‘বিনা পয়সার বাজারে’ পোশাক পছন্দের আনন্দ বিলিয়ে চলেছেন শিক্ষক

মুর্শিদাবাদ: প্রত্যেক মানুষের জীবনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম৷ মায়ের গর্ভ থেকে ভূমীষ্ঠ হওয়ার পর একটি শিশুর প্রথম শিক্ষক হলেন তার মা এবং বাবা৷ তারপর বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুঁথীগত শিক্ষার দ্বারা তাকে মানুষের মতো মানুষ তৈরিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তার স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা৷ এককথায় সমাজে অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছেন শিক্ষকরা৷ তবে

‘বিনা পয়সার বাজারে’ পোশাক পছন্দের আনন্দ বিলিয়ে চলেছেন শিক্ষক

মুর্শিদাবাদ: প্রত্যেক মানুষের জীবনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম৷ মায়ের গর্ভ থেকে ভূমীষ্ঠ হওয়ার পর একটি শিশুর প্রথম শিক্ষক হলেন তার মা এবং বাবা৷ তারপর বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুঁথীগত শিক্ষার দ্বারা তাকে মানুষের মতো মানুষ তৈরিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তার স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা৷ এককথায় সমাজে অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রয়েছেন শিক্ষকরা৷ তবে শুধুমাত্র ছোট ছোট কূড়িদের বড় গাছ তৈরি করাই নয়, সেই গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে উন্নতমানের সমাজ গঠনেও অপরিসীম ভূমিকা পালন করেন শিক্ষকরা৷ এমনই এক শিক্ষক হলেন মুর্শিদাবাদের সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম৷ নিঃস্ব মানুষগুলির মুখে হাসি ফোটাতে এবং তাদের স্বপ্নপূরণের উদ্দেশ্যে ‘বিনা পয়সার বাজার’ তৈরি করে এক অভূতপূর্ব নজির গড়েছেন তিনি৷

‘বিনা পয়সার বাজারে’ পোশাক পছন্দের আনন্দ বিলিয়ে চলেছেন শিক্ষক

এই দুর্মূল্যের বাজারে ‘বিনা পয়সায় বাজার’! শুনে অবাক হওয়ারই মতো৷ কিন্তু এই অকল্পনীয় ঘটনাটিকে সত্যি করে দেখিয়েছেন বহরমপুরের স্কুল শিক্ষক সৈয়দ তৌফিকুল৷ এলাকার মানুষদের অব্যবহৃত পোশাক সংগ্রহ করে গরীব দুঃখীদের হাতে তুলে দিচ্ছন তাঁর এই বাজারের মাধ্যমে৷ তাঁর কথায়, সমাজের উঁচু স্তরের মানুষের প্রত্যেকের বাড়িতে এমন অনেক পোশাক আছে যেগুলি একবার-দু’বার পরার পর আর ব্যবহৃত হয়না৷ অথচ সমাজের পিছিয়ে পরা মানুষগুলি অর্থের অভাবে সেই সমস্ত পোশাক থেকে বঞ্চিত হয়৷ কিন্তু তারা যাতে আর বঞ্চিত না হয় সেকারণে তাঁর ‘বিনা পয়সার বাজার’৷ বড় বড় শহরের নামি দামি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত শপিং মলগুলির মতো সাজানো হয়েছে এই বাজার৷ শুধুমাত্র পার্থক্য একটাই শপিং মলগুলি থেকে পোশাক কেনার ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হয় বিশাল অঙ্কের অর্থ৷ কিন্তু এই স্কুল শিক্ষকের তৈরি বাজারে পোশাক কিনতে কোনও অর্থেরই প্রয়োজন হয়না৷ দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলি এই বাজারে গিয়ে নিজেদের পছন্দ মতো প্রয়োজনীয় পোশাক নিয়ে আসতে পারে অনায়াসে৷

‘বিনা পয়সার বাজারে’ পোশাক পছন্দের আনন্দ বিলিয়ে চলেছেন শিক্ষক

তৌফিকুলের কথায়, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কিংবা পুজোতে বস্ত্রদান করা হয় ঠিকই, কিন্তু সেখানে গরীব মানুষগুলির পছন্দের কথা ভাবা হয়না৷ কিন্তু তাঁর এই বাজারে সেধরণের কোনও বাধা নিষেধ নেই৷ তবে বাধা একটাই, অবজ্ঞার ছলে এই বাজারে পোশাক দান করা যাবে না৷ তৌফিকুল জানান, ডাস্টবিনে অব্যবহৃত সামগ্রী ফেলে দেওয়ার মতো নয়, গরীব মানুষগুলিকে খুশি করার জন্য পোশাক দান করতে হবে মন থেকে৷ তবেই সেই সমস্ত পোশাক গ্রহণ করা হবে৷ তিনি জানান তাঁর এই বাজারের একটাই স্লোগান, ‘যার প্রয়োজন নেই সে দিয়ে যাবে, যার প্রয়োজন রয়েছে সে নিয়ে যাবে৷’

‘বিনা পয়সার বাজারে’ পোশাক পছন্দের আনন্দ বিলিয়ে চলেছেন শিক্ষক

রোজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্কুলের বাচ্চাদের বাংলা পড়ান সৈয়দ তৌফিকুল৷ তবে শুধু বাংলাই নয়, তাঁর তৈরি এই ‘বিনা পয়সার বাজার’এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো মানুষ তৈরি হওয়ার এক অভাবনীয় শিক্ষাও দিচ্ছেন তিনি৷ সেইসঙ্গে সমাজের প্রতিটি মানুষের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 2 =