সুগার ফল দুশ্চিন্তার কারণ, কী করবেন? বলছেন চিকিৎসকরা

ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগারের মাত্রা ৭০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার-এর নিচে নেমে গেলে একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায় সুগার ফলে'র সমস্যাকে 'হাইপোগ্লাইসেমিয়া' বলা হয়। 'সুগার ফল' হলে বুক ধড়ফড়, হাত কাঁপা, মাথা ঝিমঝিম, শরীরে অস্বস্তি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। যেকোনও সুগার রোগীর ক্ষেত্রেই এই সমস্যা হতে পারে।

কলকাতা: আপনি কি সুগারের রোগী? বার বার সুগার ফলের সমস্যা হয়? সাবধান! দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে হতে পারে ভয়ানক বিপদ। সুগার ফল অত্যন্ত বিপজ্জনক, সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন বিপি পোদ্দার হসপিটাল অ্যান্ড মেডিক্যাল রিসার্চ লিমিটেডের কনসালটেন্ট এন্ডোক্রিনোলজিস্ট চিকিৎসক মনোজিৎকেতন মুখোপাধ্যায়।

ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগারের মাত্রা ৭০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার-এর নিচে নেমে গেলে একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায় সুগার ফলে'র সমস্যাকে 'হাইপোগ্লাইসেমিয়া' বলা হয়। 'সুগার ফল' হলে বুক ধড়ফড়, হাত কাঁপা, মাথা ঝিমঝিম, শরীরে অস্বস্তি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। যেকোনও সুগার রোগীর ক্ষেত্রেই এই সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসকের মতে, সুগার ফলের অন্যতম কারণ পুরোনো ওষুধ বা ইনসুলিন। ওষুধ বা ইনসুলিন ব্যবহারের পর ঠিক করে খাওয়া দাওয়া না করা কিংবা দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার পাশাপাশি অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণেই সুগার ফল হতে পারে।

দিনের যে কোনও সময়েই সুগার ফল হতে পারে। কিন্তু মূলত মাঝরাতে বা ভোরবেলায় এই সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসকের মতে, মাঝরাতে সুগার ফল অত্যন্ত বিপজ্জনক। এক্ষেত্রে প্রাণহানীর ভয় থাকে। মনোজিৎকেতন বাবুর কথায়, দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস থাকলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাই হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ প্রথমে বোঝা যায় না। ফলে কিছু ক্ষেত্রে সুগার ফল হওয়ার পরও রোগীর ঘুম ভাঙে না। সেক্ষেত্রে তার মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনির অসুখ থাকলে সুগার ফল সবচেয়ে বেশি হতে পারে। কেননা, কিডনির অসুখ থাকলে ডায়াবেটিসের ওষুধ কিংবা ইনসুলিন স্বাভাবিক মূত্রের সঙ্গে শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে না, ফলে সমস্যার সৃষ্টি হয়।

এই সমস্যার সমাধান হিসাবে, সুগার ফল হলে সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা চিনি খেয়ে নিন। তাতে সুগার লেভেল অনেকটাই বেড়ে যায়। ফের যাতে সুগার লেভেল নেমে না যায় তার জন্য ভাত, ডাল, রুটির মতো শর্করা জাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রাথমিকভাবে শরীর কিছুটা সুস্থ লাগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সুগার নেমে গিয়ে রোগী যদি জ্ঞান হারান কিংবা ঘুমাতে ঘুমাতে এই সমস্যা হলে চিনি খাওয়ানো সম্ভব হবেনা সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তর করা প্রয়োজন।

চিকিৎসক মনোজিৎকেতন মুখোপাধ্যায় বলছেন, নিয়মিত শরীর চর্চা এই রোগকে আটকাতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্যায়াম ও ওষুধ সেবনে সমতা রাখা দরকার। জিম করার আগে নিয়মিত সুগার চেক করান। কম থাকলে ব্যায়াম করার আগে রুটি কিংবা পাউরুটি খান, খালি পেটে থাকা চলবে না। সকালে প্রাতঃভ্রমনের আগে দুটো বিস্কুট খেয়ে নিন সঙ্গে গ্লুকোজ নিয়ে যান। আবার বহু রোগীর ভোরের দিকে সুগার ফল হয়, তিনি বুঝতেও পারেন না। সেক্ষেত্রে সুগার টেস্ট করা জরুরি, ফল খারাপ হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 4 =