কলকাতা: দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দৈনিক সংক্রমণে ২২ দিন বিশ্ব শীর্ষে উঠে এসেছে ভারত৷ ফলে দুশ্চিন্তা বাড়ছে ক্রমশ। এদিকে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে এখনও কিছু প্রকাশ করতে রাজি নয় পুনের সিরাম সংস্থা। এর মধ্যেই সম্প্রতি একটি বৈঠকে এইমসের বিজ্ঞানীরা জানালেন, শুধু ফুসফুসই নয়, করোনা সংক্রমণে শরীরের অন্যান্য অঙ্গও ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
টুইট করে সিরামের কর্তা আদার পুনাওয়ালা সাফ জানিয়ে দেন, এখনও দু'মাস ভারতবাসীকে দাঁতে দাঁত চেপে অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের ট্রায়াল চলছে। সুতরাং ট্রায়াল চলাকালীন অবস্থায় কোনও ভুয়ো খবর নিয়ে মাতামাতি না করাই শ্রেয় বলে মনে করছেন সিরাম কর্তা। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ, যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দেশবাসী থেকে শুরু করে চিকিৎসক প্রত্যেকেই।
সম্প্রতি নীতি আয়োগের সঙ্গে এইমস 'ন্যশনাল ক্লিনিকাল গ্র্যান্ড রাউন্ডস' নামক একটি যৌথ বৈঠক আয়োজন করেছিল। এইমস কর্তা চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়া সহ নিউরোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক এম ভি পদ্মা শ্রীবাস্তব, কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অম্বুজ রায় এবং মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর নীরজ নিশ্চল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ফুসফুস ছাড়াও শরীরের অন্যান্য অঙ্গও করোনা দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। ফুসফুসের ওপরে থাকা এসিই-২ রিসেপটরের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ফুসফুসে প্রবেশ করে। কিন্তু এই রিসেপটর শরীরের অন্য অঙ্গেও রয়েছে। তাই এই রিসেপটরের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য কোষগুলিতেও করোনা বাসা বাঁধতে পারে। চিকিৎসক নীরজের কথায়, করোনা কিছু ক্ষেত্রে স্নায়ুকেও আক্রান্ত করছে। তাই অনেক ক্ষেত্রেই, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। এর ফলে রোগী স্ট্রোক, এনসেফালাইটিস কিংবা অন্যান্য জটিল রোগের শিকার হচ্ছেন।
চিকিৎসক অম্বুজ বলেছেন, “সাধারণত রোগীর পাল্স রেট কমে গেলে আমরা পেসমেকার বসানোর পরামর্শ দিই, কিন্তু সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনেকেরই করোনার ফলেই পালস রেট নেমে গিয়েছে। তাই ওষুধের ওপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে আমাদের।” পাশাপাশি করোনার ফলে কিডনি ও ত্বকেরও ক্ষতি হচ্ছে। করোনার ফলে ফুসফুসে জমা তরল বের করতে রোগীকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হচ্ছে, ফলে শরীরের সমস্ত জল বেরিয়ে গেলে কিডনিতে রক্ত সরবরাহ মাত্রা কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে ত্বকের ক্ষেত্রে করোনার ফলে রক্ত জমাট বেঁধে একাধিক র্যাশ বেরোচ্ছে। ফলে শুধু ফুসফুসই নয় করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শরীরের অন্যান্য অঙ্গও।