শব্দবাজির তাণ্ডবে ১,৬৪,৭৬৫টি পাখির মৃত্যু, সংকটে পাখির প্রজন্ম!

কলকাতা: কোটি-কোটি টাকার বাজি পুড়িয়ে দীপাবলি উদযাপন করেছে গোটা দেশ৷ আলোর উৎসবে শব্দবাজি ফাটিয়ে উল্লাস প্রকাশ হয়েছে বাংলায়৷ পুলিশের তরফে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও থামানো যায়নি শব্দ দানবের দৌরাত্ম্য৷ কিন্তু জানেন, এই শব্দবাজির দৌরাত্ম্যে ঠিক কতটা প্রভাব পড়ে জীবজন্তু-পাখির শরীরে৷ ঠিক কতটা প্রভাব ফেলে পাখি ও পশু কুকুরের৷ ন্যাশনাল বোর্ড রিসার্চ ব্যুরোর

শব্দবাজির তাণ্ডবে ১,৬৪,৭৬৫টি পাখির মৃত্যু, সংকটে পাখির প্রজন্ম!

কলকাতা: কোটি-কোটি টাকার বাজি পুড়িয়ে দীপাবলি উদযাপন করেছে গোটা দেশ৷ আলোর উৎসবে শব্দবাজি ফাটিয়ে উল্লাস প্রকাশ হয়েছে বাংলায়৷ পুলিশের তরফে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও থামানো যায়নি শব্দ দানবের দৌরাত্ম্য৷ কিন্তু জানেন, এই শব্দবাজির দৌরাত্ম্যে ঠিক কতটা প্রভাব পড়ে জীবজন্তু-পাখির শরীরে৷ ঠিক কতটা প্রভাব ফেলে পাখি ও পশু কুকুরের৷

ন্যাশনাল বোর্ড রিসার্চ ব্যুরোর সমীক্ষা বলছে, ২০১৮ সালে শব্দবাজির কারণে গোটা দেশজুড়ে কমপক্ষে এক লক্ষ ৬৪ হাজার ৭৬৫টি পাখির মৃত্যু হয়েছে৷ স্রেফ শব্দবাজির তাণ্ডবে মৃত্যু ঘটেছে৷ শব্দবাজির জেরে বন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে পাখি৷ হারাতে পারে দৃষ্টিশক্তিও৷

কুকুরের শ্রবণ ক্ষমতা মানুষের প্রায় পাঁচ গুণ৷ মানুষের কাছে যা খুব ফিসফিস করা শব্দ, কুকুরের কাছে তা হাজার ওয়াটের সাউন্ড সিস্টেম৷ পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ৯০ ডেসিবেলের শব্দবাজি কুকুরের কাছে কতটা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে পারে৷ শব্দবাজির শব্দে বন্ধ্যাত্ব আসছে পাখিদের মধ্যে৷ পোষা পাখিরাও অন্তত দুটো ডিম পাড়া বন্ধ করে দিচ্ছে৷ তারপরেও যদি পাখি ডিম পারে, তার মধ্যে ৮০ শতাংশ ছানার ডিম ফুটে আর বের হওয়ার কোন সম্ভাবনাই থাকে না৷ একটি চকলেট বোম পাখির পরবর্তী প্রজন্মকে গোড়া, কালা কিংবা অপরিণত করার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷

সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, ৪০ ডেসিবেল শব্দ কুকুরের কানে ২৪০ ডেসিমেল সমান আঘাত হানে৷ আর ৯০ ডেসিবেলের শব্দবাজি প্রভাবে হূদরোগ পর্যন্ত হতে পারে পোষ্য কুকুরের৷ কুকুর কিংবা বিড়ালের ক্ষেত্রে সমস্যাটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানসিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, শব্দ শুনতে পাওয়া প্রকৃতির আশীর্বাদ ওদের কাছে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায় দীপাবলির শব্দবাজি৷ যাঁদের বাড়িতে কুকুর রয়েছে, তাঁরা জানেন, কীভাবে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওদের চরিত্রে পরিবর্তন ঘটে৷ প্রবল যন্ত্রণায় কুঁকড়ে থাকা কুকুররা খুঁজতে থাকে নিঃশব্দতার আবেশ৷

অন্ধ্রপ্রদেশের এক গবেষক তাঁর গবেষণাপত্র লিখেছিলেন, শব্দবাজির জন্য দু’দিন আরাকুভ্যালি জুড়ে শুয়ো পোকার বংশ নির্বংশ হয়৷ কথাটা সাধারণ নয়৷ ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে আরকুভ্যালিতে প্রজাপতি শূন্য ছিল৷ শব্দের আনন্দ প্রকৃতির কাছে যে বড় অভিশাপ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − four =