ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে দোকান-বাজারের ভিড়! জারি গাইডলাইন

চিনের উহান থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল বলে জানা গেছে। নেটদুনিয়ায় এখন সমস্ত কিছুকে নিয়েই ট্রোল করা হয়, এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এক নেটিজেন মজা করে বলেছেন, লালমোহন বাবু ওরফে জটায়ু যদি থাকতেন তাহলে এবছর তাঁর বই এর নাম হত “উহানে উঁকিঝুঁকি!”

 

কলকাতা: করোনা ভাইরাস৷ এই নামটির সঙ্গে মানুষ পরিচিত হয়েছে প্রায় ৯ মাস। বিশ্বজুড়ে এখনও তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনা৷ সবমিলিয়ে কয়েক কোটি মানুষ মারা গিয়েছেন করোনার গ্রাসে। ভারতেও ব্যপক প্রাণহানী ঘটেছে এই মারণ ভাইরাসের ফলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে অতিমারির পরিচয় দিতে বাধ্য হয়েছে। চিনের উহান থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে মনে করেন অনেকে৷ নেটদুনিয়ায় এখন সমস্ত কিছুকে নিয়েই ট্রোল করা হয়, এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এক নেটিজেন মজা করে বলেছেন, লালমোহন বাবু ওরফে জটায়ু যদি থাকতেন তাহলে এবছর তাঁর বইয়ের নাম হত ‘উহানে উঁকিঝুঁকি!’ নেটপাড়ায় কটাক্ষ চলচেও দোকান-বাজারে ভিড় ভারতের মতো দেশে বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

বিশ্বের বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞদের মতে দোকান-বাজার কিংবা শপিংমল থেকেই করোনা বেশি ছড়াচ্ছে। তাঁদের মতে, দেশে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ আসতে পারে দোকান-বাজারের ভিড় থেকেই। ফলে বাজার নিয়ে একাধিক একাধিক গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, নিরাপদে থাকতে কমপক্ষে ৬মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কেউ মাস্ক না পরলে প্রতিবাদ করতেও বলা হয়েছে। ভিড়ে এন ৯৫ মাস্ক সবচেয়ে কার্যকরী, পাশাপাশি ফেস শিল্ড ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছে। পচা ও কাটা শাকসবজি না কেনাই ভাল, বাড়িতে নিয়ে গিয়ে টানা ১ ঘণ্টা নুন বা ভিনিগারের জলে সেগুলিকে ভিজিয়ে রাখা উচিত। বাজারের ব্যাগ ভাল করে ধুয়ে নেওয়া আবশ্যক। মাছ মাংসের ব্যগের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কঠিন ভাবে পালন করা জরুরি, কেননা রক্তের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া মিশে থাকে। পাশাপাশি প্যাকেট জাতীয় দ্রব্যের ক্ষেত্রেও ভাল করে ধুয়ে বা সাবান জলে মুছে তবেই ঘরে ঢোকানোর কথা বলা হয়েছে।

গুগলের কোভিড ১৯ কমিউনিটি মবিলিটি রিপোর্টে যে তথ্য সামনে এসেছিল, ভারতবাসীর কাছে তা অনেকটাই গোপন রাখা হয়েছে। গুগল মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের মাঝ সপ্তাহ পর্যন্ত অর্থাৎ লকডাউনের প্রথম দিকে মানুষের পদচারণা নিয়ে একটি জিপিএস সমীক্ষা করেছিল। সেখানে দেখা গেছে, ভারতে সেই সময় সকাল ৭.৩০ মিনিট থেকে ১০.৩০ মিনিট পর্যন্ত বাজারে সর্বাধিক ভিড় জমেছিল। উল্লেখ্য, তামিলনাড়ুর কোয়াম্বেডু এশিয়ার বৃহত্তম বাজার। সেখান থেকেই করোনা ওই রাজ্যে ব্যপক পরিমানে ছড়িয়েছিল। ওই বাজারে সরকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত স্টলের সংখ্যা ৩৭৫০টি। এর বাইরেও ওই সংখ্যার দ্বিগুন ব্যবসায়ী ওই বাজারে নিয়মিত ব্যবসা করেন। সমীক্ষায় দেখা যায়, ১৪ এপ্রিল অর্থাৎ তামিলনাড়ুর নববর্ষে ওই বাজারে ২ লক্ষ মানুষ ভিড় জমিয়েছিল।

জেনারেল মেডিসিন কনসালট্যান্ট চিকিৎসক চন্দ্রমৌলি মুখোপাধ্যায়ের মতে বাজারে যেহেতু একের পর এক লাগোয়া দোকান তাই সেখানে দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব। স্বাভাবিকভাবেই ভিড় এড়ানোর পক্ষেই রায় দিয়েছেন তিনি। ফলে গাইডলাইনে  ৫-৭ দিনের জিনিস একসঙ্গে কিনে রাখতে বলা হচ্ছে। সপ্তাহান্তের বদলে সোমবার থেকে শুক্রবারকেই বাজার করার দিন হিসাবে বেছে নেওয়ার যুক্তি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাড়িতে অসুস্থ ব্যক্তির ১ মাসের ওষুধ এককালীন কিনে রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি প্যাকেটজাতীয় দ্রব্য কেনার আগে এক্সপায়ারি তারিখ খুঁটিয়ে দেখে নিতে বলা হয়েছে, কেননা লকডাউনের ফলে পণ্য চলাচল ব্যহত হয়েছিল। ফলে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী এখন তার সুযোগ নিতে চাইছে। নির্দিষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করলে করোনা থেকে বাঁচা যেতে পারে বলেই মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − two =