তিয়াষা গুপ্ত: সময় গড়িয়েছে, রাজনীতির ধরণ বদলেছে। কিন্তু বদলায়নি বিজেপির সংস্কৃতি। তাই এখনো রথকে আঁকড়ে ধরে বিজেপি ফায়দা তুলতে চায়। প্রশ্ন হল মোদী-শাহরা ভালোই জানেন হিন্দুত্ব আবেগে এখন সেভাবে মানুষ সাড়া দেয় না। তাই উন্নয়ন মন্ত্রে বিজেপিকে ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। বারেবারে বোঝাতে হয়েছে, মোদীর এজেন্ডা উন্নয়ন। মোদী নিজে আরএসএস-এর ঘারানায় বেড়ে ওঠা। তিনি এত সহজে হিন্দুত্ব ছাড়বেন তা বলা যায় না। তাই এখনো রথকে নিয়ে রাজনীতি করতে হচ্ছে মোদী-শাহদের। ১৯-এ বিজেপিকে কতটা মাইলেজ দেবে এই রথ রাজনীতি?
কংগ্রেস-বিজেপি মাইনাস, কতটা টেকসই হবে KCR জোট?
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বিজেপির রথের চাকা গড়িয়েছে আদালতেও। রথ আদৌ গতি পাবে কিনা, তা সময়ই বলবে। তবে পশ্চিমবঙ্গে রথযাত্রায় মরিয়া বিজেপি। আদবানি যখন রথ চালিয়েছেন, তখন পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন, মানুষ অন্যরকম আবেগে চালিত হত। এখন নতুন প্রজন্ম চাকরি চায়। দেশবাসী শিল্প চান। ফলে মোদীকে বারবার কর্মসংস্থানের বুলি আওড়াতে হয়। আর ঠিক এইখানেই মোদীকে ঘায়েল করতে আসরে বিরোধীরা। তারা বেকারত্ব অস্ত্রে ফালফালা করেছ মোদীকে। রাফালে থেকে কৃষক সমস্যা। নাজেহাল মোদী। যার প্রতিফলন দেখা গেল হালফিল ভোটবাক্সে। প্রশ্ন হল এই সব ইস্যু থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে কি রথকে আশ্রয় করতে চাইছেন মোদী?
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের দাবিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও সংঘ পরিবারের বিক্ষোভ আন্দোলনকে সমর্থন জানানোই ছিল আদবানির রথযাত্রার উদ্দেশ্য। হাজার খানেক করসেবক ও স্বেচ্ছাসেবক সেই রথযাত্রায় অংশ নেন। নেতৃত্বে ছিলেন আদবানি। সেই রথকে ঘিরে মানুষের মধ্যে ধর্মীয় ও উগ্র আবেগ তৈরি করতে পেরেছিল বিজেপি। এখন যে ধর্মীয় সুড়সুড়িতে মানুষ সাড়া দেন না তা ভালোই জানেন মোদী। তা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে উন্নয়ন –এভাবেই আধুনিকতার মন্ত্রে মানুষের মন জয় করেছিলেন `স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোদী হাওয়া গতি হারিয়েছে। ১৯-এ হালে পানি পেতে মোদী-শাহরা আবার হিন্দুত্ব, আবার রথ আশ্রয় করছেন। এখনো আদবানিদের দেখানো পথেই রথকে আশ্রয় করে ব্যালট বাক্সে ফায়দা তুলতে চাইছেন মোাদী-শাহরা।
টিকা দিয়ে মুসলিম পড়ুয়াদের নপুংসক বানাচ্ছে মোদি-RSS, গুজব বলল কেন্দ্র
রাজস্থানে ভোটের আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে রথ নিয়ে গৌবর যাত্রা করেন। সেই যাত্রা ঘিরেও সমালোচনার ঝড় বয়েছে। বিভ্রাট হয়েছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি রাজ্যব্যাপী রথ চালিয়েছেন। তারপর ভোটে কল্কে পাননি। এবার পশ্চিমবঙ্গে রথ ছোটাতে মরিয়া বিজেপি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রথ আজ কতটা প্রাসঙ্গিক? তানিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। রাজস্থানে রাজের রথ বিজেপিকে মাইলেজ দিতে পারেনি। পশ্চমবঙ্গে শেষপর্ষন্ত রথের চাকা ঘুরবে কিনা,তা সময়ের অপেক্ষা। খোল, করতাল, গোবর-ঘণ্টা, থুড়ি হিন্দুত্ব এখন আর মাইলেজ দেবে বিজেপিকে? দেখা যাক।