নয়াদিল্লি: দেশের প্রত্যেক নাগরিক পাবেন না করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক, সাফ জানিয়ে দিল কেন্দ্র। মোট জনসংখ্যার শুধুমাত্র ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষকেই দেওয়া হবে করোনার টিকা। শুক্রবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. হর্ষ বর্ধন এই নিয়ে জানিয়েছেন, “করোনা ভাইরাসের যা চরিত্র সেই অনুযায়ী দেশের প্রত্যেক নাগরিককে টিকা দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। মাত্র ৬০-৭০ শতাংশ মানুষের শরীরে ভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি করে দিতে পারলেই রুখে দেওয়া যাবে সংক্রমণ।”
গত ১৫ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে শুরু হওয়া টিকাকরণের প্রথম দফায় ৩০ কোটি মানুষকে আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্র। দ্বিতীয় দফায় দেশের প্রত্যেকটা নাগরিককে টিকাকরণের আওতায় আনা যায় কিনা সে বিষয়ে কয়েকদিন আগেই লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন এনসিপি সংসদ সুপ্রিয়া সুলে। সেই কথার উত্তরে শুক্রবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, “করোনা ভাইরাসের চরিত্র অনুযায়ী দেশের প্রত্যেক নাগরিককে প্রতিশেধক দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। ৬০-৭০ শতাংশ নাগরিকের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে দিতে পারলেই সংক্রমণ রোখা যাবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী প্রথমসারির স্বাস্থ্যকর্মী, প্রবীণ নাগরিক ও ক্রনিক রোগাক্রান্ত ৪৫-৫৯ বয়সী নাগরিকদের প্রতিশেধক দেওয়া হয়েছে প্রথম ধাপে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও কম বয়সীদের প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ জানিয়েছিল, শুধুমাত্র গত ডিসেম্বর মাসেই গোটা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৮ কোটি। কিন্তু সরকারের খাতায় মাত্র ১ কোটি আক্রান্তের হিসেব ছিল। বাকি ২৭ কোটি আক্রান্তের হিসেবে না পাওয়ায় কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়ে প্রথম ধাপে ৩০ কোটি মানুষকে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।” দ্বিতীয় দফায় আরও কম বয়সীদের প্রতিষেধক দেওয়ার কথা ভাবনা চিন্তা করলেও ১৪ বছরের কম বয়সীদের এখনই টিকাকরণের কথা ভাবছে না কেন্দ্র। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মতে, গবেষণায় দেখা গিয়েছে ০-১৪ বয়সীদের করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে কম হয়েছে। কিংবা সংক্রমণ হলে তাদের অধিকাংশের শরীরে সংক্রমনের কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। তাই শিশুদের টিকাকরণের বিষয়ে এখনও কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের।