ভুয়া শংসাপত্র দেখিয়ে চাকরি, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন দুই কর্তার কারাদণ্ড

বোলপুর: ষড়যন্ত্র ও জালিয়াতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন বুধবার৷ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপ কুমার সিনহা, প্রাক্তন কর্মসচিব দিলীপ কুমার মুখোপাধ্যায় ও প্রাক্তন অধ্যাপিকা মুক্তি দেবকে বৃহস্পতিবার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বোলপুর আদালতের বিচারক অরিন্দম মিশ্র৷ ১৫ বছরের পুরানো একটি মামলায় এই রায় দিয়েছেন বিচারক। ভুয়া শংসাপত্র প্রদান করে চাকরিতে যোগদানের অভিযোগ ছিল অধ্যাপিকা

0acb08ff7ecce54c3d1b2ca9797730a7

ভুয়া শংসাপত্র দেখিয়ে চাকরি,  বিশ্বভারতীর প্রাক্তন দুই কর্তার কারাদণ্ড

বোলপুর: ষড়যন্ত্র ও জালিয়াতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন বুধবার৷ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপ কুমার সিনহা, প্রাক্তন কর্মসচিব দিলীপ কুমার মুখোপাধ্যায় ও প্রাক্তন অধ্যাপিকা মুক্তি দেবকে বৃহস্পতিবার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বোলপুর আদালতের বিচারক অরিন্দম মিশ্র৷

১৫ বছরের পুরানো একটি মামলায় এই রায় দিয়েছেন বিচারক। ভুয়া শংসাপত্র প্রদান করে চাকরিতে যোগদানের অভিযোগ ছিল অধ্যাপিকা মুক্তি দেবের বিরুদ্ধে এবং সেই ভুয়া শংসাপত্রে স্বাক্ষর করে জালিয়াতিতে মদত দেওয়ার অভিযোগ ছিল প্রাক্তন উপাচার্য ও কর্মসচিবের বিরুদ্ধে। বোলপুর থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছিল। পরে সিআইডি নিয়েছিল এই মামলার তদন্তভার। সাজা ঘোষণার পর প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপ সিনহা বলেন, আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে উচ্চ আদালতে যাব।

এদিন সাজা ঘোষণার পর বোলপুর আদালতে সিআইডি-র স্পেশাল সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ বলেন, সাজাপ্রাপ্তদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৬, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৬৯, ৪৭১, ৪৭৪নং ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। আজ সাজা ঘোষনা করেছেন। জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বিশ্বভারতীতে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসনে ফলিত গণিত বিভাগে অধ্যাপক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। এ পদের জন্য অন্য আরোও অনেকের সঙ্গে মুক্তি দেব নামে এক মহিলা দরখাস্ত করেন। সেই দরখাস্তের সঙ্গে ওনার সমস্ত শিক্ষাগত শংসাপত্রের প্রতিলিপি সংযুক্ত করে দেন। বিশ্বভারতীর সিলেকশন বোর্ড নির্বাচিত করলে ২৭ জানুয়ারি ১৯৯৭ বিশ্বভারতীর শিক্ষা ভবনে অধ্যাপিকা হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন মুক্তি দেব।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে,অধ্যাপিকা মুক্তি দেব এরপর ২০০২ সালে পিএইচডি-র জন্য আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে তার শিক্ষাগত সমস্ত শংসাপত্রের আসল জমা দিতে বলে। কিন্তু তিনি হঠাৎ-ই পিএইচডি করার আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। সন্দেহ দানা বাঁধে এখানেই। এরপরই তৎকালীন বিশ্বভারতী উপাচার্য এবিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সমস্ত শংসাপত্র মুক্তি দেব পেশ করেছিলেন তা সঠিক কি না জানত চাইলে সব জায়গা থেকেই প্রত্যুত্তর আসে শংসাপত্রগুলি ভুয়া বলে। সেই সঙ্গে সেই ভুয়া শংসাপত্রে স্বাক্ষর করে জালিয়াতিতে মদত দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হন প্রাক্তন উপাচার্য ও কর্মসচিব। মুক্তি দেবকে সাসপেন্ড করা হয়।

এই মর্মে ২০০৪ সালের মে মাসে তৎকালীন কর্মসচিব সুনীল সরকার বোলপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ২০০৪ সালের জুন মাসে মুক্তি দেব ও প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপ সিংহ এবং দিনকয়েক পরে প্রাক্তন কর্মসচিব দিলীপ মুখোপাধ্যায়ও গ্রেপ্তার হন এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে। সিআইডি ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ২০০৫ সালের মার্চ মাসে সিআইডি এই তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *