কলকাতা: দরজায় কড়া নাড়ছে শীত৷ জাঁকিয়ে ঠাণ্ডা পরার আগে হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গির দাপট৷ এই সময় ভালো থাকতে হলে বাঁচতে হবে মশার কামড় থেকে৷ মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস শহরাঞ্চলের মানুষদের নেই বললেই চলে৷ যার জেরে মশাবাহিত ডেঙ্গিও দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই জ্বর হলে ফেলে রাখা নয়। তবে সাধারণ জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গির খুব একটা পার্থক্য নেই৷ সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই জ্বর হলে, মাথাব্যথা-সহ শরীর জুড়ে ব্যথা থাকছে। ডেঙ্গিও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। তবে অনেকেই সাধারণ জ্বর হলে গা-হাত-পা ব্যথা উপশমে আইব্রুফেন বা অ্যাসপিরিন জাতীয় ব্যথার ওষুধ খেয়া থাকেন। ডেঙ্গি মাথাচাড়া দিলে কিন্তু এই ধরনের ওষুধ খাওয়া একবারে উচিত নয়৷ ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার হলে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক হতে পারে। ডেঙ্গির জ্বরের সাধারণ উপসর্গগুলি কী কী?
আরও পড়ুন- কী কী উপসর্গ দেখলে ডেঙ্গি রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করবেন? কী বলছেন চিকিৎসকরা?
১) জ্বর, মাথাযন্ত্রণা, সারা শরীরে ব্যথা। চোখের পিছনে ব্যথা শুরু হওয়া৷
২) বমি বমি ভাব, মুখে অরুচি। সঙ্গে গাঁটে ব্যথা।
৩) গায়ে র্যাুশ, চুলকানি ও ডায়েরিয়া।
৪) নাক, মাড়ি কিংবা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া৷
৫) গলায় ব্যথা, ঢোক গিলতে কষ্ট।
এই উপসর্গগুলি দেখা দিলেই দ্রুত ব়্যাপিড টেস্টের মাধ্যমে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিন। কারণ জ্বর দেখে কখনই বোঝা যায় না তা ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড না করোনা৷ তাই শুরুতেই ব্লাড কাউন্ট-সহ প্রাথমিক রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। ভয়ঙ্কর বাড়াবাড়ি না হলে বাড়িতে রেখেই ডেঙ্গি রোগীর চিকিৎসা করানো যেতে পারে। প্রয়োজন শুঘু বাড়তি সতর্কতার।
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে কী করবেন আর কী করবেন না?
১) ডেঙ্গি হলে শরীরে জলের পরিমাণ কমে যায়৷ তাই জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে জল ও তরল খাবার খেতে হবে। যেমন শরবত, ফলের রস, পাতলা ঝোল, ডাল, স্যুপ, লিকার চা ইত্যাদি ডায়েটে রাখলে ভালো৷
২) প্রতি ৩ ঘণ্টা অন্তর থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মাপতে হবে। ডেঙ্গি হলে রক্তচাপ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই নিয়মিত রক্তচাপও মাপতে হবে। জ্বর হলে ঘরোয়া চিকিৎসা ন৷ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাবেন না।
৩) শরীরে ডেঙ্গি থাবা বসালে রক্তে প্লাজমা ও অণুচক্রিকার মাত্রা কমে যায়। সেই সময় ডায়েটে বেশি করে মরসুমি ফল, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল ও শাক-সব্জি রাখতে হবে।
৪) কোভিডের মতো ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীও নিভৃতবাসে থাকা জরুরি। সেই সঙ্গে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, সেদিকে ভাল করে নজর রাখতে হবে।
৫) ডেঙ্গি শক সিনড্রোমের ফলে শরীরে জলশূন্যতা তৈরি হয়। একলাফে পাল্স রেট অনেকটা বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ কমে যায়। শরীর ঠান্ডা হতে থাকে৷ দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস চলতে থাকে। রোগীর মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়৷ এমনটা হলে আর বাড়িতে ফেলে রেখে সময় নষ্ট নয়৷ দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>