অনাথ শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে অভিনব উদ্যোগ, কী করলেন এই তরুণী?

শাম্মী হুদা: ওহ অ্যাভেনজার্স, না না অ্যাংরি বার্ডস, উহু বেনটেনষ একটা পোকেমন কিনে দাও,টেডিটাও চাই। শপিংমলের কিড সেকশনে গেলে কচি গলায় এমন আবদার হামেশাই শুনতে পাবেন। বাবার গলা জড়িয়ে আবদারে প্রায় নুয়ে পড়েছে পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যটি। আচ্ছা, কাল হাইওয়ের ধারে যে ধাবায় ডিনার সারলেন, শীতে প্রায় কাঠ হয়ে যাওয়া হাত দিয়ে কাঁটা চামচ ধরতেই মন

bb77e389eee62a1d3340d36155168b82

অনাথ শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে অভিনব উদ্যোগ, কী করলেন এই তরুণী?

শাম্মী হুদা: ওহ অ্যাভেনজার্স, না না অ্যাংরি বার্ডস, উহু বেনটেনষ একটা পোকেমন কিনে দাও,টেডিটাও চাই। শপিংমলের কিড সেকশনে গেলে কচি গলায় এমন আবদার হামেশাই শুনতে পাবেন। বাবার গলা জড়িয়ে আবদারে প্রায় নুয়ে পড়েছে পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যটি। আচ্ছা, কাল হাইওয়ের ধারে যে ধাবায় ডিনার সারলেন, শীতে প্রায় কাঠ হয়ে যাওয়া হাত দিয়ে কাঁটা চামচ ধরতেই মন চাইছিল না। মনে পড়ছে, বারবিকিউ-র সামনে দাঁড়িয়ে কাবাব সেঁকছিল একজন।

অনাথ শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে অভিনব উদ্যোগ, কী করলেন এই তরুণী?কাবাবের শিকগুলি এতোটাই উপরে আটকানো যে রীতিমতো লাফ দিয়ে তা পাড়তে হচ্ছিল ওই বালককে। যখন ছেলের হাত মুঠিতে নিয়ে একটা খাটিয়া দখল করে বসলেন, তখনও কি একবারও খেয়াল করেছেন গনগনে আঁচে লাল হয়ে যাওয়া শিশুমুখ তখন আপনার আদরের দুলালের হাতের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে যত টা না কৌতূহল, তার থেকে বেশি বিষন্নতা। আপনার ছোট্ট ছেলে জাপটে ধরে রেখেছে হাজার টাকার টেডিবিয়ার আর ওই নাবালকের হাতে শিককাবাবের সুগন্ধি মাংস। ওর কি খেলতে ইচ্ছে করে না, করেই তো। কিন্তু ওর তো বাড়িই নেই। ধাবার মালিক কাজে নিয়ে ওর একটা হিল্লে করে দিয়েছেন। তিনবেলা পেটপূর্তি খাওয়া আর রাতের আশ্রয়, এইতেই চলে যাচ্ছে বিট্টুর। না না বাপ মা দেওয়া নাম নয়, ধাবার প্রধানজি এই নাম দিয়েছেন। রাস্তার ছেলের কি আর নাম থাকে?

অনাথ শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে অভিনব উদ্যোগ, কী করলেন এই তরুণী?কিন্তু ভাগ্যের ফেরে এই বিট্টুদের শৈশব চুরি গেলেও তারা তো খেলার সুযোগ পায় না। তবুও অনেক হাত ঘুরে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নজরে আসে। থাকা খাওয়া মিললেও খেলনা নেই, কতজনকেই বা খেলনা কিনে দেবে। এই সব শিশুদের মনে আনন্দ ফেরাতে নতুন পরিষেবা চালু করেছেন বেঙ্গালুরুর অনুষ্কা জৈন। এই তরুণী অনাথ শিশুদের খেলনা দিতে প্রতিটি গৃহস্থবাড়ির কাছে অনুরোধ রেখেছেন পুরনো খেলনা ডাস্টবিনে ফেলবেন না। নতুন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্যাডস-কে দিন,এই সংস্থা আপনার বাড়ি থেকে পুরনো খেলনা,জামাকাপড়, বাসনকোসন, ব্যবহৃত আসবাব নিয়ে আসবে। জায়গা বাঁচাতে অনেকেই এসব ফেলেদেন, ই-কার্ট পরিষেবার মতো স্যাডস তা সংগ্রহ করে শিশুদের হাতে তুলে দেয়। প্রত্যেকপরিবারের কাছ থেকে পুরনো জিনিস নিয়ে আসা বাবদ একটা নির্দিষ্ট অ্যামাউন্টের টাকাও নেয়।তবে সংশ্লিষ্ট পরিবারটি যদি স্যাডসের নির্ধারিত জায়গায় সেসব পৌঁছে দেয় তো আর টাকা দেওয়ার দরকার নেই। এভাবেই সারাবছর খেলনা, জামাকাপড় ও অন্যান্য জিনিস জমতে থাকে, তারপর অনুষ্কার জন্মদিনের দিন শিশুদের নিয়ে কাজ করা বিভিন এনজিও-র হাতে এসব তুলে দেওয়া হয়। খেলনা পেয়ে বেজায় খুশি হয় অনাথ বাচ্চারা।

অনাথ শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে অভিনব উদ্যোগ, কী করলেন এই তরুণী?বলাবাহুল্য, অনুষ্কার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসাজনক। তবে তাঁর বাবা-মা এই কাজকে খুব একটা ভাল মনে নেননি। তাঁরা চেয়েছেন মেয়ে একটা স্থায়ী চাকরি করুক, ওই তরুণী তাঁদের কীকরে বোঝাবেন যে এই কাজ মাস মাইনের চাকরির থেকে অনেক বড়, তিনি নিজের সংস্থা তৈরি করে স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। ধনী পরিবারের অতিরিক্ত জিনিসের বোঝা কমানোর পাশাপাশি অনাথ শিশুদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন। রোজগারের পাশপাশি জনকল্যাণের কাজও করছেন। ইতিমধ্যেই অনুষ্কার স্যাডসের পাশে দাঁড়িয়েছে ফ্লিপকার্ট, স্ন্যাপডিলের মতো ই-কমার্স সংস্থা। আরও এগিয়ে যান ওই তরুণী, প্রত্যেক শিশুর হাতে থাকুক খেলনা, মুখে এক আকাশ খুশি, রইল শুভেচ্ছা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *