতে হবে গোয়া চলচ্চিত্র উৎসব। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবও অনুষ্ঠিত হবে জানুয়ারিতে। ৫ নভেম্বর থেকে এ বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার জেরে তা পিছিয়ে যায় বাকি চলচ্চিত্র উৎসবগুলির মতোই।
এদিকে রাজ্যে করোনার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব বলছে বুধবার রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হন ৩ হাজার ৯২৪ জন। ৬০ জন করোনায় মারা গিয়েছেন। কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণও বেড়েছে। তার উপর দুর্গা পুজো হওয়ায় করোনা সংক্রমণ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে চলচ্চিত্র উৎসব করা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবাও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। ফলে আমন্ত্রিতদের আসতেও সমস্যা হবে। তারপর এসে কোয়ারেন্টাইনে থাকারও একটা ব্যাপার রয়েছে। সব মিলিয়ে নভেম্বরে চলচ্চিত্র উৎসব হলে বেশ মুশকিল হত। যদিও উৎসবের ভার্চুয়াল উদ্ধোধনের পরিকল্পনা করেছিল সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী সেই উৎসব পিছিয়ে দেন।