শিশুর মন বুঝতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবে শিক্ষা দফতর, আসছে নির্দেশ

শিশুদের যথাযথ মানসিক বিকাশের জন্য আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতনতার কথাও বলা হয়েছে রাজ্য শিশু কমিশনের প্রস্তাবে।

কলকাতা:  শিশু বিকাশের ক্ষেত্রে সরকারি শিক্ষাকেন্দ্রগুলির উন্নতিকরণে ইতিমধ্যেই একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও রূপায়ণ করেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবার এই তালিকায় যুক্ত হল আরো একটি পরিকল্পনা। শিক্ষা ও সামাজিক ক্ষেত্রে শিশুদের মানসিক বিকাশের উপর গুরুত্ব দিতে এবার শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য শিশু কমিশন। এই উদ্দেশ্যে শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ক্লাস বা ট্রেনিংয়ের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। শিশু কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী জানিয়েছেন শিশুদের শিক্ষাদানের পাশাপাশি তাদের মানসিক পরিস্থিতি এবং সমস্যাগুলি বোঝার জন্য বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন আর সেক্ষেত্রে প্রয়োজন দক্ষ শিক্ষকের। 

গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেবাস কমিটি, শিক্ষাদপ্তর, একাধিক স্কুলের শিক্ষকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক বৈঠকে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। শিশুদের যথাযথ মানসিক বিকাশের জন্য আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতনতার কথাও বলা হয়েছে এই প্রস্তাবে। সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের প্রতি অভিভাবক এবং শিক্ষকদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত, তার একটি ধারণাও তুলে ধরা হয়েছে শিশু কমিশনের প্রস্তাবে। 

অভিভাবক ও শিক্ষকদের জন্য যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও আরো বেশি করে মনোযোগী হওয়ার প্রসঙ্গ। কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর মতে পড়ুয়াদের মানসিক পরিস্থিতি বুঝতে শিক্ষকদের ধৈর্য ধরে তাদের সঙ্গে আলোচনার করতে হবে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিশুদের মনোযোগের অভাব বা পিছিয়ে পড়ার প্রবণতা দেখলে বা ছোটোখাটো ভুল-ত্রুটি দেখলে উদ্ধত আচরণ বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে পড়ুয়াদের সঙ্গে ধৈর্য ধরে কথা বলে তাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে শিক্ষকদেরই। বাড়িতে বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিতে অভিভাবকদের জন্য একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। শিশুদের মানসিকতা ভালো রাখতে দামি দামি উপহার কিনে না দিয়ে অভিভাবকদের উচিত তাদের জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া।

আবার তাদের মন ভালো রাখতে গিয়ে একইসঙ্গে সময় বাঁচাতে গিয়ে যেন স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা না করা হয়। তাই জাঙ্ক ফুড এর পরিবর্তে স্কুলের টিফিনে বাড়ির খাবার দেওয়ার ওপরেই গুরুত্ব দিয়েছে কমিশন। বাচ্চাদের মনের কথা ভেবে মোবাইল ব্যবহার বা টিভি দেখার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে অভিভাবকদের। বাচ্চাদের মানসিক সমস্যা দেখা দিলে সরাসরি সেবিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করার পর স্কুলের সঙ্গেও এবিষয়ে আলোচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবে। এছাড়াও শিশু কমিশনের এদিনের বৈঠকে আলোচনা প্রসঙ্গে উঠে এসেছিল বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধি, শিক্ষার অধিকার আইন সহ একাধিক ইস্যু। আলোচনার পর প্রস্তাবগুলি রাজ্য শিক্ষাদপ্তরের কাছেও পাঠিয়েছে কমিশন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + 8 =