গ্রাম্যজীবনে শহুরে জীবনযাপন, মারণ রোগের আশঙ্কা চিকিৎসকদের

গ্রাম্যজীবনে শহুরে জীবনযাপন, মারণ রোগের আশঙ্কা চিকিৎসকদের

4fc52886ca61f284ef25fa77785e0e15

নয়াদিল্লি: অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে ডায়াবেটিকের সংখ্যা। গত চার দশকে চারগুন বেড়েছে এই হিসেব। সবচেয়ে বেশি ডায়াবেটিসে ভুগছেন আমাদের দেশের মানুষই। বাড়ছে অস্বাভাবিক ওজনবৃদ্ধির মাত্রাও। ডায়াবেটিসের সঙ্গে যে ওবেসিটির সম্পর্ক রয়েছে, তা চিকিৎসকরা আগেই জানিয়েছেন। কিন্তু কী কারণ রয়েছে এই ওজন বেড়ে যাওয়ার পেছনে?

পরিসংখ্যান বলছে, ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন প্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যা আনুমানিক ৪৬ কোটি। গোটা বিশ্বের মোট প্রাপ্তবয়স্কের গড়ে শতকরা ৯.৩  জন ভুগছেন এই রোগে। গত চার দশকে যা প্রায় চার গুন বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে ভারতেই ভুগছেন প্রায় ৬ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষ। এই পরিস্থিতিতেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে রেকর্ড হারে বাড়বে বলেই আশঙ্কা তাঁদের। তবে এর কারণ হিসেবে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা রীতিমতো অবাক করার মতো।

এনসিডি রিস্কের গবেষকদল দাবি করেছেন, এক্ষেত্রে গ্রাম্য জীবনে শহুরে প্রভাব ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। গ্রামের মানুষের খাওয়াদাওয়ার ধারা পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনস স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অধ্যাপক এডওয়ার্ড গ্রেগ। তিনি এই প্রসঙ্গে চীন, ভারত, মেক্সিকোর নাম উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে বিশ্বের এই দেশগুলিই এই সমস্যার কেন্দ্রস্থল। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, 'গ্রামের পরিবর্তিত লাইফস্টাইল যেভাবে খারাপের দিকে এগোচ্ছে, তাতে আমি ভয় পাচ্ছি। সেখানে চিকিৎসা ব্যবস্থার উপযুক্ত পরিকাঠামোও নেই। তাছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষ খুব একটা গুরুত্বও দেন না এই রোগটিকে।'

এছাড়াও কৃষিকার্যের ক্ষেত্রে যান্ত্রিকীকরণের অত্যধিক প্রভাবও রয়েছে। ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যালিফোর্নিয়াস গিলিংস স্কুল অফ গ্লোবাল পাবলিক হেলথের তরফে ব্যারি পপকিন তুলে ধরেছেন একটি পরিসংখ্যান। তাঁর কথায়, 'আমেরিকায় গ্রাম্য কৃষিকাজের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যয় করা হয়, ততটা শহরেও প্রয়োজন হয় না।' অধ্যাপক পপকিন আশঙ্কা করে আরও বলেন, 'ডায়াবেটিস আমাদের যতটা দুর্বল করে দেয়, তত তাড়াতাড়ি মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে না।' সুতরাং এই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন বলেই মনে করেন তিনি।

টাইপ ১ ডায়াবেটিস ছাড়াও টাইপ ২ ডায়াবেটিস লক্ষ্য করা যায়। প্রথমটির ক্ষেত্রে অধিকাংশ চিকিৎসকরা বলেন, এর পেছনে জিনগত কারণ থাকতে পারে। তবে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলি নষ্ট হলেও এমনটা হতে পারে। পরিসংখ্যান বলছে, ১০ শতাংশ এই টাইপ ১-এ আক্রান্ত। অন্যদিকে টাইপ টু ডায়াবেটিসে সাধারণত মধ্যবয়সী বা বৃদ্ধ ব্যক্তিরা ভোগেন। অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি ছাড়াও যাঁরা অধিকাংশ সময় বসে বসে কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা বেশি থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *