বাংলার স্কুলপাঠ্যে মুকুল-শোভনের ভূমিকা! ফের ঐতিহাসিক ভুল রাজ্যের!

স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে ‘বিপ্লব ও সন্ত্রাসবাদ’ অধ্যায়ে শহিদ ক্ষুদিরাম বসুকে ‘সন্ত্রাসবাদী’বলে তকমা আগেই দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার৷ ছ’বছর পর সেই ভুল সংশোধন করে নেওয়ার পরও সেই একই ইতিহাস বইয়ে বড় ভুল-সহ পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অষ্টম শ্রেণির ‘অতীত ও ঐতিহ্যে’র বই৷

কলকাতা: স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে ‘বিপ্লব ও সন্ত্রাসবাদ’ অধ্যায়ে শহিদ ক্ষুদিরাম বসুকে ‘সন্ত্রাসবাদী’বলে তকমা আগেই দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার৷ ছ’বছর পর সেই ভুল সংশোধন করে নেওয়ার পরও সেই একই ইতিহাস বইয়ে বড় ভুল-সহ পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অষ্টম শ্রেণির ‘অতীত ও ঐতিহ্যে’র বই৷

শ্রমিক দিবস, কৃষক বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ-সহ বিভিন্ন অধিকার রক্ষার আন্দোলনগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কয়েক বছর আগেই অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ে যুক্ত হয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলনের ইতিহাস। ইতিহাস বইয়ের নাম 'অতীত ও ঐতিহ্য'। কিন্তু নতুন শিক্ষা বর্ষে এই বইকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে নতুন সমস্যা।

এই ইতিহাস বইয়ের পাঠ্যসূচিতে রয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলন। সেখানে আন্দোলনের নেতৃত্বপ্রদানকারী তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামের পাশাপাশি আন্দোলনকারী হিসেবে বেশকয়কজন তৃণমূল নেতানেত্রীদের সঙ্গে  ছিল  মুকুল রায় ও শোভন দেবের নাম। তবে এই দুজন নেতাই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। পাঠ্যবইয়ে কিন্তু পুরানো পরিচয়েই থেকে গেছেন এই দুই নেতা। এত বড় ভুল কি করে চোখ এড়িয়ে গেল তা নিয়ে  শিক্ষকর্তাদেরই কাঠগড়ায়  তুলেছেন তাঁরা।

এমনিতেই সিঙ্গুর আন্দোলনকে রাজনৈতিক কর্মসূচি বলে দাবি করে এই আন্দোলনকে পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতা করে আসছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। অনেকেরই দাবি ছিল, সিঙ্গুর আন্দোলনে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতার নাম যদিও বা সামঞ্জস্যপূর্ণ তবে অন্য নেতা-নেত্রীদের নাম থাকা কোনো যুক্তি নেই।  তবে এই বিষয়টি পাঠ্যসূচিতে ঢোকানোর ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের অবদান আছে। এই রায়ের প্রেক্ষিতেই কৃষকদের টানা দশ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের জয় হিসাবে এটিকে দেখা হয়েছে রাজনৈতিক হিসেবে নয়।৷ ইংরেজ আমল থেকে রাজ্য তথা দেশে যেসমস্ত ভূমি আন্দোলন রয়েছে, সেগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সিঙ্গুর আন্দোলনকে স্কুলপাঠ্যে রাখা হয়।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্কুলগুলিতে নতুন বই হাতে এসে গেছে অষ্টম শ্রেণির প্রায় ২০ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর।  কিন্তু শিক্ষক মহলের বক্তব্য,  স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা এই নেতাদের বিষয়টি জানতে চাইলে  শিক্ষক- শিক্ষিকারা এড়িয়ে যেতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে কিন্তু বোঝানোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে।  সূত্রে খবর  ‘ভুল’ কীভাবে শোধরানো যায়, সে বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর।

স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে ‘বিপ্লব ও সন্ত্রাসবাদ’ অধ্যায়ে শহিদ ক্ষুদিরাম বসুকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে তকমা আগেই দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার৷ ২০১৪ সাল থেকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ ক্ষুদিরামকে চিনে আসছে বাংলার পড়ুয়ারা৷ ২০১৪ থেকে চলতে থাকা সেই বিতর্ক অবশেষে কাটল৷ ‘সন্ত্রাসবাদী’ ক্ষুদিরামকে এবার ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবী’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর৷ রিভিউ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই পদক্ষপ নিতে রাজ্যের সময় লেগেছে মাত্র পাঁচ বছর!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + 14 =