‘অভিনয় তোমার জন্য নয়, তুমি বরং চাষ করো!’ সবার সামনে সানিকে অপমান করেন মৌসুমী

‘অভিনয় তোমার জন্য নয়, তুমি বরং চাষ করো!’ সবার সামনে সানিকে অপমান করেন মৌসুমী

 কলকাতা: সত্তরের দশকে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে উপার্জনের ভিত্তিতে যে বলি নায়িকাদের নাম প্রথম সারিতে আসে, তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। এই বাঙালি অভিনেত্রী তাঁর অভিনয়ের জোরে খুব কম সময়ের মধ্যেই দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন৷ 

মৌসুমী ছিলেন খুব শান্ত স্বভাবের। কিন্তু রেগে গেলে, সেই মৌমুমীই হয়ে উঠতেন চণ্ডী৷ বলিউডের যত নামী অভিনেতাই হোক না কেন, কথা শোনাতে ছাড়তেন না তিনি। শোনা যায়, একটি হিন্দি ছবির সেটে ধর্মেন্দ্র- পুত্র সানি দেওলকেও নাকি সবার সামনে  কথা শুনিয়েছিলেন ‌মৌসুমী। ‌অভিনেত্রীর ধমক খেয়ে সানি নাকি একেবারে চুপ করে যান৷  

১৯৯০ সালে মুক্তি পায় রাজকুমার সন্তোষী পরিচালিত ছবি ‘ঘায়েল’। এই ছবির প্রযোজক ছিলেন ধর্মেন্দ্র। হিন্দি সিনেমার জগতের বহু তারকাখচিত ছবিগুলির মধ্যে ‘ঘায়েল’ ছিল অন্যতম। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সানি দেওল৷ এছাড়াও ছিলেন রাজ বব্বর, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, অমরিশ পুরী, ওম পুরীর মতো তারকারা৷ বলিপাড়ার কানাঘুষো শোনা যায়, মৌসুমী নাকি এই ছবিতে অভিনয় করতে রাজি ছিলেন না৷ কারণ, সেই সময় তিনি অভিনয় করা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন৷ কিন্তু ধর্মেন্দ্র নিজে তাঁকে বার বার অনুরোধ করায়, কাজ করতে রাজি হন অভিনেত্রী। এই ছবিতে রাজ বব্বরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ‌মৌসুমী।

সানি

মৌসুমী ছিলেন খুবই পেশাদার৷ অপেশাদার আচরণ বরদাস্ত ছিল না তাঁর। ঠিক সেই কারণেই সেটে সকলের বেশ করে কথা শুনিয়েছিলেন সানিকে।সকাল ৯টা নাগাদ সকলেই সেটে পৌঁছে যেতেন। মৌসুমীও শট দেওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিতেন৷ তিনি সময় মতো সেটে এলেও, কোনও দিন সঠিক সময়ে শুটিং শেষ করতে পারতেন না। এর নেপথ্যে ছিলেন সানি। প্রতি দিন সেটে দেরি করে আসতেন ধর্মেন্দ্র-পুত্র। কিন্তু, কেউ তাঁকে কিছু বলতেন না।

ছবির পরিচালক রাজকুমারের সঙ্গে সানির ভাল সম্পর্ক থাকায়, তিনিও কখনও কিছু বলতেন না অভিনেতাকে। সকলে চুপ থাকলেও মুখ বন্ধ করে এই অন্যায় সহ্য করতে পারেননি মৌসুমী। সানির জন্য হামেশাই তাঁকে অপেক্ষা করতে হত। কিন্তু, এক দিন সবকিছু মাত্রা ছাড়াল৷ ওই দিন সানি শুধু দেরি করেই পৌঁছননি, বরং সেটে পৌঁছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলতে থাকেন৷ দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করার পর ‌মৌসুমী সেটে উপস্থিত সকলের সামনেই সানিকে বকুনি দেন৷ বলেন, ‘‘তোমার তো অভিনয় করাই উচিত নয়। এখান থেকে পাট গুটিয়ে পঞ্জাব চলে যাও৷ সেখানে গিয়ে বরং চাষবাস করো। এখানে থেকে তোমার বাবার নাম খারাপ কোরো না।’’

সকলের সামনে ধমক খাওয়ার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না সানি। মৌসুমীর কাছে বকা খেয়েই সোজা ফ্লোরে চলে যান নায়ক। সেদিন নাকি সানির উপর রেগে গিয়ে আর শট দিতেই চাইছিলেন না মৌসুমী। সানি নিজে গিয়ে বহু বার ক্ষমা চাওয়ার পর রাগ ভাঙে তাঁর। তার পর শট দেন৷ ‘ঘায়েল’ মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিসে দারুণ ব্যবসা করে৷ আড়াই কোটির এই ছবির বক্স অফিস কালেকশন ছিল ২০ কোটি৷