কলকাতা: করোনা কাটিয়ে উঠলেও রেহাই নেই। শরীরে বাসা বাঁধছে ক্ষয়রোগ বা যক্ষ্মা। করোনা আক্রমণের ফলে কমছে রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এই নিয়ে একাধিক চিকিৎসক আগেই সতর্কতা দিয়েছিলেন। এবার রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন করোনা মুক্তির পর যক্ষ্মা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করল৷ রাজ্যের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক৷ রাজ্যের সমস্ত সরকারি-বেসরকারি কোভিড হাসপাতাল ও ল্যাবরেটরিগুলিকে এই মর্মে নোটিশ পাঠিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায় সাফ জানানো হয়েছে, এখন থেকে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর ৭ থেকে ২১ দিনের মধ্যে যক্ষ্মা পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক। তবে এই পরীক্ষা করতে কোনও বাড়তি খরচ হবে না, সরকারি ব্যবস্থায় বিনামূল্যে করানো যাবে যক্ষ্মা পরীক্ষা। স্বাস্থ্য ভবন তরফে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত করোনা মুক্ত হওয়ার পর অন্তত ১৩২ জন রোগীর দেহে যক্ষ্মা সংক্রমণ মিলেছে। পাশাপাশি প্রায় ২ হাজার মানুষের শরীরে যক্ষ্মার লক্ষ্মণ দেখা গিয়েছে।
করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর যদি শুকনো কাশি কিংবা অল্প পরিশ্রমে ক্লান্তি ভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে টিবি পরীক্ষা করাতে হবে। চিকিৎসকদের মতে, করোনা ও যক্ষ্মা একসঙ্গে হলে লক্ষ্মণ দেখে যক্ষ্মাকে চিহ্নিত করা প্রায় অসম্ভব। তাই অনেকের করোনা সেরে গেলেও যক্ষ্মা থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যক্ষ্মা চিহ্নিত করার জন্য পরীক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। ৭ থেকে ১০ দিন পর আক্রান্তের শরীর থেকে করোনা ভাইরাসের বিদায় ঘটলেও যক্ষ্মার চিহ্ন থেকে যাচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন জানিয়েছে, বিশেষ করে বস্তিবাসী ও ইটভাটার শ্রমিকদের মধ্যে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। সেক্ষেত্রে ট্রু-ন্যাট বা সিভি ন্যাট পরীক্ষার মাধ্যমে কফ-থুথু পরীক্ষা করা সহজসাধ্য। তাই স্বাস্থ্য দফতর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতি ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যক্ষ্মা পরীক্ষা করা যাবে।