কলকাতা: শনিবার মধ্যরাতে প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী নির্মলা মিশ্র। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। জানা যাচ্ছে, শনিবার রাত বারোটা নাগাদ নিজস্ব বাসভবনেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন শিল্পী। আর তাতেই শেষ হল ‘এমন একটি ঝিনুক খুঁজে পেলাম না’ খ্যাত সংগীতশিল্পীর জীবন। আজ অর্থাৎ রবিবার বিকেলে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য নির্মলা মিশ্রের। জনপ্রিয় এই শিল্পীর প্রয়াণে শোকের ছায়া সংগীত জগতে।
নির্মলার পরিবারে রয়েছে তাঁর স্বামী, পুত্র এবং পুত্রবধূ। পুত্র শুভদীপ দাশগুপ্ত মায়ের মৃত্যু প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, পরিবারের সকলের চোখের সামনেই শিল্পী গতকাল রাতে প্রয়াত হন। তাঁর কথায়, ‘চোখের সামনেই মা চলে গেল। ২০১৫-তে সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়। তার পর থেকেই শরীরের একটা পাশে পক্ষাঘাত। তখন থেকেই বিছানায় পুরো শোওয়া থাকতেন মা। ২০১৮ থেকে ২০২২ এই চার বছর হাসপাতাল আর বাড়ি করেছে। শনিবার সকাল থেকেই শ্বাসকষ্ট। তার পর রাতে সব শেষ।’ তিনি আরও জানিয়েছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সঙ্গেই সঙ্গেই তাঁকে সার্দান অ্যাভিনিউয়ের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সেখানেই ছিল নির্মলা মিশ্রের দেহ। এরপর তাঁর মরদেহ রবীন্দ্রসদনে নিয়ে আসা হয়। শিল্পীর চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই নির্মলা অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্য গত ৫ বছরে বেশ কয়েক বার হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন। তিন বার হৃদ্রোগে আক্রান্তও হয়েছেন। তিন-চার দিন আগে অসুস্থতা হঠাৎই বাড়ে। গত বৃহস্পতিবার তাঁর রক্তচাপ বেশ খানিকটা কমে যায়। কিন্তু তিনি আর হাসপাতালে যেতে চাইছিলেন না। শনিবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। রাতে তিনি মারা যান।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে রবীন্দ্রসদনে রবিবার সকাল ১১টা থেকে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই রবীন্দ্রসদন চত্বরে উপস্থিত হয়েছেন সঙ্গীত জগতের একাধিক কলাকুশলী। নির্মলার বিখ্যাত গানগুলির মধ্যে অন্যতম— এমন একটা ঝিনুক খুঁজে পেলাম না, সেই একজন দিও না তাকে মন, আবেশে মুখ রেখে, বলো তো আরশি তুমি, আমি তো তোমার হাসি কান্নার চিরদিনের সাথী, কাগজের ফুল বলে, ও তোতা পাখি রে… ইত্যাদি। তবে শুধু বাংলায় নয়, বাংলার পাশাপাশি ওড়িয়া ভাষাতে গান করেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন নির্মলা। অনেকেই বলতেন, হিন্দির লতা, বাংলার সন্ধ্যার মতো ওড়িশার নির্মলা।