আর নয়, প্রজাপতির পাখনার মতো আর ঝরে পড়ে না ত্বক, মিলল শিশুদের বিরল রোগের দাওয়াই

আর নয়, প্রজাপতির পাখনার মতো আর ঝরে পড়ে না ত্বক, মিলল শিশুদের বিরল রোগের দাওয়াই

bbeb5f65b45f0a0fae973bfef97ecf80

কলকাতা:  অনেক সময় দেখা যায় ফোস্কা পড়ার পর পাপড়ির মতো ঝরে পড়ে ত্বকের নানা অংশ। এই দুরারোগ্য চর্মরোগ বেশিরভাগ সময় শিশুদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়৷ এবার এই রোগেরও সমাধান মিলল৷ জেলি বা আঠার মতো বিশেষ ভাবে তৈরি একটি ‘জেল’ লাগালে এই রোগ থেকে মুক্তি মিলতে পারে৷ 

আরও পড়ুন- করোনা মুক্তির পরও থাকছে হৃদরোগের আশঙ্কা! বিস্ফোরক দাবি মার্কিন গবেষণায়

এই বিশেষ জেলটি তৈরি করেছেন আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা৷ এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার মেডিসিন’-এ। 

কী ভাবে হয় এই রোগ? 

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মূলত জিনগত কারণে শিশুদের মধ্যে এই রোগ বাসা বাঁধে৷ এতে শিশুদের হাতে, পায়ে, এবং গায়ে যে যে জায়গায় ফোস্কা পড়ে, সেই অংশটিতে জ্বালাপোড়া শুরু হয়৷ তার পর প্রজাপতির পাখনার মতো স্পর্শ করলেই সেই অংশগুলি খসে পড়ে৷ তাই এই অসুখকে ‘বাটারফ্লাই চিলড্রেন ডিজিজ’-ও বলা হয়ে থাকে৷ 

তবে এতদিন এই রোগ নির্মূল করার কোনও ওষুধ বাজারে পাওয়া যেত না৷ ছিল না নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি৷ ছোটদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ মৃদু থাকলে, তা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজে থেকেই কমে যায়৷  তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই রোগ সারানো যায় না। এভং ধীরে ধীরে তা মৃত্যুর কারণও হয়ে উঠতে পারে৷ বাটারফ্লাই চিলড্রেন ডিজিজ-এর চিকিৎসায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্টেম সেলের ব্যবহার হয়৷ কিন্তু, এর জন্য ত্বকের যে গ্র্যাফটিং করাতে হয়, তা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের আবিষ্কৃত এই জেল শুধু যে চিকিৎসার খরচ কমালো তা নয়৷ চিকিৎসাপদ্ধতিকেও সরলতর করে তুলল৷ এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

এই জেল-এর মাধ্যমে আক্রান্ত শিশুর শরীরে একটি জিন ঢুকিয়ে দেওয়া হবে৷ সেই জিনটি আক্রান্ত শিশুর শরীরে থাকা আর একটি জিনকে জাগিয়ে তুলবে। উল্লেখ্য, আক্রান্ত শিশুর শরীরে সেই জিনটিই ‘সি-৭’ নামের একটি ‘কোলাজেন’ তৈরি করে। যার মধ্যে বিশেষ একটি প্রোটিনের অভাব থাকে বলেই শিশুদের মধ্যে এই রোগ বাসা বাঁধে। এই কোলেজেন আবার ত্বকের বাইরের স্তরের কোষগুলির গঠনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোলাজেনের মধ্যে যে বিশেষ প্রোটিনের অভাবে শিশুরা এই দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়, এই জেল-এর মাধ্যমে তাদের শরীরে আরেকটি জিন ঢুকিয়ে সেই প্রোটিনের অভাব পূরণ করা হবে।