নয়াদিল্লি: অতিমারি আবহে দেড় বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত। সময়ের সাথে সাথে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা। প্রতিরোধের একমাত্র চাবিকাঠি হল ভ্যাকসিন। তৃতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতা রুখতে দেশ জুড়ে জোর কদমে চলছে ভ্যাক্সিনেশন।
করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমানো ও ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রাখতে বেশ কিছু পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী? প্রথমত, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে নির্দিষ্ট ওই স্থানে চাপ না দেওয়া। ব্যাথানাশক ওষুধ এড়িয়ে চলা। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর নির্দিষ্ট ওই স্থানটিকে না ঘষা বা রাব না করার পরামর্শও দেন চিকিৎসকরা।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অনেকেই ভুলবশত ইনজেকশন দেওয়ার জায়গাটিকে ঘষে ফেলেন। কিন্তু, চিকিৎসকেরা বারবার সেই ভুল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, ভ্যাকসিন নেওয়ার জায়গায় ফোলাভাব, ব্যাথা অনুভব বা জ্বালা করা। কিন্তু সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ওই জায়গায় ম্যাসাজ করা আরামদায়ক মনে হলেও বিশেষজ্ঞরা টিকা দিয়ে এটি করার বিরুদ্ধে পরামর্শ দেন। কিন্তু কেন এই পরামর্শ?
কারণ হিসেবে মনে করা হয়, কোভিড ভ্যাকসিন ইন্ট্রামাসকুলার রুটে দেওয়া হয়। ফলে ইনজেকশন সাইটে ঘষা, চিমটি বা ম্যাসাজ করা হলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতায় তা হস্তক্ষেপ করতে পারে। ভ্যাকসিনগুলি খুব সূক্ষ্মভাবে বাহুতে দেওয়া হয়, তাই এই ধরনের পদক্ষেপ বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ভ্যাকসিনের পাল্টা শোষণ এড়াতেই এই পরামর্শ।
ভ্যাকসিনেটরদের পরামর্শ , টিকা দেওয়ার পর অবিলম্বে বা কয়েক ঘন্টা পরও ইনজেকশন সাইটে ঘষা বা ম্যাসাজ করা এড়ানো উচিত। টিকা নেওয়ার পর হাত ফুলে গেলে বা ব্যথা হলে চিন্তার কিছু নেই। এটিকে কোভিড আর্ম বলা হয়। ব্যথা কমাতে পেনকিলার না খেয়ে ব্যাথা নিজে থেকে কমতে দেওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। তবে আরাম পেতে বরফ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কেন হয় ব্যাথা? বিশেষজ্ঞদের কথায়- ভ্যাকসিন যে শরীরে কাজ করছে তার প্রমাণ বলা যেতে পারে এই ব্যাথার লক্ষণ।
ভ্যাকসিনের কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনুভব করার অর্থ হ’ল, শরীরে অনাক্রম্যতা কাজ করছে। ভ্যাকসিন ভাইরাসের একটি অনুকরণ এবং তাই এটি যখন শরীরে প্রবেশ করে তখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তার প্রতিক্রিয়া দেখায়। শরীরকে তা প্যাথোজেন থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। যেহেতু কোভিড ভ্যাকসিনগুলি ইনট্রামাসকুলার রুট অর্থাৎ সরাসরি পেশীতে দেওয়া হয়। ভ্যাকসিন শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে ব্যথা অনুভূত হয়।
অনেক সময় চিকিৎসক বা ভ্যাকসিনেটররা ত্বকে টিকা দেওয়ার আগে আলতো করে ম্যাসাজ করে থাকেন। এর অন্যতম কারণ হল- এক প্রকার ক্লিনিকাল অনুশীলন, যা হাতের পেশীগুলিকে নরম ও শিথিল করতে সাহায্য করে। যা শরীরে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে সহায়তা করে। তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ধরনের অনুশীলন নির্দিষ্ট ধরণের ভ্যাকসিন শোষণে বিলম্ব করতে পারে। তবে, কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার পর আরও কয়েকটি বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন- টিকা নেওয়ার পর সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ১-২ দিন অন্তত বিশ্রাম প্রয়োজন। কারণ, ভ্যাকসিন নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সেজন্য টিকা নেওয়ার পর কমপক্ষে দুদিন নিজের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন।