নয়াদিল্লি: চিনের পর এবার ইউরোপিয় ইউনিয়ন৷ ভারতের দ্বিতীয় সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দিলেন ইউরোপিয় ইউনিয়নের মুখপাত্র মজ কোকিজ্যান্সিক৷ এদিন তিনি জানিয়ে দেন, ভারত-পাকিস্তান নিয়ে উদ্বূত পরিস্থিতির উপর আমরা নজর রাখছি৷ আমরা উভয় দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি৷ আমাদের আর্জি, বিশ্ব শান্তির কথা ভেবে সর্বাধিকভাবে সংযম থাকা জরুরি৷
অন্যদিকে, জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি ধ্বংসের পরে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রথম প্রতিক্রিয়া জানাল চিন৷ ভারত ও পাকিস্তানকে বার্তা পাঠিয়ে চিন সরকারের দাবি, দুই দেশের কাছে সংযত হওয়ার প্রয়োজন৷ কিন্তু, ভারত হঠাৎ কেন সংযত হওয়ার বার্তা পাঠাল চিনা সরকার?
Maja Kocijancic, European Union Spokesperson: We’re following very closely the current developments between India & Pakistan. We remain in contact with both countries & what we believe is essential, is that all exercise maximum restraint and avoid further escalation of tensions. pic.twitter.com/C4BTaDg5wJ
— ANI (@ANI) February 26, 2019
পর্যবেক্ষক মহলের ধারনা, জইশ ই মহম্মদের প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণার বিরোধিতা করে এসেছিল৷ মনে করা হচ্ছে, জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটিতে ভারতে অভিযান শুরু হতেই আঁতে ঘা লেগেছে চিনের৷ মঙ্গলবার চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং বলেছেন, ‘‘আমরা আশা করি, ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই সংযত হবে। ওই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা রক্ষা ও নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য পদক্ষেপ নেবে৷’’
মঙ্গলবার সাতসকালে পুলওয়ামা হামলার বদলা নেয় ভারত৷ পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ১২টি মিরাজ হামলা চালায়। পাক জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ১০০০ কেজি বোমাবর্ষণ করা হয় বলে সূত্রের খবর৷
জানা গিয়েছে, বালাকোট সেক্টর থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে পড়ে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলি। জয়েশ জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে লেজার গাইডেড হামলা করা হয়। এর ফলে লক্ষ্যবস্তুতে নিঁখুতভাবে হামলা চালানো সম্ভব। শোনা যাচ্ছে হামলার জেরে পাকিস্তানের দুটি যুদ্ধবিমানও ধ্বংস করা হয়েছে।
বায়ুসেনা সূত্রে খবর বালাকোট, চাকোতি এবং মুজফ্ফরাবাদে জয়েশ জঙ্গিদের তিনটি লঞ্চপ্যাড গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ১২টি যুদ্ধবিমান এই অভিযানে অংশ নেয়। সীমান্ত পেরিয়ে ৮০ কিমি ভিতরে ঢুকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালানো হয়। ধ্বংস করে দেওয়া হয় একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি। ঘটনায় প্রায় ২০০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অতর্কিত এই সফল অভিযান চালিয়ে ১২টি যুদ্ধবিমানই ভারতের আদমপুর বায়ুসেনাঘাঁটিতে ফিরে আসে। শোনা যাচ্ছে হামলার পরই পাকিস্তানের দিক লক্ষ্য করে মিসাইল প্রস্তুত রেখেছে ভারতীয় সেনা। আম্বালা, পাঠানকোট, হালওয়ারা বিমানঘাঁটিতে মিরাজ ২০০০, মিগ ২৯ এবং সুখোই ৩০-কে তৈরি রাখা হয়েছে। এছাড়া সমস্ত বায়ুসেনাঘাঁটিকে মিসাইল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বায়ুসেনা প্রধান। ঘটনার পরই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।