বারাসত: গোবরডাঙ্গা রূপান্তর, ৫০বছর ধরে পথ চলা একটি নাট্য সংস্থা। ২৫ ডিসেম্বর ২০২২, ৫০ বর্ষে পদার্পণ করল তারা। মঞ্চ নাটক, পথনাটক, নাট্যালোচনা সভা, নাট্যকর্মশালা, নাট্যোৎসব, নাট্য বিষয়ক পুস্তক প্রকাশ, বঙ্গে- বহির্বঙ্গে রূপান্তর প্রযোজিত নাটকের মঞ্চায়ন প্রভৃতি রূপান্তরের এই দীর্ঘ পথ চলার অঙ্গ। পাশাপাশি তারা নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে।
দীর্ঘ নাট্যচর্চার ৫০ তম বর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে রূপান্তর ৪ দিনব্যাপী এক মহতী নাট্যউৎসবের আয়োজন করে। রূপান্তর নাট্যোৎসব ‘২৩। ২২ ডিসেম্বর সকালে বিরাট এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে যার সূচনা হয়।
২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় গোবরডাঙার পৌর টাউন হলে মঙ্গলদীপ প্রোজ্জ্বলন করে সংস্থার সুবর্ণজয়ন্তীবর্ষে আয়োজিত ২৩তম বার্ষিক রূপান্তর নাট্য উৎসবের উদ্বোধন করেন গোবরডাঙার পৌরপ্রধান শংকর দত্ত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক কিংশুক রায়, গ্রুপ থিয়েটার পত্রিকার সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও নাট্য প্রাবন্ধিক রঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায়, ছিলেন গোবরডাঙা থানার ওসি অসীম পাল, স্থানীয় কাউন্সিলর বাসুদেব কুন্ডু, রূপান্তর নাট্যসংস্থার প্রতিষ্ঠাকালের সম্পাদক বর্ষিয়ান বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, নাট্যমোদী শ্যামল দত্ত প্রমুখ। সংস্থার সভাপতি শশাঙ্ক শেখর দত্ত সকলকে স্বাগত জানান। সংস্থার সম্পাদক বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা অভি দাঁ-র সঞ্চালনায় এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বেশ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
নাট্যোৎসবের শুরুতে এদিন সন্ধ্যায় রূপান্তরের নৃত্যবিভাগে নৃত্যশিল্পীদের উদ্বোধনী নৃত্য এবং মহিষাদল সমকাল প্রযোজিত ‘পড়শি বসতি করে’ এবং সালকিয়া সৃষ্টি নাট্যদল মঞ্চস্থ করে মঞ্চসফল নাটক ‘দন্ডপানীর দন্ড’। সবশেষে আয়োজক সংস্থা রূপান্তর প্রযোজিত এবং বিশিষ্ট নাট্য পরিচালক প্রতাপ সেনের নির্দেশনায় ছোটদের ‘সোনালী ভোরের স্বপ্ন’ সমবেত দর্শক সাধারণের প্রশংসা লাভ করে। এবারের নাট্যউৎসবে মোট নয়খানি নাটক মঞ্চস্থ হয়। যথাক্রমে ২৩ ডিসেম্বর রূপান্তর প্রযোজিত পূর্ণাঙ্গ নাটক ‘কণিষ্ক’, অভিযাত্রী প্রযোজিত নাটক ‘ভুত ভগবান’। ২৪ ডিসেম্বর কাকদ্বীপ নোনা থিয়েটার প্রযোজিত নাটক ‘স্বাধীনতার গল্পগাছা’, রূপান্তর প্রযোজিত ‘আমি আগন্তুক’, ফিনিক প্রযোজিত নাটক ‘বন্ধনহীন গ্রন্থি’। ২৫ ডিসেম্বর উৎসবের শেষদিনে পরিবেশিত হয় রঙ্গলোক প্রযোজিত নাটক ‘শেকল ছেঁড়া হাতের খোঁজে’। এছাড়াও ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর সকাল ১১টা রূপান্তর আয়োজন করেছিল বিদ্যালয় নাট্যোৎসবের। মোট ৬টি বিদ্যালয় যাতে অংশগ্রহণ করে।
রূপান্তর নাট্যোৎসবের চারদিনই এলাকার নাট্যমোদী দর্শক সমাগমে প্রেক্ষাগৃহ ছিল পূর্ণ। তাদের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি চোখে পড়ে।