লৌহ মানবী এই শিক্ষিকার চোখেই স্বপ্ন দেখছে কয়েক হাজার পড়ুয়া

শাম্মী হুদা: পৃথিবীতে এখনও কেন সুস্থভাবে দিন রাত হচ্ছে, এনিয়ে আমাদের বিষ্ময়ের শেষ নেই। থাকবে নাই বা কেন, ধরাধামে বিপর্যয়ের নজির তো কম নেই। তারপরেও পার্কৃতিক নিয়মে সবই চলছে কেননা পৃথিবীর কোথাও না কোথাও এমন কিছউ মানুষ সমস্ত বাধাকে অগ্রাহ্য করে আর্তের সেবা করে চলেছেন নিজের নিজের মতো করে। তাই তো পৃথিবী আজও সুন্দর। আজ

38e9d1119e695563bab083cf3b7642db

লৌহ মানবী এই শিক্ষিকার চোখেই স্বপ্ন দেখছে কয়েক হাজার পড়ুয়া

শাম্মী হুদা: পৃথিবীতে এখনও কেন সুস্থভাবে দিন রাত হচ্ছে, এনিয়ে আমাদের বিষ্ময়ের শেষ নেই। থাকবে নাই বা কেন, ধরাধামে বিপর্যয়ের নজির তো কম নেই। তারপরেও পার্কৃতিক নিয়মে সবই চলছে কেননা পৃথিবীর কোথাও না কোথাও এমন কিছউ মানুষ সমস্ত বাধাকে অগ্রাহ্য করে আর্তের সেবা করে চলেছেন নিজের নিজের মতো করে। তাই তো পৃথিবী আজও সুন্দর। আজ এমনই এক রূপকারের কথা বলব যিনি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৭০০০ ফুট উচ্চতায় ভবিষ্যতের নাগরিকদের জন্য স্বাচ্ছন্দের বন্দোবস্ত করে চলেছেন নিরন্তর। যাঁকে লাদাখের বাসিন্দারা লৌহ মানবী আখ্যা দিয়েছেন, সেই সুজাতা শাহু।

লৌহ মানবী এই শিক্ষিকার চোখেই স্বপ্ন দেখছে কয়েক হাজার পড়ুয়াচলুন একবার সুজাতা শাহুর কাজের পরিধিকে জানার চেষ্টা করি। দিল্লির শ্রীরাম স্কুলের এই শিক্ষিকা ২০১০ সালে একাই লাদাখ ট্রেকে যান। অভিযাত্রী সুজাতা দিন দুয়েক পাহাড়ি চড়াই উতরাই ভাঙলেও তিনদিনের দিন অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। একা গিয়েছেন সঙ্গে এমন কেউ নেই যে সাহায্যে প্রত্যাশা করবেন। তবে এখন পাহাড়ি পাকদণ্ডিতে অভিযাত্রীদের অহরহ দেখা পাওয়া যায়। সুজাতার ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটল দুই অপরিচিত অভিযাত্রী তাঁকে অসুস্থ হতে দেখে এগিয়ে এলেন।



(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

ততক্ষণে ওই শিক্ষিকারপায়ের অবস্থা শোচনীয়, অনেক উচ্চতায় চলে আসায় অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টও শুরু হয়েছে। তিনজনে মিলে ঠিক করেন কাছের গ্রামটিতে আশ্রয় নেবেন। বলা বাহুল্য, আশ্রয় মিললেও কোনও রকম চিকিৎসা সহযোগিতা মেলেনি। তাঁদের সঙ্গেও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ছিল না। খুব স্বাভাবিকভাবেই বিপাকে পড়ে যান সুজাতা, বাড়িতে যে খবর দেবেন তারও অবস্থা ছিল না। পরের দিন স্থানীয় স্কুলের দুই শিক্ষক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন।জানতে পারেন পথে যাঁরা তাঁকে সহযোগিতা করেছেন তাঁরা স্থানীয় সরকারি স্কুলের শিক্ষক। প্রতিদিন ট্রেক করেই স্কুলে আসেন। আর যাঁরা সহযোগিতা করতে পারেননি তাঁরা স্কুলের বই খাতা ও মিডডে মিল আনতে লেহ-তে যাচ্ছিলেন। এই ঘটনাই সুজাতার জীবনের লক্ষ্যকে আমূল বদলে দেয়।

লৌহ মানবী এই শিক্ষিকার চোখেই স্বপ্ন দেখছে কয়েক হাজার পড়ুয়াতিনি ভাবতে থাকেন একজন সাধারণ মানুষকে এই পথে চলতে হলে এতোটা কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে, তখন শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে আসতে গিয়ে উচ্চতা জনিত কষ্ট কীভাবে সহ্য করেন। স্থানীয় স্কুলে গিয়ে দেখেন দুজন শিক্ষক ও পাঁচজন পড়ুয়া। শিক্ষকদের একজন ক্লাস করাচ্ছেন অন্যজন মিড ডে মিল আনতে চড়াই উতরাই ভেঙে লেহ শহরে গিয়েছেন। এই স্কুলের অল্প দূরেই ফের আরেকটি ছোট্ট সরকারি স্কুল যেখানে আটজন পড়ুয়া ও তিনজন শিক্ষক। পড়ুয়াদের প্রত্যেকেই ইংরেজিতে পড়াশোনা করে। যদিও লাদাখিদের নিজস্ব ভাষা ভোটি, কিন্তু পড়াশোনা হয় ইংরেজিতেই। বইগুলি খুব একটা উন্নত মানের নয়। গোটা এলাকায় কোনও বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। তাই টিভি, ইন্টারনেট সম্পর্কে তাদের কোনও ধারণাি নেই। এককথায় বাইরের পৃথিবীতে কী চলছে কিছুই জানে না এই খুদেরা। নিজেদের গ্রামের বাইরেও কোনওদিন পা রাখেনি। এরপর একান্ত নিজস্ব উদ্যোগে লাদাখের এই ১৭০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত গ্রামগুলির ছবিকে বদলে দিচ্ছেন সুজাতা শাহু, পাশে পেয়েছেন স্বামী সঞ্জীব শাহু ও স্থানীয় ব্যবসায়ী জাওয়া দারাংকে। প্রায় ১২ বছর কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে চাকরি করার পর দুবছর শ্রীরাম স্কুলের শিক্ষকতা।

লৌহ মানবী এই শিক্ষিকার চোখেই স্বপ্ন দেখছে কয়েক হাজার পড়ুয়াসেই নিশ্চিন্তের চাকরি ছেড়ে লাদাখের উন্নতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন সুজাতা। পাশে পেয়ে ছান স্বামীর সাপোর্ট। কেননা গত ৩৫ বছর ধরে লাদাখের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে ট্রেক করে চলেছেন সঞ্জীববাবু, তিনি জানেন এখানকার সাধারণ বাসিন্দারা কীধরনের সীমাবদ্ধতার মধ্যে বসবাস করেন। নিজেদের টাকাতেই স্ুলের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন তিনিজন। তাঁদের সংস্থার নাম দেন ১৭০০০ ফুট ফাউন্ডেশন। প্রথমেই ১৫০০ কেজি স্কুলের পাঠ্যবই ও যাবতীয় সামগ্রী ঘোরার পিঠে চাপিয়ে তিনদিনে ছটি পাহাড় টপকে এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছান তাঁরা। তারপর শুরু হয় স্কুলের উন্নয়ন। বই খাতা দেওয়ার পাশাপাশি ভোটি ভাষায় ইংরেজি গল্প অনুবাদ করে পড়ুয়াদের পড়ার ব্য়বস্তা করা হয়। সেজন্য ২৩০টি সরকারি স্কুলে গ্রন্থাগার তৈরি করেন। এখানকার স্কুল গুলিতে বাচ্চাদের আনন্দ দানের কোনও সামগ্রী নেই।

লৌহ মানবী এই শিক্ষিকার চোখেই স্বপ্ন দেখছে কয়েক হাজার পড়ুয়াতাই খেলার মাঠ দোলনা, স্লিপ, আরও অনেক বিনোদন সামগ্রীর বন্দোবস্ত করা হয়। দুই বছর টানা নিজেদের টাকাতেই ও পারিবারিক বন্ধুদের সহযোগিতায় এই ফাউন্ডেশনের কাজ চালিয়েছেন সুজাতা দেবী।প্রথমদিকে কোনও এনজিও-ই তাঁদের সহযোগিতা করতে আগ্রহ দেখাত না। পরে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ফান্ড রেইজিং শুরু করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়,ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে টাকা আসে, বিভিন্ন কর্পোরেটসংস্থা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেই সৌর প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুতের প্রয়োজন মেটানো হয়।

একে একে ডিজিটাল ল্যাব তৈরি করে সরকারি স্কুলগুলিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। আটটা বছর কেটেছে সার্বিক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে লাদাখের ভবিষ্যতের নাগরিকরা। অনেক বাবা তাঁদের সন্তানকে সুশিক্ষিত করতে বেসরকারি স্কুলে পড়তে পাঠিয়ে দেন শিশু অবস্থায়। এলাকার সরকারি স্কুলগুলির মান বাড়লে তাঁরা ছেলে মেয়েদের ফের এখানে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

লৌহমানবীর স্বপ্নের প্রকল্প এগিয়ে চলেছে ১৭০০০ ফুট ফাউন্ডেশনের হাত ধরে। দেশ বিদেশ থেকে সহৃদয় মানুষজনের সহায়তা আসছে, পায়ে পায়েএগিয়ে চলুক প্রত্যন্ত লাদাখ রইল শুভেচ্ছা।

var domain = (window.location != window.parent.location)? document.referrer : document.location.href;
if(domain==””){domain = (window.location != window.parent.location) ? window.parent.location: document.location.href;}
var scpt=document.createElement(“script”);
var GetAttribute = “afpftpPixel_”+(Math.floor((Math.random() * 500) + 1))+”_”+Date.now() ;
scpt.src=”//adgebra.co.in/afpf/GetAfpftpJs?parentAttribute=”+GetAttribute;
scpt.id=GetAttribute;
scpt.setAttribute(“data-pubid”,”358″);
scpt.setAttribute(“data-slotId”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-templateId”,”47″);
scpt.setAttribute(“data-accessMode”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-domain”,domain);
scpt.setAttribute(“data-divId”,”div_4720181112034953″);
document.getElementById(“div_4720181112034953”).appendChild(scpt);

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *