কলকাতা: মারাত্মক দূষণের কবলে শহর কলকাতা৷ বাতাসে মাত্রাছাড়া বিপজ্জনক ধূলিকনা৷ কুড়ি বছরের রেকর্ড ভেঙে ময়দান ও উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে দূষণের মাত্রা ৪০০-রও বেশি৷ বছরের শুরুতেই অশনি সংকেত পরিবেশবিদদের৷ শুক্রবার দূষণের মাপকাঠিতে দিল্লিকে ফের ছাপিয়ে গেল কলকাতা৷ উত্তর কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে তিলোত্তমার দূষণ পরিমাপের কাজ হয়ে থাকে৷ এই দুই কেন্দ্র থেকেই শুক্রবার যে তথ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে গিয়ে পৌঁছেছে তা চিন্তা বাড়িয়েছে রাজ্যের৷
ভারতের শহরগুলির মধ্যে দূষণের শিরোপা রাজধানী দিল্লির দখলে থাকলেও তাকে আগেই টেক্কা দিয়েছে কলকাতা। গত নভেম্বর মাসে সেই তথই ধরা পড়ে দূষণের সূচকে৷ ২৫ নভেম্বর এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছাপিয়ে গেছে ৪০০’র সূচক৷ ৪০০ পেরিয়ে যাওয়া মানেই এই পরিবেশ প্রচণ্ড উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা৷ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনিটরিং স্টেশনে ধরা পড়ে ওই সূচক৷
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
কলকাতার এই ক্রমাগত বাড়তে থাকা দূষণ চিন্তায় ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের৷ তাঁদের বক্তব্য, এই দূষণের ফলে গত কয়েকদিনে শহরে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের পরিমাণ বেড়েছে। সবথেকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের। এরকম অবস্থা চলতে থাকলে নতুন প্রজন্ম ছোটবেলা থেকেই শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগতে পারে বলে ধারণা চিকিৎসকদের।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, মেট্রোপলিটন শহর হওয়ায় কলকাতার দূষণ সূচক ৩০০-৩৯৯ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করাটা স্বাভাবিক। কিন্তু যত তা ৪০০’র দিকে এগোবে বা ৪০০ অতিক্রম করবে, তত অবস্থা খারাপ হবে। এখন থেকেই যদি এই সমস্যা দূর করার কোনও উপায় না বের করা যায়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের দূষণের রাজধানীর তকমাটা কলকাতার মাথাতেই উঠবে, সতর্কবার্তা আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের।
দূষিত বাতাসের জন্য ২০১৬ সালে পাঁচবছরের নীচে ৬০ হাজার ৯৮৭টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে এই দেশে৷ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, এই বয়সের শিশুদের মৃত্যু তালিকায় ভারতই সবার আগে। নাইজেরিয়া পাঁচবছরের কম শিশুদের মৃত্যু হয়েছে ৪৭ হাজার ৬৭৪টি, পাকিস্তানে ২১ হাজার ১৩৬টি, কঙ্গোয় ১২ হাজার ৮৯০ আর চিনে ৬ হাজার ৬৫৪টি। ভারতের ছেলেদের থেকে মেয়েদের মৃত্যুর হার বেশি। ২০১৬ সালে ৩২ হাজার মেয়ে আর ২৮ হাজার ছেলে দূষিত বাতাসের জন্য মারা গিয়েছে৷
var domain = (window.location != window.parent.location)? document.referrer : document.location.href;
if(domain==””){domain = (window.location != window.parent.location) ? window.parent.location: document.location.href;}
var scpt=document.createElement(“script”);
var GetAttribute = “afpftpPixel_”+(Math.floor((Math.random() * 500) + 1))+”_”+Date.now() ;
scpt.src=”//adgebra.co.in/afpf/GetAfpftpJs?parentAttribute=”+GetAttribute;
scpt.id=GetAttribute;
scpt.setAttribute(“data-pubid”,”358″);
scpt.setAttribute(“data-slotId”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-templateId”,”47″);
scpt.setAttribute(“data-accessMode”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-domain”,domain);
scpt.setAttribute(“data-divId”,”div_4720181112034953″);
document.getElementById(“div_4720181112034953”).appendChild(scpt);
পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক যে, বাংলার বাতাসে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকায় রাজ্যকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ আদালত৷ রাজ্যকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা করার পাশাপাশি দুষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য জারি করা হয় বিশেষ নির্দেশিকা। ২৭ নভেম্বর আদালতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্দেশিকা না মানলে অন্যথায় প্রতিমাসে অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে সরকারকে৷ কিন্তু, তাতেও কমেনি দূষণ৷ নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ৷ উলটে, বর্ষবরণের রাতে সব মাত্রা ছাড়িয়ে যায় কলকাতার দূষণ। সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় অনুযায়ী রাত ১১টা ৫০ থেকে ১২ টা পর্যন্ত ফাটানো যাবে আতশবাজি কিন্তু সে নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সন্ধ্যে থেকেই শাব্দদানবের হাতে চলে যায় শহর। শব্দ দূষণের পাশাপাশি বায়ু দূষণও বেড়ে গিয়েছিল মাত্রাতিরিক্তভাবে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্ষবরণের শহরের বাতাসে প্রতি মাইক্রোমিটারে ধুলিকনার পরিমান ২.৫ সুচক ছুঁয়েছিল ৪০০। যাকে সাধারণ ভাষায় মারাত্মক দূষিত বাতাস হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে। দেশের রাজধানী দিল্লিতেও দূষনের পরিমানও অনেকটাই বেশী। বর্তমানে বায়ু দুষণের সুচক ৪১৭ ছুঁয়েছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ‘এয়ার পলিউশন অ্যান্ড চাইল্জ হেল্থঃ প্রেস্ক্রাইবিং ক্লিন এয়ার’ শীর্ষক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিস্বের ২০টি সবথেকে দূষিত শহরের ১৪টিই ভারতে। বায়ুদূষণে দুনিয়ায় মৃত্যুর সিকিভাগই হয় ভারতে। পৃথিবীর ৯০ ভাগ শিশুই টক্সিক বাতাসে শ্বাস নেয়। তাদের মধ্যে ২০১৬ সালে প্রায় ৬ লাখ শিশু মারা গিয়েছে। ঘরের ভিতরে ও ঘরের বাইরে দু’ধরনের দূষণেই ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের।