আত্মবিশ্বাসই করোনাকে হারানোর একমাত্র হাতিয়ার, ‘যো ডর গয়া, ও মর গয়া!’

রিষড়ার ফেরিঘাটের বাসিন্দা মানবেন্দ্র বিশ্বাস, পেশায় ব্যবসায়ী। স্ত্রী, ছেলে ও বউমাকে নিয়ে বসবাস করেন। সম্প্রতি তিনি করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। দিনটা ছিল ২৯ জুলাই। রাতে পুরসভার কর্মীরা এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ভয় পেয়েছিলেন মানবেন্দ্র। ভেবেছিলেন, এরপর হয়ত আর কোনও দিনই তিনি বাড়িতে ফিরতে পারবেন না।

 

রিষড়া: ‘যো ডর গয়া, ও মর গয়া’  রিষড়ার এক ব্যবসায়ী করোনা জয় করে এ কথাই বললেন জনগণের উদ্দেশ্যে৷ করোনা আসলে জ্বর-সর্দি-কাশির মতোই একটা সংক্রমণ। একটা অদেখা ভয়। তাঁর কথায়, যদি নিজেকে ২২ গজের সেওয়াগ ভাবা যায়, তাহলে করোনা ভয়কে সরিয়ে দিতে অসুবিধা হবে না।

রিষড়ার ফেরিঘাটের বাসিন্দা মানবেন্দ্র বিশ্বাস, পেশায় ব্যবসায়ী। স্ত্রী, ছেলে ও বউমাকে নিয়ে বসবাস করেন। সম্প্রতি তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দিনটা ছিল ২৯ জুলাই। রাতে পুরসভার কর্মীরা এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ভয় পেয়েছিলেন মানবেন্দ্র। ভেবেছিলেন, এরপর হয়ত আর কোনও দিনই তিনি বাড়িতে ফিরতে পারবেন না। তাঁর কথায়, বুকের মধ্যে কে যেন ভীষণ জোরে ঢাক পিটছিল! সেই শব্দ ভেসে আসছিল তাঁর কানে। বাড়ি থেকে শ্রীরামপুর হাসপাতালে যাওয়ার সময়টাও সেই ভয় তাঁকে চিবিয়ে খাচ্ছিল। কিন্তু মানবেন্দ্র বাবু জানান, ধীরে ধীরে সেই ভয় হার মানতে শুরু করে।

এরপর মানবেন্দ্র জানান, ২২ গজের মাঠে যখন বীরেন্দ্র সেওয়াগ ব্যাট হাতে দাঁড়ান, তখন ওঁর সামনে কে বল করছে, তা লক্ষ্য করার কোনও দরকার পড়ে না সেওয়াগের। ব্যাট যদি ঠিক করে চালানো যায়, তাহলে কিস্তিমাৎ করাটা কোনও ব্যাপারই নয় ওঁর কাছে। ঠিক সেরকম ভাবেই ভয়কে যদি জয় করা যায়, তাহলে করোনাকে হারানও অনেকটাই সহজ। মানবেন্দ্র'র কথায়, আত্মবিশ্বাসই করোনা মোকাবিলার পক্ষে যথেষ্ট। তিনি জানিয়েছেন, ২৯ জুলাই ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসা চলতে থাকে সফলভাবে। ৩ আগস্ট মানবেন্দ্র বাবুকে চিকিৎসকেরা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ৪ আগস্ট দ্বিতীয়বারের জন্য করোনা পরীক্ষা করা হয় তাঁর। সেই রিপোর্ট আসতে কিছুটা সময় নেয়। ৮ আগস্ট তাঁকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছুটি দেয়।

মানবেন্দ্র জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৯ দিন তিনি নিজেই নিজেকে ভরসা জুগিয়েছেন, পাশে ছিলেন চিকিৎসকেরা। তিনি চিকিৎসকদের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। বাড়ি থেকে পরিবারের সদস্যরা ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে উল্টে মানবেন্দ্রই তাঁদের ভরসা জোগাতেন। মানবেন্দ্র বাবুর কথায়, বাড়ি ফিরে মনে হয়েছিল ছুটি কাটীয়ে ফিরেছেন তিনি। করোনা সংক্রমণ হলে অহেতুক ভয় না পেয়ে আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো কাজ করলে অবশ্যই সেরে ওঠা যায়। তিনি জানিয়েছেন, হয়ত ছুটির সময় পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি, কিন্তু ৯৮ শতাংশই সেরে উঠেছিলেন। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ মানববেন্দ্র। তাই মানবেন্দ্র'র বলেছেন, “এই যুদ্ধে যো ডর গয়া, ও মর গয়া।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 4 =