আজ বিকেল: প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজ করতে গিয়ে হয়তো দেখলেন পাহাড়ের মধ্যে নতুন গুহা। অনাবিষ্কৃত সেই গুহাতে ঢোকার আগেই রোমাঞ্চিত লাগবে নিশ্চই। আরব্য রজনীর গুপ্তধনের সন্ধান করবেন না যেন, নিদেনপক্ষে চুনাপাথর মিলতে পারে। কিন্তু গুহায় ঢুকে যদি দেখেন পাথর নয়, জলে ভিজছে পা। জিভে ঠেকাতেই জলে নুনের উপস্থিতি বুঝতে অসুবিধা হয় না। আরে পাথর নয় এ যে নুন। অভিনব ঘটনাটি ইজরায়েলের মালহাম গুহাতে।
জানা গিয়েছে, ইজরায়েলের মালহাম গুহা ১০ কিমি বিস্তৃত, এদেশের সবথেকে বড়পাহাড় সোদমের বুক চিরে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কাছে ডেডস-সি তে গিয়ে পড়েছে। গবেষক আমোস ফ্রামকিন প্রথম এই গুহার সন্ধান পান। গুহাটির পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত ম্যাপও তৈরি করে ফেলেন গবেষক। ৮০-র দশকে আমোস ফ্রামকিনের কাজ সাড়া ফেললেও তিনি গুহা আবিষ্কার সম্পূর্ণ করতে পারেননি। এই বছরই ফ্রামকিনের গবেষণাপত্র দেখে ফের অনুসন্ধান শুরু করেন গুহা বেষক জোভ নেগেভ। বুলগেরিয়ার গুহাসন্ধানীদের একটি দলের সাহায্য নিয়ে কাজ শুরু করেন নেগেভ। গত বছর থেকেই গুহাটিকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ শুরু করেন ওই গবেষক।দশদিন ধরে গোটা গুহাটিকে বিভিন্ন দিক থেকে পর্যবেক্ষণ করার পর গুহার একটা মানচিত্র তৈরি সম্ভব হয়।
প্রায় এক বছর পর আবার শুরু হয় পর্যবেক্ষণ কার্য এবার লেজার রশ্মি ফেলে নতুন করে এলাকা চিহ্নিত করা হয়, তৈরি হয় আরও এক মানচিত্র।গবেষণার ফল বলছে সোদম পাহাড় আদতে নুনের ঢিবি ছাড়া আর কিছুই নয়। ভিতরে নুন উপরিভাগে পাথর। বলা বাহুল্য, পাথরগুলিও নুনের। বৃষ্টি নামলে পাথর থেকে জল চুইয়ে গুহার ভিতরে ঢোকে। তারপর গলতে থাকে নুন, সেই নুন গলা জল গড়িয়ে নামে ডেড-সি-তে। মজার বিষয় হল ফ্রামকিনের গবেষণার ফল কাজে লাগলেও তাঁর তৈরি মানচিত্র অনেকটাই বদলে গিয়েছে। খুব শিগগির গুহার ভৌগোলিক অবস্থান বদলে যাবে। বিভিন্ন জায়গায় নুনের ফলক গলে গিয়েছে কোথা ও ভেঙেছে। তাতে প্রাকৃৃতিক উপায়েই অনন্য ইনটেরিয়র ডেকোরেশনও ফুটে উঠছে। এই গুহা যেমন জটিল তেমনও সুন্দরও।