সংকটকালে ভগবানের নাম নেওয়া অতি সাধারণ বিষয়। কিন্তু ব্রেন টিউমার অপারেশন চালাকালীন যদি রোগীই গাইতে শুরু করেন ‘হনুমান চল্লিশা’? এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, এমন আশ্চর্য ঘটানা ঘটেছে রাজস্থানে। জয়পুরের এক হাসপাতালে মস্তিষ্কে টিউমার নিয়ে ভর্তি হন বছর ৩০-এর হুলাসমল জাঙ্গির। জাগ্রত অবস্থাতেই তাঁর টিউমার অপারেশন করতে সাব্যস্ত করেন চিকিৎসকরা।
পেশায় কম্পিউটার অ্যাকাউন্ট্যান্ট জাঙ্গির গত তিন মাস ধরে মৃগি রোগে ভুগছিলেন। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি গ্রেড ২ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা তাঁকে জানান যে, তাঁর ‘অ্যাওয়েক কার্নিওটমি’ করা প্রয়োজন। অর্থাৎ কি না, তাঁকে অজ্ঞান না করেই অস্ত্রোপচার করে টিউমারটিকে বাদ দিতে হবে।
স্বভাবতই ঘাবড়ে যান জাঙ্গির। বেশ কয়েকটি হাসপাতাল তাঁকে ফিরিয়েও দেয়। তারা জানায়, এই অস্ত্রাোপচার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এতে তাঁর পক্ষাঘাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত জাঙ্গির জয়পুরের নারায়ণা মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতেলে যোগাযোগ করন। চিকিৎসক কে কে ভংশলের নেতৃত্বে ৭-৮ জন শল্য চিকিৎসক তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করেন। ভংশল জানান, জাঙ্গিরের মস্তিষ্কে এমন জায়গাতেই টিউমারটি ছিল, যাতে তাঁর বাকশক্তি আক্রান্ত হতে পারত। কিন্তু তা যাতে না হয়, সেই কারণেই জাঙ্গিরকে জাগিয়ে রাখা জরুরি ছিল।
৩ ঘণ্টার সেই অস্ত্রোপচারের প্রায় পুরোটাই জাঙ্গির আবৃত্তি করে গিয়েছেন ‘হনুমান চল্লিশা’। গত ১৪ নভেম্বর এই অস্ত্রাপচারটি সম্পন্ন হয়। তার ৭২ ঘণ্টা পরে জাঙ্গিরকে ছেড়েও দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। কিন্তু হাসপাতেলের তরফে পুরো ঘটনার বিবরণ জানানো হয়েছে ১ মাস পরে। আসলে চিকিৎসকরা জাঙ্গিরের আরোগ্যের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আপাপত সুস্থ রয়েছেন জাঙ্গির। কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটেনি তাঁর। এটা চিকিৎসা বিজ্ঞানের কামাল, নাকি বজরঙ্গবলীর, তা বলা যাচ্ছে না।