ওয়াশিংটন: সকলের নজর এড়িয়ে অতি সন্তর্পণে সোমবার যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে পৌঁছন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ তাঁর এই সফরের কথা কাকপক্ষীও টের পায়নি৷ জানা গিয়েছে, রবিবার ভোর ৪টে নাগাদ সংবাদমাধ্যমের নজর এড়িয়ে আমেরিকার বায়ুসেনার একটি বোয়িং ৭৫৭ বিমানে চড়ে ইউক্রেনের উদ্দেশে পাড়ি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ এই বিমানটি সি-৩২ নামেও পরিচিত৷ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বহরে থাকা বিমানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট এটি। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুই নিরাপত্তা কর্মী, চিকিৎসকদের একটি ছোট দল, ঘনিষ্ঠ কয়েক জন উপদেষ্টা এবং দু’জন সাংবাদিক।
আরও পড়ুন- কূটনৈতিক উত্তেজনার মাঝেই চিন ও রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ নৌ মহড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা
সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেখান থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রার সময় বিমানে চড়েন, সেখান থেকে বেশ খানিকটা দূরে এই বিমান দাঁড় করানো হয়েছিল। বাইরে থেকে কেউ যাতে ওই বিমানের ভিতরে বাইডেনের উপস্থিতি টের না পান, তার জন্য বন্ধ করা হয়েছিল প্রতিটি জানালার ঝাঁপ৷ আমেরিকার প্রেসিডেন্টের গতিবিধির উপর যে সারা বিশ্বের নজর থাকে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু কাউকে ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পেতে দেননি বাইডেন৷ তাঁর এই আচমকা ইউক্রেন সফরে বেশ হতবাক আন্তর্জাতিক মহল৷
সাধারণত বাইডেনের বিদেশ যাত্রা করলে তাঁর সঙ্গে রেডিয়ো, টিভি এবং সংবাদপত্র মিলিয়ে কমপক্ষে ১৩ জন সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিকের একটি দল যান। এক্ষেত্রে ছিল মাত্র দু’জন। রিপোর্টার হিসেবে ছিলেন স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক সাবরিনা সিদ্দিকি এবং ছিলেন এপি-র চিত্রসাংবাদিক ইভান। তবে সফরের আগে ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছিল তাঁদের ৷
বাইডেনের সঙ্গে সফররত সাংবাদিক সাবরিনা সিদ্দিকী জানান, তাঁকে এবং এক জন চিত্রসাংবাদিককে ওই দিন রাতেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা বাইডেনের সঙ্গে যেতে সম্মতি প্রকাশ করার পরই তাঁদের ফোন বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রেসিডেন্ট না ফেরা পর্যন্ত তাঁরা ফোন পাবেন না।
প্রায় সাত ঘণ্টা বিমান সফরের পর ওয়াশিংটন থেকে জার্মানির রামস্টেইনে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছায় বাইডেনের বিমান। সেখানে বিমানে জ্বালানি ভরা হয়। তখনও বিমানের প্রতিটি জানালা ছিল বন্ধ। কেউ বিমান থেকে নীচে নামেননি।
সেখান থেকে প্রসিডেন্টকে নিয়ে যাওয়া হয় পোল্যান্ড। সেখানে রজেসজো-জাসিওনকা বিমানবন্দরে বাইডেনের বিমান অবতরণ করে। সেখান থেকে একটি এসএইভি গাড়ি করে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই গাড়িও যথারীতি ছিল কালো কাচে ঢাকা এবং তাতে সাইরেনের ব্যবহার করা হয়নি।
সাবরিনা আরও জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১৫ মিনিটে তারা ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনের মধ্যেই তাঁদের প্রেসিডেন্টের দিকে তাকাতে বারণ করা হয়েছিল। এর পর ১০ ঘণ্টার সফর শেষে ইউক্রেনে পৌঁছন জো বাইডেন। দেখা করেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>