জইশ জঙ্গি শিবিরে ছিল দেদার মস্তির ব্যবস্থা! ছিল আরও কত কী…

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক-২ এর জেরে গুঁড়িয়ে গিয়েছে বালাকোটের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের ট্রেনিং ক্যাম্প। নিহত হয়েছে অন্ততঃ ৩৫০ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জঙ্গি! তাদের সঙ্গে বেশ কিছু জঙ্গি প্রশিক্ষকও নিকেশ হয়েছে। সূত্রের খবর, জঙ্গি তৈরির এই কারখানায় এলাহি ব্যবস্থা ছিল প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জঙ্গিদের জন্য। পাকিস্তানের মনসোরা জেলার খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের একটি শহর বালাকোট। ছবির মত সাজানো শহরটি

জইশ জঙ্গি শিবিরে ছিল দেদার মস্তির ব্যবস্থা! ছিল আরও কত কী…

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক-২ এর জেরে গুঁড়িয়ে গিয়েছে বালাকোটের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের ট্রেনিং ক্যাম্প। নিহত হয়েছে অন্ততঃ ৩৫০ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জঙ্গি! তাদের সঙ্গে বেশ কিছু জঙ্গি প্রশিক্ষকও নিকেশ হয়েছে। সূত্রের খবর, জঙ্গি তৈরির এই কারখানায় এলাহি ব্যবস্থা ছিল প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জঙ্গিদের জন্য।

পাকিস্তানের মনসোরা জেলার খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের একটি শহর বালাকোট। ছবির মত সাজানো শহরটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ২০০৫ সালে ভূমিকম্পে। কুনহার নদীর ডান তীরে অবস্থিত এই শহরের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করতে ভিড় করেন পাকিস্তানিরা।

ট্রেনিং ক্যাম্পের খুঁটিনাটি

জনবসতি কম হওয়ায় এখানেই ঘাঁটি গেঁড়েছিল হিজবুল মুজাহিদিন। পরে এটাই হয়ে ওঠে মাসুদ আজাহারের জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান ঘাঁটি।

জইশের এই ক্যাম্পেই ধরে নিয়ে আসা হত সদ্য তরুণদের। তাদের মগজধোলাই করত খোদ মাসুদ। আত্মঘাতী হামলায় মারা গেলে বলিদান যে ব্যর্থ হবে না তাও বোঝানো হত “আঠারো বছর” বয়সীদের।

এই ডেরার দায়িত্বে ছিল বাঘাবাঘা জঙ্গি। দিনভর কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে জঙ্গি তৈরী করা হত তরুণ তুর্কিদের। অস্ত্র
চালনা, শত্রু দেশের উপর হামলা, বিপদে পড়লে কীভাবে নিজেকে শেষ করে দেওয়া যায় এসবই শিখতে হত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গিদের।

শত্রু দেশের প্রতি ঘৃণার আগুন জ্বালিয়ে রাখতে ক্যাম্পের সিঁড়িতে ভারত আমেরিকার মত দেশের জাতীয় পতাকা এঁকে রাখা হত। ক্যাম্পের একটি হলঘরে শোভা পেত জঙ্গি গোষ্ঠীর পতাকা।

অপারেশনে গিয়ে কীভাবে দিনের পর দিন না খেয়ে থাকা যায় সেই শিক্ষাও দেওয়া হত ক্যাম্পের শিক্ষার্থীদের। তবে প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে তরুণরা যাতে বিগড়ে না যায় সেজন্য খাওয়া দাওয়ার পাশাপশি তাদের মনোরঞ্জনের এলাহি ব্যবস্থাও থাকত ক্যাম্পে।

স্বাস্থ্য গঠনের জন্য ক্যাম্পে ছিল জিম এবং সুইমিং পুল। ক্যাম্পে থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারত একসঙ্গে ৬০০ জন। প্রশিক্ষণ শেষে তারা চলে গেলে ধরে আনা হত নতুন তরুণদের।

সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক-২ আগেরদিন পর্যন্ত সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল ২৫০-র কাছাকাছি হবু জঙ্গি। ক্যাম্পের একদিকে ছিল শিক্ষার্থীদের থাকা খাওয়ার জায়গা, অন্যদিকে ছিল অস্ত্র গোলাবারুদ মজুত রাখার জায়গা।

এই ক্যাম্প দেখভাল করত সন্ত্রাসী মাসুদ আজাহারের ভগ্নিপতি ইউসুফ আজাহার। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক-২ এর আঘাতে খতম হয়েছে এই ইউসুফ। ক্যাম্পে যাতে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ছিল নিশ্চ্ছিদ্র নিরপত্তার ব্যবস্থা।

ক্যাম্প হেডের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত মাসুদ। প্রতিবার হবু জঙ্গি ধরে আনা হলেই চলে আসত সে। মাথা খেত ধরে
আনা তরুণদের। সেখানো হত মিথ্যে দেশপ্রেমের বুলি। তাই ফিদায়েঁ এই জঙ্গি সংগঠনের কোনো সদস্যই শত্রুদেশে অপারেশনে গিয়ে পিছু হঠেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − ten =