কলকাতা: একটি অভিযোগের শুনানিতে আজ বড় নির্দেশ দিয়ে দিল স্বাস্থ্য কমিশন। রাজ্যের সব বেসরকারি হাসপাতালকে চিকিৎসায় নগদে বিল মেটানোর ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে। বিমা ছাড়া নগদ বিলে ছাড় দিতে বলে জানান হয়েছে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ, কোনও অজুহাত দেখানো যাবে না রোগীকে এই ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে। তবে কী ভাবে এই ছাড় দেবে বেসরকারি হাসপাতালগুলি তা তাদের হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে তাড়াতাড়ি। কোনও মামলার ভিত্তিতে এই নির্দেশ?
আরও পড়ুন- লালগড়ে বাঘাতঙ্ক! পর পর ৫ দিন মিলল খুবলানো পশুর দেহ
অসমের শিলচরের বাসিন্দা দেবযানী মণ্ডল নামের এক মহিলা শারীরিক সমস্যা নিয়ে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তার চিকিৎসায় হাসপাতাল বিল করে ১৪ লক্ষ টাকা, যার মধ্যে ৩ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেয় বিমা সংস্থা। কিন্তু মহিলার পরিবারের অভিযোগ ছিল যে, হাসপাতাল অনেক বেশি বিল বানিয়েছে ইচ্ছা করে। এই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য কমিশনে মামলা করেন দেবযানীর মেয়ে অন্বেষা। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই আজ এমন নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন। কিন্তু এই মামলার শুনানিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শুনিয়েছে অন্য কথা। বিল কেন বেশি হচ্ছে সেই ব্যাপারে যুক্তি দিয়েছে তারা। যদিও সেই বক্তব্য মানতে চায়নি কমিশন।
হাসপাতালের যুক্তি, বিলের জন্য একটি নির্দিষ্ট সফটওয়্যার রয়েছে। বিমার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। বিমার হারেই অন্য সব ক্ষেত্রে খরচ ধরা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য কমিশনের স্পষ্ট কথা যে, ওই পদ্ধতি সঠিক নয়। বিমা ছাড়া বিল করলে সেখানে বাধ্যতামূলকভাবে ছাড় দিতেই হবে। এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য কমিশন আরও জানিয়েছে, প্রয়োজনে সফটওয়্যার বদলাতে হবে বা হাতে লেখা বিল দিতে হবে। কিন্তু বিলে ছাড় দিতেই হবে রোগীকে। কিন্তু বলে কী ভাবে ছাড় দেওয়া হবে তা জানাতে হাসপাতালগুলিকে এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে তাদের সব। তাতে উল্লেখ করতে হবে কোথায়, কত, কী ভাবে খরচ ধরা হয়েছে।
এমনিতে শহর তথা রাজ্যের একাধিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভিন্ন ভিন্ন সময় অভিযোগ আসে যে তারা বিল অনেক বেশি করে দেয়। ন্যুনতম চিকিৎসাতে অনেক বেশি টাকা বিল ধরার ঘটনা একাধিক বার সামনে এসেছে। অনেক সময় আবার সেই ইস্যুতে হাসপাতাল ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটেছে। তাই এই একটি মামলার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য কমিশনের নির্দেশ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে হয়।