অভিনেত্রী সিমির সঙ্গে শশী কাপুরের নগ্নদৃশ্য ফাঁস হওয়ায় পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের অভিনেত্রীর!

অভিনেত্রী সিমির সঙ্গে শশী কাপুরের নগ্নদৃশ্য ফাঁস হওয়ায় পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের অভিনেত্রীর!

সিনে জগতে কী ঘটছে, তা জানতে মুখিয়ে থাকেন সিনে প্রেমিরা। কোন নায়িকার সঙ্গে কোন নায়কের প্রেম চলছে? কার ঘর ভাঙলো? কোন নায়ক নতুন সম্পর্কে জড়ালেন? এরকম ভাতের হাড়ির খবর পেতে মুখিয়ে থাকেন অনেকেই। সেরকমই আজ দুটি বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরব। যা এতদিন ছিল অন্তরালে। ৭০ দশকের অভিনেত্রী সিমি গাড়েওয়াল কে মনে আছে? যিনি খোলামেলা পোশাকে সেই সময় ঝড় তুলেছিলেন সিনে দুনিয়ায়। শশী কাপুরের সঙ্গে তার নগ্ন ছবি ফাঁস হতেই রেগে ফায়ার হয়ে যান অভিনেত্রী। কিন্তু কেন? জানাবেন আজকের প্রতিবেদনে। আরও একটি তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরব। সেটি হল পত্রিকায় তামিল অভিনেতার গোপন তথ্য ফাঁস করায় খুন হতে হয়েছিল সাংবাদিক লক্ষীকান্থনকে। কোন তথ্য ফাঁস হওয়ার জন্য এই করুন পরিণতি হয়েছিল তাঁর? জানতে চোখ রাখুন প্রতিবেদনের শেষ পর্যন্ত।

বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় সিনেমাতে বিকিনি পড়ে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সিমি গারেওয়ালকে। যা সে সময় ছিল একেবারে অকল্পনীয়। সিমি এবং শশী কাপুড় একটি সিনেমাতে প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থায় শুট করেছিলেন আর সেই কথা ফাঁস হয়েছিল তৎকালীন এক পত্রিকায়। যা দেখে চোটে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী। কী এমন ছিল সেই সিনেমায় যা ফাঁস হতেই চোটে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী? সেই তথ্যই আজ আপনাদের জানাবো।

সিমিমা নির্মাতা যশ চোপড়ার স্ত্রী পামেলার খুড়তোত বোন হন সিমি। আর সেই সূত্রেই বলিপাড়ায় পদার্পণ কিন্তু অভিনয়ের নামার মুহূর্ত থেকে বিতর্কও তার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। দিল্লিতে জন্ম হয় সিমির। বাবা ছিলেন ভারতীয় সেনায় নিযুক্ত। তবে দিল্লিতে জন্ম হলেও তিনি বড় হয়েছিলেন ইংল্যান্ডে। সেখানেই পড়াশোনা যদিও পড়াশোনা শেষ করে ভারতেই ফিরে আসেন। দীর্ঘদিন ইংল্যান্ডে থাকার সুবাদে সিমির ইংরেজি ভাষার প্রতি একটা দারুন দক্ষতা চলে আসে। আর সেই সুবাদেই বলিউডে ডাক পরে তার। 

একের পর এক হিন্দি সিনেমায় দেখা যায় তাঁকে। ‘টারজান গোজ টু ইন্ডিয়া’ ছবিতে ফিরোজ খানের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায়। আর সেই সিনেমাতেই তাকে বিকিনি পড়ে দেখা গিয়েছিল। ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমায় খোলামেলা পোশাক পরায় সমালোচনা করতে হয়েছিল অভিনেত্রীকে। এরপর ১৯৭০ সালে মুক্তি পায় ‘মেরা নাম জোকার’। সেই ছবিতেও তাকে দেখা গিয়েছিল খোলামেলা পোশাকে, বিকিনি পড়ে। জানা যায় এই সিনেমাতে নাকি সবার সামনেই সিমিকে বিবস্ত্র করা হয়েছিল। আর একথা অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছিলেন একটি সাক্ষাৎকারে। 

৭০ থেকে ৮০ দশকে যে সমস্ত অভিনেত্রীরা চুটিয়ে অভিনয় করেছিলেন, তাদের মধ্যে ‘সাহসী’ তকমা লেগেছিল একমাত্র সিমির নামের সঙ্গেই। কারণ অভিনেত্রী যতটা খোলামেলা ততটাই ছিলেন অভিনয়ে পারদর্শী। সিমির জীবনে আসল মোড় আসে ১৯৭২ সালে। সেই সময় মুক্তি পেয়েছিল ‘সিদ্ধার্থ’ নামে একটি সিনেমা। যা প্রথম দেখানো হয় আমেরিকার একটি চলচ্চিত্রে। এই সিনেমায় শশী কাপুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের অভিনয় করেছিলেন সিমি। যা অবশ্য আমাদের দেশে দেখানো হয়নি। সিমির অন্তরঙ্গের দৃশ্য গুলি কাটছাঁট করে এদেশে দেখানো হয়েছিল। যা ধরতেও পারেননি এদেশে আপামোর দর্শককুল। তবে শশী কাপুরের সঙ্গে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করার এই গোপন তথ্যটি ফাঁস করে দিয়েছিল একটি পত্রিকা। আর তাতেই বেজায় চটে যান অভিনেত্রী। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছিলেন সিমি। কারণ এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পর তাকে পড়তে হয়েছিল তুমুল বিতর্কে। সমালোচনার শিকারও হন অভিনেত্রী। তবে পরবর্তীকালে অবশ্য মামলা তুলে নেন অভিনেত্রী।

এ তো গেল সত্তোরের দশকে সিমি গারেওয়ালের সংবাদপত্রে গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার কথা। যা পরবর্তীতে মিটমাট হয়ে যায়। কিন্তু শুনলে হয়তো অবাক হবেন চল্লিশের দশকে একটি সংবাদপত্র এক অভিনেতার গোপন তথ্য ফাঁস করায় তার যা করুণ পরিণতি হয়েছিল তা শুনলে আজও হার হিম হয়ে যায়। সাংবাদিককে খুন করা হয়েছিল। হাড় হিম করা এই ঘটনা হয়তো অনেকের কাছেই অজানা। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক কেন সাংবাদিককে খুন করা হয়েছিল? কী এমন তথ্য ফাঁস করেছিলেন অভিনেতার বিরুদ্ধে, যার জন্য তার এই করুন পরিণতি হয়। 

আজ থেকে ৭৯ বছর আগের কথা। তখনও দেশ স্বাধীন হয়নি। সে সময় তামিল ছবিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন অভিনেতা এম কে ত্যাগরাজ ভগবাতর। যিনি এম কে টি নামে পরিচিত। এদিকে মাদ্রাজ অর্থাৎ বর্তমানে চেন্নাইয়ে চলচ্চিত্র সাংবাদিক হিসেবে পথ চলা শুরু করেন সিএন লক্ষ্মীকান্থন। 1943 সালে তার হাত ধরেই শুরু হয়েছিল সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘সিনেমা থুটু’র যাত্রা। এই পত্রিকায় ব্যতীত তামিল ছবির দুনিয়ায় নায়ক নায়িকাদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা কথা যা সিনেমা দুনিয়ায় ঝড় তুলেছিল এমকেটিকে নিয়েও নানানগর লেখা হতো এই পত্রিকায় যা মোটেও ভালো চোখে দেখেননি অভিনেতা বিখ্যাত কৌতুক অভিনেতা অভিনেতার মুচমুচে খবরও প্রকাশ হয়েছিল ওই পত্রিকায়। লক্ষীকান্তকে থামাতে এম কে টি সহ বাকি অভিনেতারা অনেক রকম প্রচেষ্টা চালায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ‘সিনেমা থিটু’ পত্রিকা। কিন্তু তাতে থেমে থাকেননি লক্ষীকান্থন। হিন্দি nation নামে আরও একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন তিনি সেখানে এম কে টি সহ তামিল ছবির বিভিন্ন অভিনেতাদের কিসসা প্রকাশ করেন তিনি।

যামু তো ভালোভাবে নেন নি আমি অভিনেতা এমকেটি। লক্ষ্মী কণ্ঠনের উপর হামলা চালায়। রুপসা করে বাড়ি ফিরছিলেন লক্ষীকান্ত সেই সময় একদল দুষ্কৃতী চড়াও হয় লক্ষীকান্তের উপর ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপ মারা হয় তাকে এই অবস্থাতেই বাড়ি ফিরে যান লক্ষীকান্ত সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে হাসপাতালে যাওয়ার পথে বর্ণনা দেন লক্ষীকান্ত তারপর রিক্সাওয়ালাকে তিনি থানায় অভিযোগ দায়েরের জন্য জানান হাসপাতালে পরের দিনই মৃত্যু হয় লক্ষীকান্তের 50 বছর বয়সে চলে যেতে হয়।

যদিও পরবর্তীতে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল ৬ জনকে। তাদের মধ্যে অন্যতম এমকেটি, কৃষাণ এবং পরিচালক এস এম শ্রীরামালু নাইডু। নাইডু বেকসুর খালাস পেলেও এম কে টি এবং কৃষাণ দোষী সাব্যস্ত হন। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তারা জেলবন্দী হয়েছিলেন। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে গ্রেফতারের ঘটনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এমকেটি। 1959 সালে তার মৃত্যু হয়। মুক্তি পাওয়ার পর অভিনয় জগতে ফিরে আসেন কিষান। তার অভিনয় সফলতাও লাভ করে। তবে লক্ষীকান্তনকে খুনের রহস্য কিন্তু আজও ভেদ হয়নি। কারা তাকে আসলে খুন করল? কেনই বা খুন করা হয়েছিল? তার কিনারা আজও হয়নি। আসল দোষীরা থেকে গিয়েছেন অন্ধকারেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + 19 =