রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করতে বিধানসভায় নয়া বিধি রাজ্যের

উপযাচক হয়ে রাজ্যের প্রতিটি বিষয়ে রাজ্যপালের আলোচনা-সমালোচনা এবং হস্তক্ষেপ ইদানিংরাজ্য সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে৷ এবার সেই ক্ষেত্রেই কার্যত ডানা ছাঁটার ব্যবস্থা করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য হিসেবে সবক্ষেত্রেই রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করলো রাজ্যশিক্ষা দপ্তর৷ মঙ্গলবার নতুন এই নিয়ম বিধি সংক্রান্ত একটি বিল বিধানসভায় পেশ করলেন শিক্ষামন্ত্রী৷ এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বা কোন

10112b14bed066437d0f52c3b7bb2909

রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করতে বিধানসভায় নয়া বিধি রাজ্যের

উপযাচক হয়ে রাজ্যের প্রতিটি বিষয়ে রাজ্যপালের আলোচনা-সমালোচনা এবং হস্তক্ষেপ ইদানিংরাজ্য সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে৷ এবার সেই ক্ষেত্রেই কার্যত ডানা ছাঁটার ব্যবস্থা করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য হিসেবে সবক্ষেত্রেই রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করলো রাজ্যশিক্ষা দপ্তর৷ মঙ্গলবার নতুন এই নিয়ম বিধি সংক্রান্ত একটি বিল বিধানসভায় পেশ করলেন শিক্ষামন্ত্রী৷

এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বা কোন ধরনের বৈঠক ডাকার ক্ষেত্রে উপাচার্য প্রথমে শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করবে৷ এরপর উপাচার্য দিনক্ষণের বিষয়টি রাজভবনে জানাবেন৷ এতদিন এই ধরনের বৈঠক ডাকার আগে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলতেন উপাচার্য৷ এরপর রাজ্যপাল সেই বৈঠক ডাকতেন৷

এই নতুন নিয়মে আরো বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক উপাধি দেওয়ার ক্ষেত্রে যে তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করত সেই তালিকায় কোন পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাজ্যপালের আর থাকবে না৷ সেই তালিকায় কোন অদল বদল এর ক্ষমতা রাজ্যপালের থাকবে না৷ নতুন নিয়মে নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয় এই তালিকা প্রথমে শিক্ষা দপ্তরকে পাঠাবে৷ এরপর শিক্ষা দপ্তর সেই তালিকা পাঠাবে রাজভবনকে৷ অর্থাৎ রাজ্যপালের সঙ্গে এখন থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সরাসরি যোগাযোগ থাকবে না৷ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত সবক্ষেত্রেই শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে৷ রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে৷

কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি মারফত তিনজনের নামের তালিকা শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যপাল কে পাঠাবে৷ সেই তিনজনের মধ্যে যার নাম প্রথমে থাকবে তাকেই উপাচার্য হিসেবে অনুমোদন দিতে হবে রাজ্যপালকে৷ এতদিন এই তিনজনের মধ্যে পছন্দমত কোন একজনকে উপাচার্য হিসেবে অনুমোদন দিতেন রাজ্যপাল৷ অর্থাৎ উপাচার্য নির্বাচনের ক্ষেত্রেও রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করা হবে৷

নতুন নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে রাজভবনের প্রতিনিধির নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষা দপ্তর রাজ্যপালের কাছে তিনটি নাম পাঠানো হবে৷ সেই নামের মধ্যে থেকেই যেকোনো একজনকে বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে রাজভবনের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত করতে হবে রাজ্যপালকে৷

এতদিন বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে রাজ্যপালের একজন প্রতিনিধি থাকতো৷ সেই নাম রাজ্যপাল নিজেই নির্ধারণ করতেন৷ নতুন নিয়মে, এখন থেকে উপাচার্য বা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে রাজ্যপালের কোনো অভিযোগ থাকলে, রাজ্যপাল সে বিষয়েসরাসরি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না৷ সেক্ষেত্রে প্রথমে বিষয়টি শিক্ষা দপ্তরকে জানাতে হবে৷ শিক্ষা দপ্তর তদন্ত করে দেখার পর সেই তদন্তের ভিত্তিতে নেওয়া হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত৷

সমাবর্তনের ক্ষেত্রেও শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমেই উপাচার্যের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে রাজ্যপালকে৷ এক্ষেত্রে রাজ্যপালের সরাসরি কোনো ভূমিকা থাকবে না৷ রাজ্যপালের বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত যেকোন প্রস্তাব শিক্ষা দপ্তর মারফত রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠাতে হবে৷ তা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে জানানো যাবেনা৷

এতদিন আচার্য বা রাজ্যপাল এই প্রস্তাব সরাসরি উপাচার্যকে জানাতে পারতেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিধির ক্ষেত্রেই প্রয়োজনমতো বদল এর ক্ষমতা রাজ্য সরকারের থাকবে৷ ২০১৭ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম সংক্রান্ত আইনের ক্ষেত্রে যে নিয়মবিধি তৈরি হয়েছিল সেই বিধিতেই অফার পরিবর্তন আনল রাজ্য সরকার৷ মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিন বিএ কমিটির বৈঠকের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷

শিক্ষা মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রাজ্যপালের যোগসুত্র সংক্রান্ত নিয়মাবলী বিল আকারে বিধানসভায় পেশ করেছেন তা আসলে নিয়ম বিধির পরিবর্তন৷ কারণ ২০১৭ সালে এই সংক্রান্ত সংশোধনী বিল পেশ হয়েছে যা আইন হিসেবে গণ্য হয়৷ সুতরাং আইনানুসারে যে নিয়মবিধি প্রচলিত ছিল সেখানে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়না৷ সরকার নিজের প্রয়োজনমতো নিয়মে বদল আনতে পারে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *