শাম্মী হুদা: দৃষ্টিশক্তিহীনতা যে কত বড় মাপে ক্ষতি,তা শুধু ভুক্তভোগীরাই বুঝতে পারেন। বাকিরা শুধু সহানুভূতি প্রকাশ করেই ক্ষান্ত থাকেন। করবেনই বা কি, জীবনের পুরোটা সময় তো আর মহানুভবতার পরাকাষ্ঠা হয়ে কাটানো যায় না। তাই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলেমেয়েরা সুস্থ স্বাভাবিকদের থেকে পিছিয়েই থাকে। আসলে তাদের পড়াশোনার মান উন্নয়নের জন্য যে যে দ্রব্যসামগ্রীর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়ই দুর্লভ। যাইহোক, এবার এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের জন্যই ছবি ছুঁয়ে পড়াশোনার সুযোগ করে দিলেন দিল্লির আইআইটি পড়ুয়া অঙ্কিতা গুলাটি।
দিল্লি আইআইটি থেকে বি-টেক, এম-টেক করার পর অঙ্কিতা ডক্টরেটের সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক করেন অ্যাসিসটিভ টেকনোলজিই হবে তাঁর বিষয়। সেই মতো আইআিটির অন্যতম বিখ্যাত শিক্ষক তথা ডেপুটি ডিরেক্টর বালাকৃষ্ণনকে গাইড হিসেবে পেয়ে যান অঙ্কিতা। তারপর শুরু নতুন গবেষণা, প্রথমেই অ্যাসিসটিভ টেকনোলজিতে জ্ঞান অর্জনের জন্য তিনি আমেদাবাদ আইআইএম,ও দিল্লি আইআইটি থেকে দুটি ম্যানেজমেন্ট কোর্স করেন।
দুটিতেই গোল্ড মেডেলিস্টহয়ে ২৫ লক্ষ টাকা জিতে নেন। এবার শুরু তাঁর নিজের কাজ।তিনি একটা ভাঁজ হয় এমন স্ট্যান্ড তৈরি করলেন। তারউপরে যোগ করা হল স্মার্টফোনের ক্যামেরা। এবার ওই স্ট্যান্ডটি বইয়ের উপরে রাখলে ক্যামেরায় বইয়ের বিষয়বস্তু ফুটে উঠবে। ফোনে থাকা একটি বিশেষ অ্যাপ ওই ছবির গঠন, বিষয় নিয়ে বলতে থাকবে। গোটা প্রক্রিয়া তখনই শুরু হবে, যখন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়া সেই বইয়ের পাতায় তর্জনী ছোঁয়াবে। অডিও বার্তা ছবির আকারে প্রয়োজনীয় পাঠ দেবে,স্বাভাবিক ভাবেই ওই পড়ুয়ার পাঠ্যবস্তুর বিষয় সম্পর্কে সবকিছু জানা হয়ে যাবে।
ইতিমধ্যেই অঙ্কিতা গুলাটির ভাবনা প্রশংসিতহয়েছে। এনসিইআরটি-র সঙিগে জোট বেঁধে কাজ শুরু করেছেন ওই তরুণী। খুব শিগগির দেশের দৃষ্টিশক্তিহীন পড়ুয়াদের হাতে ওই ম্যাপ,স্ট্যান্ড ও মোবাইল ফোন পৌঁছে যাবে। এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী তা মানতেই হবে।