ট্রেনের কামরায় লেখাপড়া, অবশেষে সাফল্য পেল গৃহহীন অর্জুন

কলকাতা: ছিল না কোনও স্থায়ী কোন ঠিকানা৷ সম্বল বলতে ছিল খোলা প্ল্যাটফর্ম৷ মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে ছিল শিয়ালদা প্ল্যাটফর্ম৷ ‘চালচুলো’ না থাকলেও নিজের অদম্য জেদ ও দু’চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে লড়াই জারি বছর ১৪-র অর্জুন দাস৷ খোলা প্ল্যাটফর্ম কিংবা শেষ ট্রেনের ফাঁকা কামরায় পড়াশোনা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অর্জুনের পরিবার পেলে প্রথম সাফল্য৷ স্থানীয়

ট্রেনের কামরায় লেখাপড়া, অবশেষে সাফল্য পেল গৃহহীন অর্জুন

কলকাতা: ছিল না কোনও স্থায়ী কোন ঠিকানা৷ সম্বল বলতে ছিল খোলা প্ল্যাটফর্ম৷ মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে ছিল শিয়ালদা প্ল্যাটফর্ম৷ ‘চালচুলো’ না থাকলেও নিজের অদম্য জেদ ও দু’চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে লড়াই জারি বছর ১৪-র অর্জুন দাস৷ খোলা প্ল্যাটফর্ম কিংবা শেষ ট্রেনের ফাঁকা কামরায় পড়াশোনা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অর্জুনের পরিবার পেলে প্রথম সাফল্য৷

ট্রেনের কামরায় লেখাপড়া, অবশেষে সাফল্য পেল গৃহহীন অর্জুনস্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে অবশেষে মাথা গোঁজাই ঠাঁই মিলল অর্জুনের৷ বাংলার বাড়ি প্রকল্পে অর্জুনের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল গোটা একটা বাড়ি৷ রয়েছে, পর্যাপ্ত জল আলোর ব্যবস্থা৷ পাকা বাড়ির স্বপ্ন পূরণ হতেই মাকে জড়িয়ে কান্না অর্জুনের৷ চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি মা আরতিদেবী৷ দাদা-মায়ের কান্না দেখে চোখ ছলছল ছোটবোন পূর্ণিমা৷ মাথার উপর পাকা ছাদ পেয়ে স্থানীয় পঞ্চায়াতকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি আরতিদেবী৷

ট্রেনের কামরায় লেখাপড়া, অবশেষে সাফল্য পেল গৃহহীন অর্জুনদারিদ্র্যের সঙ্গে দৈনিক লড়াই জারি রেখে একদিন দেশের হয়ে লড়তে চাই অর্জুন৷ সেনায় যোগ দিয়ে দায়িত্ব নিতে চাই মা ও ছোট বোনের৷ আর সেই লক্ষ্যেই অর্জুন এগিয়ে চলেছে নিজের উদ্যমে৷ চলেছে তারই প্রস্তুতি৷ কাকদ্বীপের বামনমোড়ের জ্ঞানদাময়ী হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র অর্জুন৷ স্কুলের সামনে মা অরতি দাস বিক্রি করেন ফল৷

এতদিন ফল বিক্রি করার পর মায়ের সঙ্গে শেষ ট্রেন ধরে ছুটে যেতে হত নিজের বাড়ি৷ না বাড়ি নয়, শিয়ালদা স্টেশনে৷ সেখানে আশ্রয় নিয়ে ফের ট্রেন ধরে স্কুল৷ কাকদ্বীপ থেকে শেষ ট্রেন ধরে শিয়ালদহে আসা দাস পরিবারের সেই লড়াই আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রশাসন৷ সরকারি জমিতে তৈরি করা দেওয়া হয় বাড়ি৷ নতুন পাকা বাড়িতে উঠে নতুন করে লড়াইয়ের স্বপ্ন শুরু অর্জুনের৷

ট্রেনের কামরায় লেখাপড়া, অবশেষে সাফল্য পেল গৃহহীন অর্জুনলোকাল ট্রেনের কামরান এক কোণে মেঝেতে ত্রিপল পেতে অর্জুনের পড়াশোনা৷ সিটের উপর বইপত্র সাজিয়ে করে দেওয়া হোমওয়ার্ক৷ সম্প্রতি সোশ্যাল-মিডিয়ায়-ভাইরাল হয়েছে অর্জুনের অধ্যাবসায়৷ ট্রেনের কামরায় এককোনে শুয়ে মা আরতিদেবী৷ নিচেই এক মনে পড়ছে অর্জুন৷ এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ভাইরাল হতে খুব বেশি সময় লাগেনি৷

ট্রেনের কামরায় লেখাপড়া, অবশেষে সাফল্য পেল গৃহহীন অর্জুনজানা গিয়েছে, মাস দু’য়েক আগে মাতৃভূমি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অর্জুনের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল৷ অর্জুনকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়৷ বইখাতা কিনে দেয়া সহ পোশাকও দেয়া হয় সংস্থার তরফে৷ অর্জুনের ছোটবোন পূর্ণিমা এখন শিয়ালদহের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার স্কুলে পড়াশোনা করছে৷ সেও হতে চায় শিক্ষক৷
নুন আনতে পান্তা ফুরানো আশ্রয়হীন পরিবার আজ পেয়েছে স্থায়ী আশ্রয়৷ অর্জুনকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন মা আরতিদেবী৷

তিনি চান, সন্তান বড় হয়ে একদিন তাঁদের দুঃখ ঘুচিয়ে দেবে৷ অর্জুন চাই, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে দেশের হয়ে কাজ করতে৷ দাদার মতো বোন পূর্ণিমাও চান বড় হয়ে মায়ের পাশে দাঁড়াতে৷ শিক্ষক হয়ে সমাজ গড়তে৷ স্থায়ী ঠিকানায় দুই সন্তানকে নিয়ে দিন কাটানোর স্বপ্ন দেখা আরতীদেবীর লড়াই এখন প্রতিষ্ঠার৷ শিয়ালদা প্ল্যাটফর্ম থেকেই শুধু হওয়া অর্জুন-পূর্ণিমার লড়াই আজ পেল প্রথম সাফল্য৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *